লকডাউন বাস্তবায়নে মানিকগঞ্জে মোড়ে মোড়ে ব্যারিকেড
মানিকগঞ্জে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সরকার ঘোষিত লকডাউনে কঠোর অবস্থানে রয়েছে জেলা প্রশাসন। সরকার ঘোষিত লকডাউন বাস্তবায়নে জেলা প্রশাসনের পাশাপাশি একযোগে কাজ করছে বিজিবি ও সেনাবাহিনী।
লকডাউনের তৃতীয় দিন আজ শনিবার ৩ জুলাই সকাল সাড়ে ৮টা থেকে সোয়া ৯টা পর্যন্ত জেলায় সরেজমিনে দেখা গেছে, আজও ঢাকা আরিচা মহাসড়কের বাসস্ট্যান্ডে ব্যারিকেড দেওয়া রয়েছে। ব্যারিকেডের একপাশ দিয়ে শুধুমাত্র জরুরি পরিষেবার আওতাধীন যানবাহন চলাচল করতে পারছে। প্রতিটি ব্যারিকেডে পুলিশের নজরদারি রয়েছে।
এছাড়া, শহরের প্রবেশমুখে রয়েছে আরও একটি ব্যারিকেড। যারা অপ্রয়োজনে বাইরে আসছেন তাদের এ ব্যারিকেডে পুলিশের জেরার মুখে পড়তে হচ্ছে সবাইকে। এ পয়েন্টে পুলিশ সাধারণ মানুষদের স্বাস্থ্যবিধি মানাতে কাজ করে চলেছেন।
অন্যদিকে শহরের জয়রা রোড, খালপাড়, বেউথা, দুধ বাজার, বাজার ব্রিজসহ বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশ বাঁশের ব্যারিকেড দিয়ে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। এতে করে কেউ অযথা বা অপ্রয়োজনে বাইরে আসতে পারছেন না। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন এলাকায় টহল বাড়ানো হয়েছে। জেলা প্রশাসনের সঙ্গে কাজ করছেন সেনাবাহিনী ও বিজিবি৷ প্রশাসনের নজরদারি বেড়ে যাওয়ায় সাধারণ মানুষের আনাগোনা অনেকটাই কমে গেছে। ব্যারিকেড ও প্রশাসনের নজরদারিতে ঢাকা আরিচা মহাসড়ক ও শহরের প্রবেশমুখ শহীদ রফিক সড়ক এখন ফাঁকা।
এছাড়া বেউথা এলাকার রুবায়েত হোসেন নামের এক ব্যক্তি জানান, শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে ব্যারিকেড দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে এসব পয়েন্টে পুলিশি নজরদারি বেড়েছে। শহরের সব দোকানপাট বন্ধ থাকায় সাধারণ মানুষ বাইরে কম বের হচ্ছেন। তাছাড়া গুরুত্বপূর্ণ সড়কে সারাদিন প্রশাসনের কেউ না কেউ টহল দিচ্ছেন। এতে মানুষ বাইরে আরও কম বের হচ্ছেন।
খালপাড় এলাকা থেকে শিকদার মিয়া বলেন, ‘জরুরি ওষুধ কিনতে ফার্মাসিতে আসছি। জরুরি প্রয়োজনে বাইরে আসলেও পুলিশের জেরার মুখে পড়তে হয়েছে। এটা খুবই ভালো উদ্যোগ। এভাবে লকডাউন বাস্তবায়ন করা হলে সুফল পাওয়া যাবে। ’
মানিকগঞ্জ পুলিশ সুপার রিফাত রহমান শামীম জানান, লকডাউন বাস্তবায়ন করতে জেলা পুলিশের ৪০০ সদস্য মাঠে কাজ করছেন। পুলিশের পক্ষ থেকে গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে ব্যারিকেড দেওয়া হয়েছে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কাউকেই বাইরে আসতে দেওয়া হচ্ছে না। এসময় সাধারণ মানুষদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
অন্য দিকে লকডাউনের প্রথম দিনে ঘিওরে প্রশাসনের কঠোর নজরদারি অব্যাহত রয়েছে। ঘিওরেও খুলতে দেওয়া হয়নি দোকানপাট এবং রাস্তাঘাটেও ছিল না কোনো যানবাহন।
ঘিওর-ঢাকা এবং বরঙ্গাইল ভায়া ঘিওর-টাঙ্গাইল আঞ্চলিক মহাসড়কে অনুমোদিত নিত্য প্রয়োজনীয় যানবাহন ছাড়া কোনো ধরনের যানবাহন দেখা যায়নি। পুলিশ সদস্যরা পথচারী ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দোকান ব্যবসায়ীদের আইন মেনে চলার জন্য প্রচার প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছেন।
ঘিওর উপজেলাধীন ঢাকা আরিচা মহাসড়কের বানিয়াজুরী এলাকায় সরেজমিন সকাল ১১ টায় দেখা যায়, পুলিশের কঠোর অবস্থান। এ সময় সেনাবাহিনী ও বিজেপির কয়েকটি টিমকে টহল দিতে দেখা গেছে। ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের মানিকগঞ্জের প্রবেশদ্বার বারবারিয়া, ধল্লা এবং বানিয়াজুরী ও পাটুরিয়া ঘাট এলাকায় চেক পোষ্ট বসিয়েছে পুলিশ। এ পয়েন্টগুলোতে যানবাহন ও সাধারণ মানুষের চলাচল নিয়ন্ত্রণ করতে কাজ করছে জেলা, উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ ও ম্যাজিষ্ট্রেটের একাধিক টিম।
ঘিওর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ বিপ্লব জানান, সরকার ঘোষিত লকডাউনে আমরা সড়ক-মহাসড়ক ও হাট বাজারে কড়া নজরদারিতে রেখেছি। অনুমোদিত ছাড়া কোন যানবাহন চলাচল করতে দেওয়া হচ্ছে না।