ব্যাংক ও আর্থিক খাতের শেয়ারে নেতিবাচক রিটার্ন

দেশের পুঁজিবাজারে গত সপ্তাহে সূচকে কিছুটা ঊর্ধ্বমুখিতা দেখা গেছে। যদিও এ সময়ে দৈনিক গড় লেনদেনের পরিমাণ কমেছে। গত সপ্তাহে পুঁজিবাজারে ব্যাংক, বীমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতের শেয়ারে নেতিবাচক রিটার্ন এসেছে।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত সপ্তাহের শেষে ডিএসইএক্স সূচক ২২ পয়েন্ট বা দশমিক ৪৩ শতাংশ বেড়ে ৫ হাজার ২০১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে, আগের সপ্তাহে যা ছিল ৫ হাজার ১৭৯ পয়েন্ট। নির্বাচিত কোম্পানির সূচক ডিএস-৩০ সপ্তাহের ব্যবধানে ৬ পয়েন্ট বা দশমিক ৩২ শতাংশ বেড়ে ১ হাজার ৯১৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে, আগের সপ্তাহ শেষে যা ছিল ১ হাজার ৯১৩ পয়েন্ট। ডিএসইর শরিয়াহ সূচক (ডিএসইএস) ৮ পয়েন্ট বা দশমিক ৬৯ শতাংশ বেড়ে ১ হাজার ১৫৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে, আগের সপ্তাহ শেষে যা ছিল ১ হাজার ১৪৮ পয়েন্ট। ডিএসইর বাজার মূলধন সপ্তাহের শুরুতে ছিল ৬ লাখ ৭৩ হাজার ৯৩১ কোটি টাকা, সপ্তাহ শেষে যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৮৯ হাজার ৭৪০ কোটি টাকায়। সপ্তাহের ব্যবধানে এক্সচেঞ্জটির বাজার মূলধন বেড়েছে ১৫ হাজার ৮০৯ কোটি টাকা।
গত সপ্তাহে ডিএসইর লেনদেন কিছুটা কমেছে। গত সপ্তাহে ডিএসইতে মোট ২ হাজার ১০৭ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে, আগের সপ্তাহে যা ছিল ২ হাজার ১৩৩ কোটি টাকা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে এক্সচেঞ্জটিতে লেনদেন কমেছে ২৬ কোটি টাকা বা ১ দশমিক ২৩ শতাংশ। গত সপ্তাহে টাকার অংকে ডিএসইর গড় লেনদেনও কমেছে। সপ্তাহের পাঁচ কার্যদিবসে ডিএসইতে গড় লেনদেন হয়েছে ৪২১ কোটি টাকা, আগের সপ্তাহে যা ছিল ৪২৭ কোটি টাকা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে এক্সচেঞ্জটির গড় লেনদেন কমেছে ৬ কোটি টাকা। গত সপ্তাহে ডিএসইতে ৪১৩টি কোম্পানি, মিউচুয়াল ফান্ড ও করপোরেট বন্ডের লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১৮৩টির, কমেছে ১৬৬টির, অপরিবর্তিত ছিল ৪৯টির আর লেনদেন হয়নি ১৫টির।
খাতভিত্তিক লেনদেনে গত সপ্তাহে বস্ত্র খাতের আধিপত্য ছিল। লেনদেনচিত্র বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত সপ্তাহে ডিএসইর মোট লেনদেনের ১৫ দশমিক ৮৮ শতাংশ নিয়ে শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে বস্ত্র খাত। ১৪ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ওষুধ ও রসায়ন খাত। ১১ দশমিক ৭৪ শতাংশ নিয়ে তালিকায় তৃতীয় অবস্থানে ব্যাংক খাত। চতুর্থ অবস্থানে থাকা প্রকৌশল খাতে লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৮ দশমিক ৬২ শতাংশ। ৮ দশমিক ৫৯ শতাংশ লেনদেনের ভিত্তিতে তালিকার পঞ্চম অবস্থানে ছিল খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাত।
গত সপ্তাহে ডিএসইতে সাতটি বাদে বাকি সব খাতের শেয়ারেই ইতিবাচক রিটার্ন এসেছে। এর মধ্যে সিরামিকস খাতের শেয়ারে সবচেয়ে বেশি ৬ দশমিক ৬৬ শতাংশ ইতিবাচক রিটার্ন এসেছে। এরপর সবচেয়ে বেশি ইতিবাচক রিটার্ন ছিল কাগজ ও মুদ্রণ খাতে খাতে ৪ দশমিক ৯৬ শতাংশ এবং জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে ২ দশমিক ৩৩ শতাংশ। অন্যদিকে গত সপ্তাহে আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতে সবচেয়ে বেশি ১ দশমিক ৪৮ শতাংশ নেতিবাচক রিটার্ন এসেছে। এছাড়া ব্যাংক খাতে দশমিক শূন্য ৪, জীবন বিমা খাতে ১ দশমিক ৪৭ ও সাধারণ বিমা খাতে ১ দশমিক ৪২ শতাংশ নেতিবাচক রিটার্ন এসেছে।
গত সপ্তাহে পুঁজিবাজারের উত্থানে সবচেয়ে বেশি অবদান ছিল রেনাটা, পাওয়ার গ্রিড, ব্র্যাক ব্যাংক, সামিট পাওয়ার ও রবির শেয়ারের।
সিএসইতে গত সপ্তাহের পাঁচদিনে ২৯ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে, আগের সপ্তাহে যা ছিল ২৭ কোটি টাকার। গত সপ্তাহে সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই দশমিক ১২ শতাংশ বেড়ে ১৪ হাজার ৫২৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে, আগের সপ্তাহ শেষে যা ছিল ১৪ হাজার ৫১২ পয়েন্ট। আলোচ্য সপ্তাহে সিএসইতে মোট ৩০৬টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১৪৪টির, কমেছে ১৩১টির, আর অপরিবর্তিত ছিল ৩১টির বাজারদর।