ডিজিটাল প্লাটফর্মে ভুল তথ্য ও প্রতারণার ঝুঁকিতে বিনিয়োগকারীরা

উন্নত প্রযুক্তি ও ডিজিটাল লেনদেন দেশের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকে সহজ করেছে। তবে এ প্লাটফর্মে ভুল তথ্য ও প্রতারণা ঝুঁকিতে রয়েছেন বিনিয়োগকারীরা। বিশ্ব বিনিয়োগ সপ্তাহ ২০২৫ উপলক্ষে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই), চিটাগং স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই), ডিএসই ব্রোকারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ডিবিএ) ও সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিডিবিএল) যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ‘উদীয়মান প্রযুক্তি ও ডিজিটাল অর্থায়নের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের ক্ষমতায়ন’ শীর্ষক সেমিনারে গতকাল বক্তারা এ মন্তব্য করেন।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘অগ্রসরমাণ প্রযুক্তি ও ডিজিটাল ফাইন্যান্স পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের ক্ষমতায়ন করেছে। সচেতন ও তথ্যসমৃদ্ধ বিনিয়োগকারীই টেকসই, স্বচ্ছ ও কার্যকর বাজার গঠনের মূল চালিকাশক্তি। ডিজিটাল ট্রেডিং প্লাটফর্মের ব্যবহার বিনিয়োগকে আরো সহজ করেছে। তবে যথাসময়ে তথ্যের সীমিত প্রাপ্যতা, আর্থিক পণ্যের জটিলতা এবং ডিজিটাল প্লাটফর্মে ভুল তথ্য ও প্রতারণার ঝুঁকির মুখে রয়েছে।’
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএসইসি কমিশনার মো. সাইফুদ্দিন বলেন, ‘তথ্য প্রকাশের স্বচ্ছতার ঘাটতি বিনিয়োগকারীদের ভোগান্তির কারণ। প্রডাক্ট ডাইভার্সিফিকেশন মানে নতুন বিনিয়োগযোগ্য সম্পদ তৈরি করা, যা ভবিষ্যতের প্রবৃদ্ধি দেখাবে। তবে বাস্তবতা হচ্ছে বাজারের অংশগ্রহণ কমছে, ফলে সম্পদের বৈষম্য বাড়ছে। যারা পুঁজিবাজারে আছেন তাদের সম্পদ বাড়ছে না, বরং বাজারের আকার বছরে প্রায় ৩ শতাংশ হারে সংকুচিত হচ্ছে।’
বিশেষ অতিথি ডিএসই চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম বলেন, ‘প্রযুক্তির মাধ্যমে পুঁজিবাজারে নতুন প্রডাক্ট আসছে এবং দক্ষতা ও স্বচ্ছতা বাড়ছে, কিন্তু স্টেকহোল্ডারদের মধ্যে সমন্বয়ের অভাবে সুফল পুরোপুরি পাওয়া যায়নি। বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষার জন্য তথ্যের অবাধ প্রবাহ জরুরি; তা না হলে প্রযুক্তি প্রয়োগের কিছু অংশ সঠিকভাবে কার্যকর হচ্ছে না।’
সিএসই চেয়ারম্যান একেএম হাবিবুর রহমান বলেন, ‘শেয়ারবাজারে অটোমেশন ও ডিজিটালাইজেশনের পরও কিছু অনিয়ম ও প্রতারণা ঘটেছে। প্রযুক্তি ব্যবহারের মূল উদ্দেশ্য হলো দক্ষতা ও স্বচ্ছতা বৃদ্ধি করা। তা সফল করতে রিপোর্টিং, সার্ভিল্যান্স ও মনিটরিং সিস্টেম শক্তিশালী করা জরুরি।’
সেমিনারে সমাপনী বক্তব্যে ডিএসই পরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, ‘আমরা যেসব প্রযুক্তি ব্যবহার করি সেগুলো আমাদের নিজেদের তৈরি করা শিখতে হবে। নতুন প্রজন্মকে এসব কাজে যুক্ত করতে হবে। তাহলেই আমরা প্রযুক্তিতে উন্নত হতে পারব, যা আমাদের দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে