South east bank ad

৬৪তম জন্মদিনে ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত হলেন হুইপ আতিক

 প্রকাশ: ০১ ডিসেম্বর ২০২১, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   জন্মদিন

শেখ সাঈদ আহাম্মেদ সাবাব, (শেরপুর) :

‘আমৃত্যু সুখে-দুঃখে মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করছি’

বয়সের ৬৩ বছর পেরিয়ে ৬৪-তে পা রেখেছেন জাতীয় সংসদের হুইপ, শেরপুর-১ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আতিউর রহমান আতিক। ১ ডিসেম্বর বুধবার তার ছিল ৬৪তম জন্মদিন। ১৯৫৭ সালের ওই দিনে তিনি শেরপুর সদর উপজেলার কামারিয়া ইউনিয়নের তৎকালীন প্রত্যন্ত পল্লী বারঘরিয়া গ্রামের এক কৃষক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।

এদিকে এবারই প্রথম বৃহৎ পরিসরে জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে বুধবার সন্ধ্যায় জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে কেক কেটে হুইপ আতিউর রহমান আতিকের জন্মদিন পালন করেছেন দলীয় নেতা-কর্মীসহ ভক্ত-অনুরাগী ও শুভানুধ্যায়ীরা। এ উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভা ও সংবর্ধনার জবাবে হুইপ আতিক বলেন, একসময়ের অজপাড়াগাঁ ও সাধারণ কৃষক পরিবার থেকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে পথ চলা শুরু করেছিলাম, আজও দীর্ঘ পথচলায় বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে লালন করছি। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে তার সেই আদর্শ বাস্তবায়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। হাজার হাজার দলীয় নেতা-কর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ আমাকে ভালোবেসে তাদের আপন করে নিয়েছেন। আমিও তাদের ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে আমৃত্যু সুখে-দুঃখে তাদের পাশে থাকার চেষ্টা করছি। সেইসাথে ছোট্ট শেরপুরকে পূর্ণাঙ্গ জেলা রূপায়নে কাজ করছি।

অনুষ্ঠানে হুইপ আতিককে অভিনন্দন জানিয়ে বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট চন্দন কুমার পাল পিপি, শেরপুর পৌরসভার মেয়র গোলাম মোহাম্মদ কিবরিয়া লিটন, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম, ঝিনাইগাতী উপজেলা চেয়ারম্যান এসএম আব্দুল্লাহেল ওয়ারেজ নাইম, নালিতাবাড়ী উপজেলা চেয়ারম্যান মোকছেদুর রহমান লেবু, নকলা উপজেলা চেয়ারম্যান শাহ মো. বোরহান উদ্দিন, শ্রীবরদী উপজেলা চেয়ারম্যান এডিএম শহিদুল ইসলাম, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খন্দকার নজরুল ইসলাম, হুইপ আতিকের জ্যেষ্ঠ কন্যা ডা. শারমিন রহমান অমি, কনিষ্ঠ কন্যা সাদিয়া রহমন অপি প্রমুখ। জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রেজার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে হুইপপত্নী ইসরাত জাহান শান্তা, জেলা, উপজেলা, শহর ও ইউনিয়ন পর্যায়ের আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের পাশাপাশি বিভিন্ন পেশাজীবী, সামাজিক-সাংস্কৃতিক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই বিভিন্ন ইউনিটের দলীয় নেতাসহ আইনজীবী সমিতি, চেম্বার অব কমার্স, প্রেসক্লাবসহ অন্যান্য সংগঠন-প্রতিষ্ঠানের তরফ থেকে হুইপ আতিককে ফুলেল শুভেচ্ছা, সম্মাননা স্মারক ও উপহার সামগ্রী তুলে দেওয়া হয়।

সংক্ষিপ্ত জীবনবৃত্তান্ত : অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী থাকা অবস্থায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে মহান মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে দেশমাতৃকার টানে তিনি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। তিনিই শেরপুরের কনিষ্ঠ মুক্তিযোদ্ধা। মুক্তিযুদ্ধ থেকে ফিরে আসার পর থেকে সরাসরি আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে সক্রিয়ভাবে জড়িয়ে পড়েন। পরবর্তীতে তিনি জিয়াউর রহমানের শাসনকালের প্রথম দিকে শেরপুর সরকারি কলেজ ছাত্র সংসদের ভিপি নির্বাচিত হন। এরপর দেশে অনুষ্ঠিত প্রথমবারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়ে পরাজিত হলেও পরের নির্বাচনে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান শাহ আব্দুর রহিম চৌধুরী ওরফে সুরুজ চৌধুরী ও মোঃ ইলিয়াস উদ্দিনকে বিপুল ভোটে পরাজিত করে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তারপর থেকে তাকে আর পরাজয় স্পর্শ করেনি। ১৯৯৬ এর জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শেরপুর-১ (সদর) আসনে দলের সিনিয়র ৩ নেতাকে বাদ দিয়ে তাকে মনোনয়ন দিলে প্রথম দফাতেই তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। সেই থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত টানা ৫ দফার নির্বাচনেই তিনি বিপুল ভোটাধিক্যে নির্বাচিত হয়ে আসছেন। ওই ৫ দফা নির্বাচনের মধ্যে শেষ ২ দফার নির্বাচন ব্যতীত অন্য ৩ টি নির্বাচনেই জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নেতা, যুদ্ধাপরাধের দায়ে ফাসি হওয়া কামারুজ্জামানের মুখোমুখি হন। বিশেষ করে ওইসব নির্বাচনে তিনি কখনও সাবেক ফার্স্টলেডি বেগম রৌশন এরশাদ, কখনও ৩ বারের সাবেক এমপি শাহ রফিকুল বারী চৌধুরীকে পরাভূত করে রেকর্ড গড়েন।

ছাত্র রাজনীতির ধারাবাহিকতায় তিনি সরাসরি মূল দলে প্রবেশ করেন। সেইসূত্রে একাধিকবার তিনি জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। পরবর্তীতে একসময় তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হয়ে অপর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সমসংখ্যক ভোট পেয়ে কেন্দ্রীয় নেতার কাস্টিং ভোটে সাধারণ সম্পাদক হতে না পারলেও পরবর্তী সম্মেলনেই তিনি কাউন্সিলরদের প্রত্যক্ষ ভোটে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। বর্তমানে তিনি দ্বিতীয় দফায় জেলা আওয়ামী লীগের দায়িত্ব পালন করছেন। স্থানীয় পর্যায়ে দলের মূল নেতৃত্বের কারণে দলে প্রবীণদের পাশাপাশি অনেক তরুণ ও নবীনদের আগমন ঘটেছে। তার সময়ে দলের নেতৃত্বে এসেছে গতিশীলতা। এদিকে চতুর্থ দফায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদায় জাতীয় সংসদের সরকারদলীয় হুইপ মনোনীত হন। পরে পঞ্চম দফায় নির্বাচি হওয়ার পরও একই পদে বহাল রয়েছেন। শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন চতুর্থ দফা সরকারের প্রতিটি সময়েই তিনি সংসদ সদস্য হিসেবে থাকায় শেরপুরের উন্নয়নে ব্যাপক অবদান রেখে যাচ্ছেন।

ব্যক্তিগত জীবনে তিনি ৩ কন্যা সন্তানের জনক। তার স্ত্রী ইসরাত জাহান শান্তা একজন স্কুলশিক্ষিকা। ৩ মেয়ের মধ্যে বড় মেয়ে অমি পেশায় চিকিৎসক ও চাকরিজীবী এবং বিএমএ’র কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য, দ্বিতীয় মেয়ে অনি কলেজশিক্ষার্থী ও কনিষ্ঠ মেয়ে অপি স্কুলশিক্ষার্থী।

BBS cable ad

জন্মদিন এর আরও খবর: