কুয়েতে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন
বিডিএফএন টোয়েন্টিফোর.কম
কুয়েতে বাংলাদেশ দূতাবাসে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত হয়েছে। গত সোমবার (২১ ফেব্রুয়ারি) আয়োজিত অনুষ্ঠানে কুয়েতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল মো. আশিকুজ্জামান, এনডিসি, এএফডব্লিউসি, পিএসসি, জি এর সভাপতিত্বে দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা, বাংলাদেশ কমিউনিটির সদস্যরা এবং প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
এ দিন ভোরে দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এবং বাংলাদেশ কমিউনিটির বিপুল সংখ্যক সদস্যদের উপস্থিতিতে রাষ্ট্রদূত আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করেন। পরে রাষ্ট্রদূত দূতাবাসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং কুয়েতে বাংলাদেশ কমিউনিটির সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে দূতাবাসের অভ্যন্তরে স্থাপিত অস্থায়ী শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন এবং ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনে শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন।
এরপর পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে আলোচনা অনুষ্ঠান শুরু হয়। ভাষা শহীদদের আত্মার মাগফেরাত এবং দেশের উত্তরোত্তর উন্নতি কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস-২০২২ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করেন দূতাবাসের কর্মকর্তারা।
অনুষ্ঠানে দিবসের ওপর নির্মিত প্রামাণ্য ভিডিও চিত্র প্রদর্শন করা হয়। কুয়েতে বাংলাদেশ কমিউনিটির সদস্যসহ বিভিন্ন পেশাজীবী, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারা আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন। তারা বক্তব্যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন। বক্তারা ভাষা আন্দোলনের আগে ও পরে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা তুলে ধরেন।
রাষ্ট্রদূত তার বক্তব্যে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন। রাষ্ট্রদূত ভাষা আন্দোলন এবং পরবর্তীতে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ক্ষেত্রে গণআন্দোলন গঠনে এর তাৎপর্য তুলে ধরেন। তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে ঘোষণা করেন এবং ২৫ সেপ্টেম্বর ১৯৭৪ সালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ২৯তম অধিবেশনে বাংলায় প্রথম ভাষণ প্রদান করেন, যা বাংলা ভাষাকে বিশ্ববাসীর কাছে নতুনভাবে পরিচিতি এনে দেয়।
এ সময় রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, ১৯৯৯ সালে কানাডায় বসবাসরত কিছু বাংলাদেশি প্রবাসীর প্রাথমিক প্রচেষ্টা এবং পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঐকান্তিক সদিচ্ছা ও আন্তরিক প্রচেষ্টায় ২১ ফেব্রুয়ারি সারা বিশ্বে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে পালিত হচ্ছে। তিনি সবাইকে ভাষা আন্দোলন থেকে অনুপ্রেরণা গ্রহণ করে দেশপ্রেম ও কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে সুখী-সমৃদ্ধ ও উন্নত দেশ গড়তে আত্মনিয়োগ করার আহ্বান জানান। রাষ্ট্রদূত দেশের কল্যাণে বাংলাদেশি নাগরিকদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার পাশাপাশি সবাইকে কুয়েতে অবস্থানরত বাংলাদেশি নাগরিকদের দেশটির স্থানীয় আইন-কানুন মেনে চলার আহ্বান জানান। পাশাপাশি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী সবাইকে রাষ্ট্রদূত ধন্যবাদ জানান।
অনুষ্ঠান শেষে আগত অতিথিদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করা হয়। পুরো অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন রাষ্ট্রদূতের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা মো. জিহোন।