হুমায়ুন আজাদের জন্ম

বিডিএফএন টোয়েন্টিফোর.কম

কবি, ঔপন্যাসিক, ভাষাবিজ্ঞানী, কিশোর সাহিত্যিক ও গবেষক অধ্যাপক হুমায়ুন আজাদের জন্ম দিবস আজ। ১৯৪৭ সালের ২৮ এপ্রিল মাতামহের বাড়ি তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের অধীন বিক্রমপুরের কামারগাঁওয়ে তার জন্ম। বর্তমানে মুন্সীগঞ্জ জেলার শ্রীনগর উপজেলায়। তার জন্ম নাম

ছিল হুমায়ুন কবীর। ১৯৮৮ সালে ২৮ সেপ্টেম্বর নাম পরিবর্তনের মাধ্যম তিনি বর্তমান নাম ধারণ করেন।

হুমায়ুন আজাদ ছিলেন বাংলাদেশের অন্যতম প্রথাবিরোধী এবং বহুমাত্রিক লেখক, যিনি ধর্ম, মৌলবাদ, প্রতিষ্ঠান ও সংস্কারবিরোধিতা, যৌনতা, নারীবাদ ও রাজনীতি বিষয়ে তার বক্তব্যের জন্য ১৯৮০-এর দশক থেকে পাঠকগোষ্ঠীর দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছিলেন। হুমায়ুন আজাদের ৭টি কাব্যগ্রন্থ, ১২টি উপন্যাস ও ২২টি সমালোচনা গ্রন্থ, ৭টি ভাষাবিজ্ঞানবিষয়ক, ৮টি কিশোর সাহিত্য ও অন্যান্য প্রবন্ধসংকলন মিলিয়ে ৬০টির অধিক গ্রন্থ তার জীবদ্দশায় এবং মৃত্যুপরবর্তী সময়ে প্রকাশ হয়। ১৯৯২ সালে তার নারীবাদী গবেষণা-সংকলনমূলক গ্রন্থ নারী প্রকাশের পর বিতর্কের সৃষ্টি করে এবং ১৯৯৫ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত সাড়ে চার বছর ধরে বইটি বাংলাদেশ সরকার নিষিদ্ধ করেছিল। এটি তার বহুল আলোচিত গবেষণামূলক কাজ হিসেবেও স্বীকৃত। এ ছাড়া তার পাক সার জমিন সাদ বাদ উপন্যাসটি পাঠকমহলে বিতর্কের সৃষ্টি করেছিল। তার রচিত প্রবচন সংকলন ১৯৯২ সালে হুমায়ুন আজাদের প্রবচনগুচ্ছ নামে প্রকাশ হয়। তাকে ১৯৮৬ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার এবং ২০১২ সালে সামগ্রিক সাহিত্যকর্ম এবং ভাষাবিজ্ঞানে বিশেষ অবদানের জন্য মরণোত্তর একুশে পদক প্রদান করা হয়। ২০০৩ সালে তার রচিত কিশোর সাহিত্য ‘ফুলের গন্ধে ঘুম আসে না’ (১৯৮৫) এবং ‘আব্বুকে মনে পড়ে’ (১৯৯২) জাপানি ভাষায় অনূদিত হয়েছিল।

‘পাক সার জমিন সাদ বাদ’ উপন্যাসে মৌলবাদীদের সমালোচনা করার কারণে ২০০৪ সালে তিনি হামলার শিকার হন। প্রথমে বাংলাদেশের সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল এবং পরে থাইল্যান্ডে নিবিড় চিকিৎসার মাধ্যমে তিনি কিছুটা সুস্থ হন।

২০০৪ সালের ১১ আগস্ট রাতে একটি অনুষ্ঠান থেকে প্রত্যাবর্তনের পর আবাসস্থলে আকস্মিকভাবে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন হুমায়ুন আজাদ। ১২ আগস্ট আবাসস্থলের নিজ কক্ষে তাকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়।