লিখিত রায়ে নেই ৭২ ঘণ্টা পর ধর্ষণ মামলা না নেওয়ার কথা
বিডিএফএন টোয়েন্টিফোর.কম
বনানীর রেইনট্রি হোটেলের আলোচিত ধর্ষণ মামলার লিখিত রায়ের কোথাও ধর্ষণের ৭২ ঘণ্টা পর মামলা না নেওয়ার নির্দেশনা নেই। বিচারকের বিতর্কিত মন্তব্য নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার পর গতকাল বুধবার (১৭ নভেম্বর) লিখিত রায় প্রকাশিত হলে তাতে এমন কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
তবে ভিন্ন প্রেক্ষাপটে ৭২ ঘণ্টার প্রসঙ্গ এনে বিচারক রায়ে লিখেছেন, এই ট্রাইব্যুনাল বহু ধর্ষণ মামলা দেখেছেন। প্রাপ্তবয়স্ক ও যৌনজীবনে অভ্যস্ত নারী বিচারের জন্য আসেন, যেখানে কথিত অপরাধ সংঘটিত হওয়ার অনেক দিন পর তাঁদের মেডিকেল পরীক্ষা হয়েছে। অনেক দিন পর মামলা হলে যৌন সহিংসতার প্রমাণ পাওয়া যায় না। মামলা করার সময় যদি বিষয়টি দেখা হয়, ৭২ ঘণ্টার মধ্যে যদি মেডিকেল পরীক্ষা করা হয় (যেমনটি বহু মামলায় চিকিৎসকেরা মতামত দিয়েছেন) এবং ফরেনসিক পরীক্ষায় যদি প্রমাণ পাওয়া যায়, তাহলে ধর্ষণ মামলায় তা গুরুত্বপূর্ণ নথি বলে গণ্য হয়। তখন ধর্ষণ মামলার অভিযুক্ত ব্যক্তির বিচার নিশ্চিত করা যায়। এবং ন্যায়বিচার সর্বোত্তমভাবে করা সম্ভব হয়।
এর আগে গত ১১ নভেম্বর ব্যাপক আলোচিত এই মামলার রায় দেন ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭-এর বিচারক মোছা. কামরুন্নাহার। এসময় ধর্ষণের ৭২ ঘণ্টা পর মামলা না নিতে পুলিশকে নির্দেশনা দেওয়ায় সমাজের সকল স্তরে সমালোচনার ঝড় ওঠে। বিচারকের এমন ধরনের মন্তব্যের বিচারিক ক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন আইনজীবী ও মানবাধিকারকর্মীরা। এই নির্দেশনাকে সংবিধান ও ন্যায়নীতির পরিপন্থী বলেও উল্লেখ করেন তারা।
এই ঘটনায় বিচারকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। কিছুদিন পরই প্রধান বিচারপতি ওই বিচারককে আদালতে না বসার নির্দেশ দিয়ে ট্রাইব্যুনাল থেকে প্রত্যাহার করে আইন ও বিচার বিভাগে সংযুক্ত করা হয়।
চার বছর আগে বনানীর রেইনট্রি হোটেলে দুই তরুণীকে ধর্ষণ মামলার রায়ে পাঁচ আসামির সবাইকে খালাস দেয় আদালত। তবে রায়ের পর কৌঁসুলিদের উদ্ধৃত করে সংবাদমাধ্যম খবর প্রকাশ করে, রায় ঘোষণার সময় বিচারক নির্দেশনা দিয়েছেন যে ধর্ষণের অভিযোগের ক্ষেত্রে ঘটনার ৭২ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলে পুলিশ যেন মামলা না নেয়।