South east bank ad

৭ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু ভ্যাকসিনেশন : প্রথম মাসে দেয়া হবে ৩৫ লাখ মানুষকে

 প্রকাশ: ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২১, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   স্বাস্থ্য

৭ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু ভ্যাকসিনেশন : প্রথম মাসে দেয়া হবে ৩৫ লাখ মানুষকে

প্রথম মাসে ৩৫ লাখ মানুষকে ভ্যাকসিন দেয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এর আগে একই সময়ে ৬০ লাখ মানুষকে ভ্যাকসিন দেয়ার পরিকল্পনা ছিলো।
৭ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া ভ্যাকসিনেশন পরিকল্পনায় কিছুটা পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে সরকার। প্রথম মাসে ৩৫ লাখ মানুষকে ভ্যাকসিন দেয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এর আগে প্রথম মাসে ৬০ লাখ মানুষকে ভ্যাকসিন দেয়ার পরিকল্পনা ছিলো। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ বি এম খুরশীদ আলম এ তথ্য জানিয়েছেন।

অধ্যাপক খুরশীদ আলম বলেন, 'পরিকল্পনায় পরিবর্তন আনার ক্ষেত্রে বৈশ্বিক সরবরাহ পরিস্থিতিও বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। আমরা চিন্তা করেছি, যদি কোনো কারণে সাপ্লাই চেইন অব্যাহত রাখতে না পারি, তাহলে পুরো ব্যবস্থাপনাই ভেস্তে যাবে। সেজন্য আমরা হাতে থাকা টিকা অর্ধেক করে পুরোপুরি ডোজ দেওয়ার ব্যবস্থা করছি'।

অধ্যাপক খুরশীদ আলম বলেন, '৭০ লাখ ভ্যাকসিন অর্ধেক দিয়ে বাকি অর্ধেক রেখে এক মাস পর দেব। এতে অন্তত ৩৫ লাখ মানুষকে আমরা পুরোপুরি ভ্যাকসিনেশনে আনব। এতে একটা নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠীকে আমরা সুরক্ষিত করতে পারবো। তা না করে প্রথম ডোজ দেয়ার পর দ্বিতীয় ডোজ যদি পেতে দেরি হয়, তাহলে পুরো বিষয়টি নষ্ট হয়ে যাবে। এর মধ্যে যদি আমাদের দ্বিতীয় লট চলে আসে, তাহলে আগের পরিকল্পনায় চলে যাব'।

বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের মাধ্যমে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে কেনা ৫০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন ২৫ জানুয়ারি দেশে এসে পৌঁছেছে। এছাড়া ভারতের উপহারের ২০ লাখ ডোজসহ বাংলাদেশের হাতে এখন ৭০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন রয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী পরবর্তী ৫০ লাখ ডোজ ফেব্রুয়ারির ২৫ তারিখের দিকে দেশে আসার কথা রয়েছে।

ডা. খুরশীদ আলম বলেন, 'ভ্যাকসিন নিয়ে সারা বিশ্বে রাজনীতি চলছে। সবারই ভ্যাকসিন দরকার। দেশের চাহিদা মেটাতে না পারলে, সরকার রপ্তানির অনুমতি নাও দিতে পারে। আমরা এটা আশঙ্কা করছি। যদিও বেক্সিমকো আমাদের এখনও পর্যন্ত বলছে সঠিক সময়েই তারা টিকা দেবে। তারপরও আমরা সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করছি'।

'আমাদের ভ্যাকসিনেশনের প্ল্যান এ ও বি ছিল। ভ্যাকসিন আসা সাপেক্ষে আমরা পরিকল্পনা অনুযায়ী কর্মসূচী চালিয়ে যাবো'।
আগের পরিকল্পনা অনুসারে দিনে দুই লাখ মানুষকে ভ্যাকসিন দেয়ার কথা ছিলো। তবে এখন দিনে কত মানুষকে ভ্যাকসিন দেয়া হবে সে বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। সারা দেশে মোট ৬ হাজার ৯৯৫টি কেন্দ্র থেকে টিকা দেওয়া হবে। ঢাকা শহরে ৩৫৪টি কেন্দ্রের তালিকা করা হয়েছে।

আইইডিসিআর- এর প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এবং কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন ডেপ্লয়মেন্ট কোর কমিটির সদস্য ডা. এ এস এম আলমগীর জানান, বুধবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মুখ্য সচিবের সভাপতিত্বে ভ্যাকসিন বিতরণ সম্পর্কিত একটি বৈঠক হয়েছে। সেই বৈঠক ভ্যাকসিনেশনের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে এটি এখনো চূড়ান্ত হয়নি।

এদিকে বৃহস্পতিবার এক অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, 'প্রথম দফায় কত মানুষকে ভ্যাকসিন দেয়া হবে তা নির্ধারণ করা না হলেও বছর ব্যাপী এ টিকাদান কার্যক্রম চলবে। টিকা আমাদের হাতে যা আছে তা পর্যায়ক্রমে দেয়া হবে। ৩০ লাখ বা ৭০ লাখ বিষয় না। ভ্যাকসিন আসতে থাকবে আর আমরা দিতে থাকবো'।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, 'আগে নিবন্ধন একটু স্লো থাকলেও এখন তা বাড়ছে। এখন পর্যন্ত দেড় লাখ লোক নিবন্ধন করেছে। ইদানিং নিবন্ধন খুব বাড়ছে। আমরা অনুরোধ করব, আপনারা করোনাভাইরাসের টিকা গ্রহণ করবেন। এর মাধ্যমে আমরা করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করব'।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, 'সরকারের মন্ত্রী এবং সংসদ সদস্যদের টিকা দেওয়ার জন্য মহাখালীর শেখ রাসেল জাতীয় গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালকে নির্ধারণ করা হয়েছে। আমাদের মন্ত্রী, এমপিদের আহ্বান করেছি যেন তারা যার যার এলাকায় টিকা নেন'।
৭ ফেব্রুয়ারি সারাদেশে টিকাদান কার্যক্রম উদ্বোধন হবে। ঢাকায় প্রায় ৩০০টি স্থান থেকে টিকা দেওয়া হবে।

এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কোভ্যাক্স সুবিধার আওতায় বাংলাদেশ চলতি বছরের প্রথমার্ধে কোভিড -১৯ ভ্যাকসিনের ১ কোটি ২৭ লাখ ৯২ হাজারটি ডোজ পেতে পারে। গত ৩রা ফেব্রুয়ারি টিকা বণ্টনের অন্তর্বর্তীকালীন তালিকা প্রকাশের মাধ্যমে এটি জানায় কোভ্যাক্স ।

বাংলাদেশ ভারতের সেরাম ইনিস্টিটিউটের প্রস্তুতকৃত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিনই পাবে।

এ প্রসঙ্গে ডা.এ এস এম আলমগীর বলেন, 'মার্চের মধ্যে আমরা কোভ্যাক্স থেকে ৫০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন পেতে পারি। কোভ্যাক্সের ভ্যাকসিন পেতে আমরা আবারও নিয়ম অনুযায়ী চিঠি দেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি। আমরা অক্সফোর্ড ভ্যাকসিন দিয়ে ভ্যাকসিনেশন শুরু করেছি তাই কোভ্যাক্স থেকে অক্সফোর্ড ভ্যাকসিনই পাচ্ছি। এতে আমাদের জন্য ভালোই হলো'।

দেশের জনসংখ্যার আকারের অনুপাতে কোভ্যাক্সের ভ্যাকসিন ডোজ নির্ধারিত হবে। সে অনুসারে, পাকিস্তান এক কোটি ৭২ লাখ, ভারত ৭ কোটি ৯১ লাখ, নাইজেরিয়া এক কোটি ৬০ লাখ, ইন্দোনেশিয়া এক কোটি ৩৭ লাখ, বাংলাদেশ এক কোটি ২৮ লাখ এবং ব্রাজিল এক কোটি ৬ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন পাবে।
দ্য কোয়ালিশন ফর এপিডেমিক প্রিপেয়ার্ডনেস ইনোভেশনস, গাভি- গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ভ্যাকসিনস অ্যান্ড ইমিউনাইজেশনস এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সম্মিলিত প্ল্যাটফর্ম কোভ্যাক্স টিকা বণ্টনের অন্তর্বর্তীকালীন তালিকা প্রকাশ করে এসব জানায় ।

BBS cable ad

স্বাস্থ্য এর আরও খবর: