অর্থনৈতিকভাবে সৎ কিন্তু চিন্তা ভাবনায় অসৎ, এইসব মানুষ সুযোগ পেলে সবচেয়ে বড় দুর্নীতিবাজ হয়

আশরাফুল আলম খোকন:
কেউ বলেন বুদ্ধিজীবী, কেউ বলেন সুশীল, নেতিবাচক মানসিকতার লোকেরা বলে আঁতেল আর দুষ্ট লোকেরা বলে অকর্মা। এই রকম অনেকেই আমি চিনি। কাউকে ব্যক্তিগতভাবে চিনি ও জানি, কারো চিন্তা প্রসূত লেখা পড়ে চিনি আবার কাউকে চিনি টকশো’র জ্ঞানগর্ভ আলোচনা শুনে। এরমধ্যে বিভিন্ন বয়সী আছেন। অভিজ্ঞতাহীন চেংরা বয়সী বাকপটুও আছেন।
এদের অনেকের সাথেই দেখা হয়,কথা হয় আবার ভার্চুয়ালি যোগাযোগও হয়। অধিকাংশের কাজের চেয়ে কথার আওয়াজ বেশি। জীবনে এই করেছি, ওই করেছি, সৎ পথে চলেছি। কোনো লোভে পা দেইনি, কোথাও থেকে কোনো সুযোগ সুবিধা নেইনি। সব শুনে মুচকি হেসে চলে আসতাম। কোনো উত্তর দিতাম না কষ্ট পাবে বলে। এমনিতেই আমি একটু ঠোঁটকাটা কথা বলা মানুষ। যা তখন বলেনি, তা এখন বললে কেউ বলবে না ক্ষমতা দেখিয়েছি। কেউ যুক্তি তর্কে না পারলেই অপ্রাসংগিকভাবে বলতো আপনারাতো ক্ষমতার গরম দেখান। তাই চুপ থাকতাম। এখন আমি পদবিহীন প্রবাসী আমজনতা, তাই এখন বলাই যায়।
তাদেরকে তখন বলতে পারতাম না যে, গরীবত্ব রুপ ধারণ করে বৈরাগ্য সাধন করলেই দেশ-সমাজ পরিবর্তন করা যায় না। শুধু সুন্দর সুন্দর নীতিকথা বলতে জানলেই হয়না, দেশ-সমাজ পরিবর্তন করতে হলে “তাগদ” লাগে। মেধা ও মানসিক শক্তির জোর লাগে। আর এই যোগ্যতা থাকলে সৎ পথেও ভালো থাকা যায়। অহরহ মানুষ ভালো থাকছেনও।
ভালো থাকার জন্য, দেশ ও সমাজের ভালো করার জন্য সব চেয়ে বেশি দরকার চিন্তা, বুদ্ধি এবং মেধার সততা। অর্থনৈতিক ভাবে সৎ কিন্তু চিন্তা ভাবনায় অসৎ-এইসব মানুষ দেশ ও জাতির জন্য সহস্রগুণ বেশি ক্ষতিকর। অর্থনীতি একসময় ঘুরে দাঁড়ায় কিন্তু জাতির চিন্তার সংস্কৃতি ও জীবন ধারা ধ্বংস করে দিলে সেই জাতির ভবিষ্যৎ অন্ধকার। আর আপনারা শেষের কাজটিই করছেন পান্ডিত্য জাহির করার জন্য। অশুভ উদ্দেশ্যও থাকতে পারে।
অর্থনৈতিক ভাবে সৎ কিন্তু চিন্তা ভাবনায় অসৎ-এইসব মানুষ সুযোগ পেলে সবচেয়ে বড় দুর্নীতিবাজ হয়। তারা সুযোগের অভাবে ভদ্রলোক থাকেন। সুযোগ পেলেই ….. এইরকম প্রমান অনেক আছে। কিন্তু চিন্তা ভাবনা, মেধা ও বুদ্ধিতে সৎ মানুষ কখনো দুর্নীতিবাজ হয় না, জাতির সম্পদ হয়।