বিএটিবিসির সিগারেট বিক্রি কমেছে প্রায় ২৮ শতাংশ
রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশের (বিএটিবিসি) চলতি ২০২৫ হিসাব বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে (জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর) সিগারেট বিক্রি কমেছে ১ হাজার ৪০৬ কোটি ৬০ লাখ শলাকা বা ২৭ দশমিক ৯৬ শতাংশ। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির সিগারেট বিক্রি হয়েছে ৩ হাজার ৬২৩ কোটি ৯০ লাখ শলাকা, আগের হিসাব বছরে বিক্রি হয়েছিল ৫ হাজার ৩০ কোটি ৫০ লাখ শলাকা। কোম্পানিটির আর্থিক প্রতিবেদন সূত্রে এ জানা গেছে।
প্রতিবেদন অনুসারে চলতি হিসাব বছরের তিন প্রান্তিকে বিএটিবিসির গ্রস আয় হয়েছে ৩২ হাজার ৯০৬ কোটি টাকা, আগের হিসাব বছরে যা ছিল ৩০ হাজার ৮৪৩ কোটি টাকা। আয় বাড়লেও আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির নিট মুনাফা কমেছে। তিন প্রান্তিকে বিএটিবিসির কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে ৭২০ কোটি টাকা, আগের হিসাব বছরে যা ছিল ১ হাজার ৩২৩ কোটি টাকা। এ সময়ের ব্যবধানে কোম্পানিটির নিট মুনাফা কমেছে ৪৫ দশমিক ৫৪ শতাংশ। কোম্পানিটি জানিয়েছে, বিক্রি কমে যাওয়া, শুল্ক বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি ঢাকার কারখানা স্থানান্তর হওয়ায় খরচ বেড়েছে। ফলে আয় বাড়লেও নিট মুনাফা কমেছে।
তিন প্রান্তিকে বিএটিবিসির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ১৩ টাকা ৩৪ পয়সা, আগের হিসাব বছরে যা ছিল ২৪ টাকা ৪৯ পয়সা। ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ শেষে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ১০৫ টাকা ২২ পয়সায়।
সর্বশেষ ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত ২০২৪ হিসাব বছরে বিনিয়োগকারীদের ১৫০ শতাংশ চূড়ান্ত নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে বিএটিবিসির পর্ষদ। এর আগে কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের ১৫০ শতাংশ অন্তর্বর্তী নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল। সে হিসেবে সমাপ্ত ২০২৪ হিসাব বছরে ৩০০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ পেয়েছে বিনিয়োগকারীরা। আলোচ্য হিসাব বছরে বিএটিবিসির ইপিএস হয়েছে ৩২ টাকা ৪২ পয়সা, আগের হিসাব বছরে যা ছিল ৩৩ টাকা ১১ পয়সা। ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪ শেষে কোম্পানিটির এনএভিপিএস দাঁড়িয়েছে ১০৬ টাকা ৮৮ পয়সায়।
৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত ২০২৩ হিসাব বছরে বিনিয়োগকারীদের ১০০ শতাংশ চূড়ান্ত নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে বিএটিবিসির পর্ষদ। আলোচ্য হিসাব বছরে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ৩৩ টাকা ১১ পয়সা, আগের হিসাব বছর যা ছিল ৩৩ টাকা ১০ পয়সা। ৩১ ডিসেম্বর ২০২৩ শেষে কোম্পানিটির এনএভিপিএস দাঁড়িয়েছে ৯৯ টাকা ৩৩ পয়সায়।
৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত ২০২২ হিসাব বছরে বিনিয়োগকারীদের ২০০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে কোম্পানিটি। আলোচ্য হিসাব বছরে বিএটিবিসির ইপিএস হয়েছে ৩৩ টাকা ১০ পয়সা, আগের হিসাব বছরে যা ছিল ২৭ টাকা ৭২ পয়সা। ৩১ ডিসেম্বর ২০২২ শেষে কোম্পানিটির এনএভিপিএস দাঁড়িয়েছে ৭৬ টাকা ২৭ পয়সায়।
৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত ২০২১ হিসাব বছরে বিনিয়োগকারীদের ২৭৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে কোম্পানিটি। আলোচ্য হিসাব বছরে বিএটিবিসির ইপিএস হয়েছে ২৭ টাকা ৭২ পয়সা, আগের হিসাব বছরে যা ছিল ৬০ টাকা ৪৮ পয়সা। ৩১ ডিসেম্বর ২০২১ শেষে কোম্পানিটির এনএভিপিএস দাঁড়িয়েছে ৬৮ টাকা ১৩ পয়সায়।
বিএটিবিসির সর্বশেষ ঋণমান দীর্ঘমেয়াদে ‘ট্রিপল এ’ ও স্বল্পমেয়াদে ‘এসটি-ওয়ান’। ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত ২০২৪ হিসাব বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন এবং রেটিং ঘোষণার দিন পর্যন্ত প্রাসঙ্গিক অন্যান্য পরিমাণগত ও গুণগত তথ্যের ওপর ভিত্তি করে এ প্রত্যয়ন করেছে ক্রেডিট রেটিং ইনফরমেশন অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেড (সিআরআইএসএল)।
১৯৭৭ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বিএটিবিসির অনুমোদিত মূলধন ৫৪০ কোটি টাকা। বর্তমানে কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধনও একই। রিজার্ভে রয়েছে ৫ হাজার ২২৪ কোটি ৬০ লাখ টাকা। মোট শেয়ার সংখ্যা ৫৪ কোটি। এর ৭২ দশমিক ৯১ শতাংশ রয়েছে উদ্যোক্তা পরিচালকদের কাছে। এছাড়া সরকারের কাছে দশমিক ৬৪, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ১৪ দশমিক ১১, বিদেশী বিনিয়োগকারীদের কাছে ৩ দশমিক ৪৩ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে বাকি ৮ দশমিক ৬১ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।


