সুদ ব্যয় বৃদ্ধির প্রভাবে প্রথমার্ধে ট্রাস্ট ব্যাংকের নিট মুনাফা কমেছে

ট্রাস্ট ব্যাংক পিএলসির চলতি হিসাব বছরের প্রথমার্ধে (জানুয়ারি-জুন) সুদ আয় বেড়েছে। তবে এ সময়ে সুদ ব্যয় বৃদ্ধির কারণে ব্যাংকটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফা কমেছে। ব্যাংকটির দ্বিতীয় প্রান্তিকের (এপ্রিল-জুন) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
প্রতিবেদন অনুসারে, চলতি হিসাব বছরের প্রথমার্ধে ট্রাস্ট ব্যাংকের সুদ আয় হয়েছে ১ হাজার ৯০৫ কোটি টাকা, আগের হিসাব বছরে যা ছিল ১ হাজার ৫৬০ কোটি টাকা। সে হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে ব্যাংকটির সুদ আয় বেড়েছে প্রায় ২২ শতাংশ। তবে এ সময়ে ব্যাংকটির সুদ বাবদ ব্যয় প্রায় ৪৫ শতাংশ বেড়ে ১ হাজার ৬৪৬ কোটি ৫১ লাখ টাকায় দাঁড়িয়েছে, আগের হিসাব বছরে এ ব্যয় ছিল ১ হাজার ১৩৫ কোটি ২৫ লাখ টাকা।
সুদ ব্যয় বৃদ্ধির কারণে প্রথমার্ধে ট্রাস্ট ব্যাংকের কর-পরবর্তী নিট মুনাফা ৩ দশমিক ২৯ শতাংশ কমে ১৩৫ কোটি ৩২ লাখ টাকায় দাঁড়িয়েছে, আগের হিসাব বছরে যেখানে নিট মুনাফা ছিল ১৩৯ কোটি ৯২ লাখ টাকা। আলোচ্য সময়ে ব্যাংকটির শেয়ারপ্রতি সমন্বিত আয় (ইপিএস) হয়েছে ১ টাকা ৪৬ পয়সা, আগের হিসাব বছরে যা ছিল ১ টাকা ৫৩ পয়সা। ৩০ জুন ২০২৫ শেষে ব্যাংকটির শেয়ারপ্রতি সমন্বিত নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ২৯ টাকা ৭ পয়সায়।
সর্বশেষ ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত ২০২৪ হিসাব বছরে বিনিয়োগকারীদের জন্য ১৫ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে ব্যাংকটির পর্ষদ। এর মধ্যে ৭ দশমিক ৫০ শতাংশ নগদ ও ৭ দশমিক ৫০ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ। আলোচ্য হিসাব বছরে ট্রাস্ট ব্যাংকের ইপিএস হয়েছে ৪ টাকা ৩ পয়সা, আগের হিসাব বছরে যা ছিল ৪ টাকা ৬২ পয়সা। ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪ শেষে ব্যাংকটির এনএভিপিএস দাঁড়িয়েছে ২৭ টাকা ৫৬ পয়সায়।
৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত ২০২৩ হিসাব বছরে বিনিয়োগকারীদের ২০ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছে ট্রাস্ট ব্যাংক। এর মধ্যে ১২ শতাংশ নগদ ও ৮ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ ছিল। আলোচ্য হিসাব বছরে ব্যাংকটির ইপিএস হয়েছে ৪ টাকা ৯৭ পয়সা, আগের হিসাব বছরে যা ছিল ৩ টাকা ৪১ পয়সা। ৩১ ডিসেম্বর ২০২৩ শেষে ব্যাংকটির এনএভিপিএস দাঁড়িয়েছে ২৭ টাকা ২৪ পয়সায়।
৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত ২০২২ হিসাব বছরের জন্য শেয়ারহোল্ডারদের ১০ শতাংশ নগদের পাশাপাশি ১০ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ দিয়েছে ব্যাংকটি। আলোচ্য হিসাব বছরে ব্যাংকটির ইপিএস হয়েছে ৩ টাকা ৭৫ পয়সা, আগের হিসাব বছরে যা ছিল ৩ টাকা ৫২ পয়সা। ৩১ ডিসেম্বর ২০২২ শেষে ব্যাংকটির এনএভিপিএস দাঁড়িয়েছে ২৩ টাকা ৫০ পয়সায় (পুনর্মূল্যায়িত)।
৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত ২০২১ হিসাব বছরে সাড়ে ১২ শতাংশ নগদের পাশাপাশি ১০ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ দিয়েছে ব্যাংকটি। ৩১ ডিসেম্বর ২০২০ হিসাব বছরে শেয়ারহোল্ডারদের মোট ২০ শতাংশ লভ্যাংশ দেয় ট্রাস্ট ব্যাংক। এর মধ্যে ১০ শতাংশ নগদ এবং ১০ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ ছিল।
ট্রাস্ট ব্যাংকের সর্বশেষ ঋণমান দীর্ঘমেয়াদে ‘ডাবল এ ওয়ান’ ও স্বল্পমেয়াদে ‘এসটি ওয়ান’। ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত ২০২৪ হিসাব বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন এবং রেটিং প্রকাশের দিন পর্যন্ত প্রাসঙ্গিক অন্যান্য গুণগত ও পরিমাণগত তথ্যের ভিত্তিতে এ প্রত্যয়ন করেছে ক্রেডিট রেটিং এজেন্সি অব বাংলাদেশ (সিআরএবি) লিমিটেড।
২০০৭ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ট্রাস্ট ব্যাংকের অনুমোদিত মূলধন ২ হাজার ৫০০ কোটি ও পরিশোধিত মূলধন ৯৯৪ কোটি ৭ লাখ ৯০ হাজার টাকা। রিজার্ভে রয়েছে ১ হাজার ৫৫৪ কোটি ১৪ লাখ টাকা। মোট শেয়ার সংখ্যা ৯৯ কোটি ৪০ লাখ ৭৯ হাজার ৪৮২। এর ৬০ শতাংশ রয়েছে উদ্যোক্তা পরিচালকদের কাছে। এছাড়া প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ২২ দশমিক ২৭ শতাংশ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে বাকি ১৭ দশমিক ৭৩ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।