২১ বছর আগে হারানো পরিবার ফিরে পেলেন ময়মনসিংহের ইয়াসমিন

বিডিএফএন টোয়েন্টিফোর.কম

হারিয়ে যাওয়ার ২১ বছর পর নিজের পরিবারের খোঁজ পেয়েছেন ইয়াসমিন নামে এক নারী। তিনি ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার বড়হিত ইউনিয়নের জুগিয়াখালি গ্রামের আব্দুল হেকিম ও মনোয়ারা বেগম দম্পতির মেয়ে।

আরজে কিবরিয়ার উপস্থাপনায় স্টুডিও অব ক্রিয়েটিভ আর্টস লিমিটেডের ‘আপন ঠিকানা’ অনুষ্ঠানের বদৌলতে নিজ ঠিকানা খুঁজে পান ইয়াসমিন। রোববার রাতে আরজে কিবরিয়ার ফেসবুক পেজ ও ইউটিউবে প্রচার হওয়া ১৮৯ নম্বর পর্বের আপডেট ভিডিওর মাধ্যমে জানা যায় এসব তথ্য।

এর আগে, গত ১০ মে প্রচারিত হয় ইয়াসমিনের বেসিক ভিডিও। যার তিন ঘণ্টার মাথায় প্রাথমিকভাবে তার পরিবারের সন্ধান নিশ্চিত করে আপন ঠিকানা টিম।

প্রচার হওয়া প্রায় এক ঘণ্টার আপডেট ভিডিও থেকে জানা যায়, আনুমানিক ২০০০ সালে ঈশ্বরগঞ্জ থেকে এক প্রতিবেশীর ফুফুর বাড়ি ময়মনসিংহ নগরীর বাঘমারা এলাকায় আসেন ইয়াসমিন। সেখানে থেকে বাসার বিভিন্ন কাজ করতেন তিনি। একদিন ফুফুর সঙ্গে রাগ করে বাসা থেকে চলে যান। ঐ সময় তার ভাবনা ছিল বাইরে সারাদিন থেকে আবার ফিরবেন বাসায়। কিন্তু পথ ভুলে গিয়ে আর ফেরা হয়নি তার। এরপর কয়েকটি বাসায় কাজ করতে করতেই বড় হয়েছেন। ১২ বছর আগে নেত্রকোনার এক যুবকের সঙ্গে বিয়ে হয় তার। সেখানে জন্ম নেয় এক ছেলে ও এক মেয়ে। এক বছর আগে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান তার স্বামী। সব হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েন ইয়াসমিন। এভাবেই জীবনে ঘটে যাওয়া নানা ঘটনার মধ্য দিয়েই কেটে গেছে ইয়াসমিনের ২১ টি বছর।

আপন ঠিকানা স্টুডিওতে এসে পরিবার ফিরে পেয়েও অনেকটাই বাকরুদ্ধ ছিলেন ইয়াসমিন। বড় ভাইয়ের কাছ থেকে বাবা-মায়ের মৃত্যুর খবর শুনে আটকাতে পারেননি চোখের পানি। এ দৃশ্য আপ্লুত করেছে লাখ লাখ দর্শক-শ্রোতাকে।

ইয়াসমিনের বড় ভাই রমজান মিয়া বলেন, আমরা চার ভাইবোনের মধ্যে ইয়াসমিন তৃতীয়। সে হারিয়ে যাওয়ার পর নানাভাবে তাকে আমরা খুঁজেছি, থানায় জিডিও করেছি। তার জন্য আমাদের মা কাঁদতে কাঁদতে অন্ধ হয়ে ৯ বছর আগে মারা গেছেন। বাবাও দেখে যেতে পারলেন না আজকের দিনটা, মারা গেছেন ৪ বছর আগে। বাবা-মা আজকে থাকলে কত খুশি হতেন।

আরজে গোলাম কিবরিয়া সরকার বলেন, আমরা আরো একটি ভিডিওর সফল সমাপ্তি করতে পেরেছি। এই বোনটিও তার পরিবারের কাছে ফিরে গেল। এরই মধ্যে আপন ঠিকানার ১৩০ জন ও লষ্ট অ্যান্ড ফাউন্ড অনুষ্ঠানের ৩০ জন হারিয়ে যাওয়া মানুষ তাদের পরিবারের কাছে ফিরেছেন।