যুক্তরাষ্ট্র ও ইইউ রাষ্ট্রদূতের কাছে পোশাক শ্রমিকদের জন্য টিকা চেয়ে বিজিএমইএ’র চিঠি
যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) কাছে পোশাক শ্রমিকদের জন্য টিকা এবং অ্যান্টিজেন টেস্ট কিট পাওয়ার বিষয়ে সহযোগিতা চেয়েছে বিজিএমইএ। ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত এবং ইইউ রাষ্ট্রদূতের কাছে পাঠানো পৃথক চিঠি দিয়ে এই সহযোগিতা চাওয়া হয়।
পোশাক খাতে বাংলাদেশের বড় ক্রেতা যুক্তরাজ্যভিত্তিক মার্ক অ্যান্ড স্পেন্সারের বাংলাদেশ কার্যালয়ের মাধ্যমে সে দেশের সরকারের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে এ ব্যাপারে।
বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসানের স্বাক্ষর করা এ চিঠি বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রদূতদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্ল আর মিলারের কাছে পাঠানো চিঠিতে বিজিএমইএ সভাপতি লিখেছেন, পোশাক শ্রমিক এবং বাংলাদেশের জনসাধারণের জন্য করোনার টিকা কিনতে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা চান তারা। যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কাছ থেকে ইতোমধ্যে কিছু টিকা পাওয়া গেছে। এ জন্য দেশটির সরকারের প্রতি বিজিএমইএ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছে। যদি আরও কিছু পরিমাণে টিকা বরাদ্দ করা সম্ভব হয়, বাংলাদেশ এবং এ দেশের পোশাক খাতের জন্য তা হবে অনেক বড় সহযোগিতা। রক্ষা পাবে লাখো মানুষের জীবন ও জীবিকা।
চিঠিতে শ্রমিকদের টিকা প্রদান এবং করোনা থেকে সুরক্ষায় বিজিএমইএর পক্ষ থেকে নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথাও তুলে ধরা হয়।
পোশাক শ্রমিকদের সর্বোচ্চ মানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে করোনা সন্দেহ হলে শ্রমিকদের পরীক্ষা করা, তাদের আইসোলেশনে রাখা, অ্যান্টিজেন টেস্ট কিটের ব্যবস্থা করা গেলে এ মুহূর্তে পোশাক খাতের জন্য বড় ধরনের সহায়ক হতে পারে।
এ ব্যাপারে রাষ্ট্রদূতের সহযোগিতা চেয়ে বিজিএমইএ সভাপতি লেখেন, করোনার টিকা এবং র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট কিট পাওয়া গেলে শ্রমিকদের সর্বোচ্চ মানের সুরক্ষা ও সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখা সহজ হবে। তৈরি পোশাকের বৈশ্বিক সরবরাহ চেইনে বাংলাদেশের শক্তিশালী অবস্থান অক্ষুণ্ন থাকবে।
ঢাকায় ইইউ রাষ্ট্রদূত রেঞ্জি তারিঙ্কের কাছে লেখা বিজিএমইএর চিঠিতেও প্রায় একই ভাষা এবং বক্তব্য ব্যবহার করা হয়েছে।
অতিরিক্ত হিসেবে বলা হয়, তৈরি পোশাকে ইইউর দ্বিতীয় প্রধান সরবরাহকারী দেশ হিসেবে গত কয়েক বছর ধরে নিরবচ্ছিন্নভাবে পোশাক সরবরাহ করে আসছে বাংলাদেশ। এই ধারা অক্ষুণ্ণ রাখার একমাত্র পথ হচ্ছে পোশাক খাতের সব শ্রমিকের টিকা নিশ্চিত করা। সরকারের সহযোগিতায় বিজিএমইএ কিছু কিছু কারখানায় টিকা দেওয়া শুরু করেছে। সব কারখানার সব শ্রমিকের জন্যই টিকা নিশ্চিত করতে চান তারা। পাশাপাশি বিদেশি ক্রেতাদের অফিস, লিয়াজোঁ অফিস ও পোশাকের এপেসরিজ খাতেও টিকা নিশ্চিত করতে চান তারা। তবে সরকারি পর্যায়ে টিকার মজুদ পর্যাপ্ত নয়।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক ব্র্যান্ড মার্ক অ্যান্ড স্পেন্সারের বাংলাদেশ কার্যালয়ের কান্ট্রি ম্যানেজার স্বপ্না ভৌমিকের কাছে লেখা চিঠিতে প্রায় অভিন্ন ভাষায় সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে যুক্তরাজ্য সরকারের সহযোগিতাও চাওয়া হয়েছে মার্ক অ্যান্ড স্পেন্সারের কাছে লেখা চিঠিতে।
একক রাষ্ট্র হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের পোশাকের প্রধান বাজার। মোট পোশাক রপ্তানির প্রায় ১৯ শতাংশ আসে দেশটি থেকে। সমাপ্ত অর্থবছরে ৫৯৫ কোটি ডলারের পোশাক গেছে দেশটিতে। অন্যদিকে ২৮ জাতির জোট ইইউ বাংলাদেশের পোশাকের জোটগত প্রধান বাজার। মোট পোশাক রপ্তানির প্রায় ৬২ শতাংশ আসে জোটভুক্ত দেশগুলো থেকে। সমাপ্ত অর্থবছরে এক হাজার ৯৪৩ কোটি ডলারের পোশাক গেছে ইইউতে।