খিলক্ষেত থেকে মানব পাচারকারী চক্রের ৩ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১
বিডিএফএন টোয়েন্টিফোর.কম
র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে সবসময় বিভিন্ন ধরণের অপরাধীদের গ্রেফতারের ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। র্যাবের সৃষ্টিকাল থেকে চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, খুনী, বিপুল পরিমান অবৈধ অস্ত্র-গোলাবারুদ উদ্ধার, ছিনতাইকারী, অপহরণকারী ও প্রতারকদের গ্রেফতার করে সাধারণ জনগণের মনে আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে সংগঠিত চাঞ্চল্যকর অপরাধে জড়িত অপরাধীদের আইনের আওতায় এনে র্যাব জনগনের সুনাম অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
বর্তমানে দেশে মানব পাচারের মত ঘৃন্যতম অপরাধ থেমে নেই। মানব পাচারকারী চক্রের টার্গেট দরিদ্র মানুষ। পাচারকারীরা বিদেশে চাকুরীর প্রলোভন দেখিয়ে সহজ সরল এই মানুষগুলোকে ফাঁদে ফেলে নিয়ে যাচ্ছে অন্ধকার জগতে। পাচারকারীদের পাতা জালে জড়িয়ে অবৈধ পথে বিদেশ পাড়ি দিতে গিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিচ্ছে এসব মানুষ। যার অধিকাংশই নারী। এসকল নারীদেরকে বিদেশে লোভনীয় ও আকর্ষণীয় বিভিন্ন পেশায় চাকুরীর কথা বলা হলেও তাদেরকে বিক্রি করে দেওয়া হয় এবং জোরপূর্বক সম্পৃক্ত করা হয় ডিজে পার্টি, দেহ ব্যবসাসহ বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকান্ডে।
এই পর্যন্ত র্যাব-১ আন্তর্জাতিক মানব পাচারকারী চক্রের বিদেশী নাগরিকসহ অসংখ্য মানব পাচারকারী চক্রের সদস্যকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে সক্ষম হয়েছে। এসকল মানব পাচারকারী চক্রের নিকট হতে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-১ গোয়েন্দা নজরদারী অব্যাহত রাখে এবং সম্প্রতি রাজধানীসহ বেশ কিছু এলাকায় মানব পাচারকারী চক্রের তথ্য পাওয়া যায়।
এরই ধারাবাহিকতায় গত ২ মার্চ আনুমানিক রাতে র্যাব-১, উত্তরা, ঢাকা এর একটি আভিযানিক দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ডিএমপি ঢাকার খিলক্ষেত থানাধীন নিকুঞ্জ-২, রোড নং-১০, হাউজ নং-২, মামা ভাগিনা ট্রাভেলস এর অফিসে অভিযান পরিচালনা করে মানব পাচারকারী চক্রের সক্রিয় সদস্য ১) রাজু আহমেদ রাজ্জাক (৪৮), পিতা-মৃত আমিন উদ্দিন, জেলা-ঢাকা, ২) মোঃ আমিনুল ইসলাম (২০), পিতা-মৃত আব্দুল হাই, জেলা- মাদারীপুর এবং ৩) মাতবর আলী (৪২), পিতা-মৃত সাহেব আলী, জেলা-নরসিংদীদের’কে গ্রেফতার করে।
এসময় ধৃত আসামীদের নিকট হতে ৬ টি পাসপোর্ট, ১ টি সিপিইউ, ১ টি মনিটর, ১ টি কি বোর্ড, ১ টি, মাউস, ৩টি এটিএম কার্ড, ১টি চেক বই, ২ টি পুলিশ ক্লিয়ারেন্স, ১টি ডায়েরী এবং ৪টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
ধৃত আসামীদেরকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তারা সংঘবদ্ধ মানব পাচারকারী চক্রের সক্রিয় সদস্য। ধৃত আসামী রাজু আহমেদ রাজ্জাক “মামা ভাগিনা ট্রাভেলস” এর মালিক। তারা দীর্ঘদিন যাবত মামা ভাগিনা ট্রাভেলস পরিচালনা করে সাধারণ লোকজনের নিকট হতে পাসপোর্ট সহ বিভিন্ন ডকুমেন্ট নিয়ে উক্ত ট্রাভেলসের মাধ্যমে প্রসেসিং করে অবৈধভাবে লিবিয়া হয়ে ইতালী, দুবাই, সৌদি আরব সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রেরণ করে থাকে।
এছাড়া তারা বিদেশে প্রেরণের কথা বলে সাধারণ মানুষের নিকট হতে লক্ষ লক্ষ টাকা নিয়ে বিভিন্ন সমস্যা দেখিয়ে উক্ত টাকা আত্মসাৎ করেছে মর্মে স্বীকার করে।