শিরোনাম

South east bank ad

কস্টিক সোডা আমদানির আড়ালে হাজার কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার

 প্রকাশ: ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২২, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   এনবিআর

বিডিএফএন টোয়েন্টিফোর.কম

সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিতে কস্টিক সোডা উৎপাদনের নামে অসাধু ব্যবসায়ী চক্র লবণ আমদানি করছে। কস্টিক সোডা হিসেবে আমদানি পণ্য দেখিয়ে ওই লবণ দেশের বাজারে বিক্রি করা হচ্ছে। ১ টন কস্টিক সোডা উৎপাদনে যে পরিমাণ লবণ প্রয়োজন, আমদানি করা হচ্ছে তার দ্বিগুণ। বর্তমানে ভোজ্য লবণ আমদানি নিষিদ্ধ থাকার কারণে কস্টিক সোডা বা কস্টিক সোডা উৎপাদনের নামে আনা হচ্ছে লবণ। এতে একদিকে বছরে প্রায় হাজার কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার, অন্যদিকে মার খাচ্ছে দেশীয় লবণশিল্প। বর্তমানে লবণ আমদানি নিষিদ্ধ রয়েছে। কেননা লবণ উৎপাদনে বাংলাদেশ স্বয়ংসম্পূর্ণ। অথচ একটি অসাধু চক্র কস্টিক সোডা আমদানির সুযোগ নিয়ে এর আড়ালে প্রতি বছর টনকে টন লবণ আমদানি করছে। বিশেষজ্ঞ ও কস্টিক সোডা এবং লবণ উৎপাদনের সঙ্গে জড়িতরা বলছেন, কস্টিক সোডার সঙ্গে অ্যাসিড মেশালে লবণ তৈরি হয়। কস্টিক সোডার চেয়ে বাজারে লবণের চাহিদা বেশি। অনেক ক্ষেত্রে দামও বেশি। আবার লবণ আমদানিতে কস্টিক সোডার আমদানির তুলনায় ব্যয় অনেক বেশি। ফলে কস্টিক সোডার এইচএস কোড ব্যবহার করে অনেকেই লবণ আমদানি করছেন। এরপর ওই লবণ দেশের বাজারে বিক্রি করছেন।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্র জানায়, কস্টিক সোডার ওপর আমদানি পর্যায়ে অগ্রিম আয়কর ৫ শতাংশ ও কাস্টমস ডিউটি ৫ শতাংশ বলবৎ রয়েছে। আর ১ কেজি ভোজ্যলবণ আমদানিতে শুল্ক ও কর দিতে হয় ৯৩ শতাংশ এবং শিল্প লবণ আমদানিতে শুল্ক ও কর দিতে হয় ২৫ শতাংশ।

এদিকে এনবিআরের তথ্যমতে, কস্টিক সোডা আমদানিকারক হিসেবে শীর্ষস্থানীয় কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের তথ্য পাওয়া গেছে। সেগুলো হলো- এমএইসি গ্রুপবিডি, সামুদা কেমিক্যাল কমপ্লেক্স লিমিটেড, কেইএনপার্ক বাংলাদেশ, এসএমডিএস বাংলাদেশ, এসটিএল বাংলাদেশ, টিসিসিএল বাংলাদেশ ইত্যাদি। দেশে প্রতিবছর চার লাখ টন কস্টিক সোডার চাহিদার বিপরীতে সাড়ে তিন লাখ টন কস্টিড সোডা উৎপাদনের তথ্য রয়েছে শিল্প মন্ত্রণালয়ের কাছে। অথচ আমদানিও হয় প্রায় চার লাখ টন। এদিকে দেশে প্রতিবছর লবণের চাহিদা রয়েছে প্রায় ১৭ লাখ টন, যার প্রায় পুরোটা বাংলাদেশেই উৎপাদিত হয়। বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, দুই থেকে আড়াই লাখ টন লবণের ঘাটতি রয়েছে। অথচ ব্যবসায়ী ও লবণ মিল মালিকদের হিসাবে, দেশে লবণের ঘাটতি রয়েছে ১০ লাখ টন। তথ্যের এমন গরমিলের ফাঁকে কস্টিক সোডার আড়ালে লবণ আমদানি করছে একটি অসাধু ব্যবসায়ী চক্র।

জানা গেছে, বর্তমানে দেশে ভোজ্যলবণ আমদানি নিষিদ্ধ। এখন লবণ আমদানিতে ৯৩ শতাংশ শুল্ক ও কর দিতে হয়। ২০২০ সালে উৎপাদন ঘাটতি হওয়ায় লবণের সাময়িক সংকট দেখা দেয়। সে সময় বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আড়াই লাখ টন লবণ আমদানির সুযোগ দিয়েছিল। তবে অনেক ছোট ও বন্ধ মিল লবণ আমদানি করে তা বড় মিলের কাছে বিক্রি করেছিল। এতে বাজারে লবণের দাম কমেনি বলে অভিযোগ রয়েছে।

চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে দেশে খাওয়ার লবণের (সোডিয়াম ক্লোরাইড এইচএম কোড ২৫০১.০০.১০) আমদানি নিষিদ্ধ থাকলেও শিল্প লবণ (সোডিয়াম সালফেট/ডাইসোডিয়াম সালফেট) আমদানির সুযোগ রয়েছে। খাওয়ার লবণের সঙ্গে শিল্প লবণের দামে তারতম্য অনেক বেশি হওয়ায় অপঘোষণার মাধ্যমে খাওয়ার লবণ আমদানির প্রবণতা লক্ষ করা যাচ্ছে। এ ছাড়া খাওয়ার লবণের সঙ্গে শিল্প লবণ মিশিয়ে বাজারজাত করার অভিযোগও রয়েছে, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এতে দেশের প্রান্তিক পর্যায়ের লবণচাষি ও লবণ মিলগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। লবণচাষিদের প্রতিরক্ষণ, আমদানিকৃত শিল্প লবণের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিতকরণ এবং জনস্বাস্থ্য ঝুঁকি হ্রাসের লক্ষ্যে শিল্প মন্ত্রণালয়ের সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে

BBS cable ad

এনবিআর এর আরও খবর: