South east bank ad

অস্থির চালের বাজারে আমনের আগমন, কৃষকের মুখে হাসি

 প্রকাশ: ০৭ অক্টোবর ২০১৭, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   ক্রয়-বিক্রয়

অস্থির চালের বাজারে আমনের আগমন, কৃষকের মুখে হাসি
অস্থির চালের বাজারে পঞ্চগড়ের কৃষকের মুখে হাসি ফুটিয়েছে আগাম জাতের ধান চাষ। জাতে আগাম হলেও ফলনে আমন মৌসুমকেও ছাড়িয়ে গেছে এসব ধানখেত। ভালো দাম পাওয়ায় আশায় খুশি কৃষকরা। আর আশ্বিন-কার্তিক মাসে কাজের এ খরা মৌসুমে কাজ পেয়ে খুশি কৃষি শ্রমিকরাও। কৃষি বিভাগ জানায়, চলতি মৌসুমের আমন কৃষকের ঘরে উঠতে আরও দেড় দুই মাস বাকি। তবে আগাম জাতের ধানখেতের পাকা ধান কাটায় ব্যস্ত এখন পঞ্চগড়ের বেশ কিছু এলাকার কৃষক। তুলনামূলক নিচু জমিতে তারা আগাম জাতের উচ্চ ফলনশীল বিনা ৭ এবং ব্রি ৬২ জাতীয় ধান রোপণ করেছিলেন। ধানখেতের ফলন দেখে কৃষকদের আশা, তারা বিঘাপ্রতি ৬০০ থেকে ৮০০ থেকে কেজি (১৫ থেকে ২০ মণ) ধান ঘরে তুলবেন। তবে কৃষি বিভাগের দাবি, আগাম জাতের এই ধানের ফলন হয়েছে হেক্টরপ্রতি ৩ দশমিক ২ মেট্রিক টন। চলতি আমন মৌসুমে জেলায় ৯৭ হাজার ৫৯০ হেক্টর জমিতে আমন আবাদের পাশাপাশি ১২ হাজার ২৭০ হেক্টর জমিতে আগাম জাতের উচ্চ ফলনশীল ধান চাষ করা হয়েছে। বিভিন্ন এলাকার এসব ধানখেতে বিক্ষিপ্তভাবে শুরু হয়েছে কাটা মাড়াই। ধান কাটার পর সেই জমিতে আলু এবং ভুট্টা লাগানোর কথা ভাবছেন কৃষকরা। সদর উপজেলার পঞ্চগড় ইউনিয়নের জগদল এলাকার কৃষক মো. মজাহারুল হক প্রধান বলেন, আমার প্রায় ১০ একর জমিতে আগাম জাতের উচ্চ ফলনশীল বিনা ৭ এবং ব্রি ৬২ জাতীয় ধান রোপণ করেছি। ফলন দেখে মনে হচ্ছে বিঘাপ্রতি ১৫-২০ মণ ধান ঘরে তুলতে পারব। এ ধান কাটার পরই সেখানে বীজের জন্য আলু চাষ করব। এজন্য বিএডিসির সঙ্গে কথা বলেছি। একই ইউনিয়নের ডাবরভাঙ্গা গ্রামের কৃষক জাবেদ আলী বলেন, অল্প কিছু জমিতে আগাম জাতের ধান রোপণ করেছিলাম। ফলন দেখি ভালোই হয়েছে। আগামী আমন মৌসুমে আরও বেশি জমিতে এই ধান চাষ করব। বর্তমানে বাজারে ১ হাজার টাকা মণ (৪০ কেজি) পর্যন্ত দরে ধান বিক্রি হচ্ছে। এ সময়ে তেমন কাজ না থাকায় কৃষি শ্রমিকও সস্তায় পাওয়া যায়। এ জাতের ধান চাষেই আমাদের অধিক লাভ হতে পারে। দাড়িয়াপড়া গ্রামের কৃষি শ্রমিক সুরুজ আলী বলেন, আশ্বিন-কার্তিক মাসে সাধারণত হাতে কাজ থাকে না। আমন ধান পাকার আগেই আমরা এখন কাজ করতে পারছি। এ সময়ে এখন আর আগের মতো অভাব নেই। এদিকে অসময়ের এই ধানখেতের ফলন দেখে আগামী মৌসুমে এ জাতের ধান চাষে আগ্রহের কথা জানান অন্য কৃষকরাও। অমরখানা ইউনিয়নের কৃষক আব্দুল জলিল বলেন, মহাসড়কের পাশে এমন ধানখেত দেখে খুব ভালো লাগছে। সময়ের আগেই ফলন আসা এই জাতের ধানের ফলন যে এতো ভালো হয়, জানা ছিল না। আগামীতে আমিও কিছু জমিতে আগাম জাতের উচ্চ ফলনশীল ধান রোপন করব। জেল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো. সামছুল হক বলেন, পঞ্চগড় এলাকা রোপা আমনের জন্য প্রসিদ্ধ। এখানকার অধিকাংশ জমিতেই রোপা আমন লাগানো হয়। চলতি আমন মৌসুমে বিভিন্ন উপজেলায় রোপা আমনের পাশাপাশি ১২ হাজার ২৭০ হেক্টর জমিতে আগাম জাতের উচ্চ ফলনশীল ধান চাষ করা হয়েছে। ফলন হয়েছে হেক্টরপ্রতি ৩ দশমিক ২ মেট্রিক টন। বেশ কিছু এলাকার খেতের ধান কাটা শুরু হয়ে গেছে। ভালো দাম পাচ্ছেন কৃষকরা। সব মিলিয়ে এই জাতের ধান আবাদ করে কৃষকরা বেশ লাভবান হচ্ছেন।
BBS cable ad