নবীগঞ্জে জলমহাল নিয়ে বিরোধ, প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে ছেলের হাতে বাবা খুন!
নুর উদ্দিন সুমন (হবিগঞ্জ):
জেলার নবীগঞ্জে বৃদ্ধ জাহিদ আলী হত্যা মামলায় ৮ মাস পর তদন্তে বেড়িয়ে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। গতবছর ১৫ জুলাই প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে নিজের বৃদ্ধ বাবাকে খুন করে ছেলে ও তার সহযোগীরা । (২৫ এপ্রিল) শনিবার এক প্রেস বিফিংয়ে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্ল্যা। তিনি জানান, এ ঘটনায় তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ। আকটকৃতরা আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে ঘটনা স্বীকার করেছে। পুলিশ সুপার জানান, স্থানীয় বিজনা নদীর জলমহাল লীজ নিয়ে নবীগঞ্জ উপজেলার বাঁশডর গ্রামবাসী দুই পক্ষের বিভক্ত হয়ে বিবাদে জড়িয়ে পড়ে। এক পক্ষের নেতৃত্ব দেন স্থানীয় কাচন মিয়া ও ইউপি সদস্য রাজা মিয়া। অপর পক্ষের নেতৃত্ব দেন স্থানীয় শফিক মিয়া, রয়মান মিয়াসহ কয়েকজন। দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলাকালে উভয় পক্ষের মধ্যে ১০-১২টি মামলাও হয়। এসব ঘটনার জের ধরে, গত বছরের ১৫ জুলাই সংঘর্ষে জড়ায় দুই পক্ষের লোকজন। সংঘর্ষের এক পর্যায়ে, প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে শফিক মিয়ার পক্ষের লোকজন ৭৫ বছরের বৃদ্ধ জাহির আলীকে ফিকল (বল্লম জাতীয় অস্ত্র) দিয়ে পেটে আঘাত করে হত্যা করে। আর এ হত্যাকান্ডে সরাসরি অংশ নেয় নিহতের ছেলে আরশ আলী ও তার কয়েকজন আত্মীয়। ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিহতের লাশ ও ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহ করে। পরদিন এ ঘটনায় নিহতের ছেলে আরশ আলী বাদি হয় প্রতিপক্ষের ৯২ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করে। ঘটনার তদন্ত চলাকালে, বাদিপক্ষের লোকজনের কথাবার্তা সন্দেহ দেখা দিলে গত ২২ এপ্রিল বাদিপক্ষের মিসবাহ উদ্দিনকে আটক করে। তাদেরকে ব্যপক জিজ্ঞাবাদ বেড়িয়ে আসে চাঞ্চল্যকর অনেক তথ্য। গত ২৩ এপ্রিল বাদি পক্ষের সামছুল হক ও জিলু মিয়াকে আটক করে পুলিশ। ২৪ এপ্রিল তারা আদালতে ১৬৪ ধারা জবানবন্দিতে জানায়, প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতেই আরশ আলী আত্মীয়-স্বজনদের সহায়তায় পিতা জাহির আলীকে হত্যা করে খুনের নাটক সাজিয়েছিলো। এ ঘটনায় ছেলেসহ বাকি ঘাতকরা পলাতক রয়েছেন। পুলিশ তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালাচ্ছে বলে জানান পুলিশ সুপার। প্রেস কনপারেন্সে উপস্থিত ছিলেন বাহুবল সার্কেলের সিনিয়র এএসপি মো: পারভেজ আলম চৌধুরী সহ পুলিশের অন্যান্য কর্মকর্তারা।