শুরু হতে যাচ্ছে একশন এইড বাংলাদেশ এর রেজিলিয়েন্স ও সংস্কৃতি বিষয়ক দুই দিনব্যাপী উৎসব
বিডিএফএন টোয়েন্টিফোর.কম
‘রেজিলিয়েন্স উৎসবঃ পৃথিবী, মানুষ এবং সম্ভাবনা’ শীর্ষক দুই দিনব্যাপী উৎসবের আয়োজন করতে যাচ্ছে একশনএইড বাংলাদেশ (এএবি)। প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও দেশের মানুষের অপ্রতিরোধ্য মানসিকতা এবং বাংলাদেশের গৌরবময় ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও আচার-অনুষ্ঠান এই উৎসবের মধ্য দিয়ে তুলে ধরা হবে।
দেশের মানুষের সকল প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে সংগ্রাম ও জেগে ওঠার শক্তিকে ঘিরে অনুষ্ঠিতব্য এই আয়োজনের লক্ষ্য বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার গল্পগুলো তুলে ধরা ও মানুষকে উৎসাহিত করা। আগামী ০৯ ও ১০ জুন ঢাকার গুলশান ২-এ অবস্থিত ‘এনসিসি’ (নাভিদ’স কমেডি ক্লাব)-তে এই উৎসব উদযাপিত হবে।
বিগত কয়েক দশক ধরে, বাংলাদেশের মানুষ জলবায়ু ও মানব-সৃষ্ট বিপর্যয়, বৈষম্য, অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতা, শরণার্থী সংকট ও বৈশ্বিক মহামারি-সহ অসংখ্য চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে। কিন্তু প্রতিবারই মানুষ নতুন উদ্যমে পুনরুজ্জীবিত হয়েছে এবং অপ্রতিরোধ্য গতিতে সামনে এগিয়ে গিয়েছে। এর সাম্প্রতিক উদাহরণ হচ্ছে গত দুই বছরে দেশে কোভিড-১৯ মহামারির প্রকোপ। করোনা মহামারি সংকটের সময় দেশের জনগণের সম্মিলিত প্রচেষ্টা অনিশ্চয়তা ও হতাশার মধ্যেও মানুষকে আশাবাদী ও প্রাণোচ্ছল থাকতে সাহায্য করেছে।
দেশের মানুষের এই সহজাত প্রবৃত্তি এবং অপ্রতিরোধ্য মানসিকতা উদযাপনের দাবি রাখে। আর তাই একশনএইড বাংলাদেশ এই উৎসবের আয়োজন করতে যাচ্ছে। বিস্তৃত কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে এই উৎসব দেশের মানুষ, তাদের শক্তি, আনন্দ ও সংহতি উদযাপনে সাহায্য করবে।
উৎসবের প্রথম দিনের (৯ জুন) মূল আকর্ষণের মধ্যে থাকছে– হ্যাপি হোম গার্লস’র পরিবেশনায় উদ্বোধনী পারফরমেন্স; প্রদর্শনী এবং কিয়স্ক উদ্বোধন; ফারাহ্ কবির (কান্ট্রি ডিরেক্টর, একশনএইড বাংলাদেশ), ড. মালেকা বানু (সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ), রওশন আরা (সদস্য, সেতুবন্ধন গড়ি নেটওয়ার্ক), মাহরুখ মহিউদ্দিন (ব্যবস্থাপনা পরিচালক, দ্য ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড), সাবিনা মালো (সাধারণ পরিষদ সদস্য, এএআইবিএস), ফারজানা ফারুক ঝুমু (ইয়ুথ ক্লাইমেট জাস্টিস অ্যাক্টিভিস্ট, ফ্রাইডেস ফর ফিউচার), ইব্রাহিম খলিল আল জায়েদ (এএআইবিএসের ভাইস-চেয়ার), তসলিমা তানিশা (হ্যাপি হোম’র প্রতিনিধি) এবং ফারজানা চৌধুরী (গ্রীন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের চার্টার্ড ইনস্যুরার এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা) ‘মাল্টি-ডাইমেনশনাল পারস্পেক্টিভ অব রেজিলিয়েন্স’ শীর্ষক উদ্বোধনী সংলাপে অংশ নেবেন। এছাড়াও থাকছে ‘শি-টেলস’ শিরোনামের বিশেষ পর্ব, যেখানে দেশের অগ্রবর্তী নারীরা তাদের সাহসিকতার গল্পগুলো তুলে ধরবেন, এবং একশনএইড বাংলাদেশ ব্যান্ডের পরিবেশনায় ‘মুক্ত করো ভয়, আপন মাঝে শক্তি ধরো, নিজেরে করো জয়’ থিমে সাংস্কৃতিক আয়োজন থাকবে। ড. এম খলিলুর রহমানের (সাধারণ পরিষদের সদস্য, এএআইবিএস) বক্তব্যের মধ্য দিয়ে প্রথম দিনের আয়োজনের সমাপ্তি ঘটবে।
উৎসবের দ্বিতীয় দিনে (১০ জুন) একশনএইড বাংলাদেশের অ্যাক্টিভিস্টা নেটওয়ার্কের তরুণদের অংশগ্রহণে ফ্ল্যাশ মব পরিবেশিত হবে। এছাড়াও, বিশিষ্ট বক্তাদের অংশগ্রহণে তিনটি ‘হিউম্যান বুক ক্যাফে’ সেশন থাকবে, যাতে অংশ নেবেন – ইমতিয়াজ আহমেদ (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক এবং সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজের পরিচালক), নাভিদ মাহবুব (জনপ্রিয় কমেডিয়ান ও কলামিস্ট), তানিয়া ওয়াহাব (উদ্যোক্তা), আফসান চৌধুরী (সাংবাদিক ও গবেষক), শামীম আখতার (চলচ্চিত্র নির্মাতা ও মিডিয়া কর্মী), শাকিল আহমেদ (রিডিকিউলাস ফিউচারসের ফিউচারিস্ট, এডুকেটর ও স্টোরিটেলার), মাহরুখ মহিউদ্দিন (ব্যবস্থাপনা পরিচালক, দ্য ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড), আফজাল হোসেন (জনপ্রিয় অভিনেতা ও পরিচালক) এবং আহসান রনি (প্রতিষ্ঠাতা, গ্রিনসেভার)। আবুল কালাম আজাদ (ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের বিশেষ দূত), তানিয়া ওয়াহাব (উদ্যোক্তা), আফজাল হোসেন (অভিনেতা ও পরিচালক), ইমতিয়াজ আহমেদ (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক এবং সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজের পরিচালক), আফসান চৌধুরী (সাংবাদিক ও গবেষক), শামীম আখতার (চলচ্চিত্র নির্মাতা ও মিডিয়া কর্মী) এবং ফারাহ্ কবির (কান্ট্রি ডিরেক্টর, একশনএইড বাংলাদেশ) উৎসবের সমাপনী সংলাপে অংশ নেবেন। সবশেষে থাকবে জনপ্রিয় ব্যান্ড ‘জলের গান’ এর পরিবেশনায় সাংস্কৃতিক আয়োজন।
একশনএইড বাংলাদেশ এর কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ্ কবির বলেন, “সহনশীলতা এবং বাধা অতিক্রম করে বেঁচে থাকার সক্ষমতার কারণে জাতি হিসেবে আমরা অনন্য এবং প্রশংসার দাবিদার। একশনএইডে আমরা অনুধাবন করেছি যে, আমাদের এই সহজাত অপ্রতিরোধ্য মানসিকতা উদযাপনের এখনই সময়, আর এখান থেকেই ফেস্টিভ্যাল অব রেজিলিয়েন্স’র ধারণাটি এসেছে। দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠিতব্য এই আয়োজনের মধ্য দিয়ে আমরা দেশের সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য তুলে ধরতে যাচ্ছি। এটি তৃণমূলের মানুষের প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে গৃহীত পদক্ষেপ সম্পর্কে জানার একটি প্রয়াস। এছাড়াও, এর মাধ্যমে অংশিদারিত্বের সুযোগ সৃষ্টি হবে এবং এই উৎসবে মানুষের মাঝে রেজিলিয়েন্স তৈরির জন্য সচেতনতা বৃদ্ধিতে একশনএইড বাংলাদেশের ভূমিকা তুলে ধরা হবে।”
এছাড়াও উৎসবে থাকবে আকর্ষণীয় খেলা, গল্প বলার লাইভ সেশন এবং বিভিন্ন স্টল, যেখান থেকে বিভিন্ন রকমের হস্তশিল্প, বুটিক ও নানা পদের খাবার কেনা যাবে। উৎসবের উভয় দিনই অন-সাইট রেজিস্ট্রেশনের ব্যবস্থা থাকবে। প্রদর্শনী (ছবি, শিল্পকর্ম, কারুশিল্প, অডিওভিজ্যুয়াল ইত্যাদি) এবং আউড়ি ট্রাস্ট, বাড়ির জিনিস-হ্যাপি হোম, কক্সবাজার রোহিঙ্গা রেসপন্সের স্টল ৯ জুন বিকাল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত এবং ১০ জুন বিকাল ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। উৎসবে অংশ নিতে অনলাইনে নিবন্ধন করার জন্য অনুগ্রহ করে ভিজিট করুন - https://docs.google.com/forms/d/e/1FAIpQLSc5ajjZpfEJRSPoPfbdq602sRTRh1V1wZfDksQH4-2R-_5QAw/viewform