শিরোনাম

South east bank ad

বাংলাদেশের পোশাকের বৈশ্বিক বাজার ধরতে চায় ভারত

 প্রকাশ: ১৮ অগাস্ট ২০২৪, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   গার্মেন্টস/টেক্সটাইল

বাংলাদেশের পোশাকের বৈশ্বিক বাজার ধরতে চায় ভারত

গত মাস জুলাই থেকে কোটা আন্দোলন ঘিরে কঠোর আন্দোলন, পরবর্তীতে সহিংসতা এবং বিদায়ি শেখ হাসিনা সরকারের একের পর কঠোর অবস্থানে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য এবং অর্থনীতির যেমন ক্ষতি হয়েছে, তেমনি ক্ষতি হয়েছে দেশের প্রধান রফতানি খাত তৈরি পোশাক শিল্পের। শিল্প কারখানা বন্ধ থাকার কারণে উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়, সময়মতো পণ্য রফতানি করা যায়নি।

এ কারণে বিদেশি অনেক ক্রেতা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে তাদের রফতানি আদেশ বাতিল করে এবং অনেক নতুন রফতানি আদেশও অন্য দেশে সরিয়ে নেয়। ধারণা করা হচ্ছে আগামী মৌসুমের ১৫-২০ শতাংশ ক্রয়াদেশ ভারত, শ্রীলঙ্কাসহ অন্য দেশে চলে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে। এ পরিস্থিতিতে প্রতিবেশী দেশ ভারত বাংলাদেশ তৈরি পোশাকের বৈশ্বিক বাজার নিজেদের দখলে নিতে চায়। এমন তথ্য উল্লেখ করে একটি প্রতিবেদন করেছে ভারতীয় একটি গণমাধ্যম।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে ভারতীয়দের বিশ্বাস, বাংলাদেশে যদি অস্থিরতা চলতে থাকে, তা হলে তারা বিশ্ববাজারে নিজেদের অবস্থান ধরে রাখতে হিমশিম খাবে। আর সেই সুযোগটারই সদ্ব্যবহার করতে চায় ভারত।

গতকাল শনিবার এ বিষয়ে একটি বিশদ প্রতিবেদন করেছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম মিন্ট। তারা লিখেছে, ভারত হয়তো সহসাই বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের অবস্থানে চলে যেতে পারবে না। এর জন্য তাদের সক্ষমতা বাড়াতে হবে, পাশাপাশি সম্ভাব্য অন্য প্রতিযোগী দেশগুলোর সঙ্গেও লড়াই করতে হবে।

আমদানি-রফতানির তথ্য সরবরাহকারী এক্সিমপিডিয়ার হিসাব অনুসারে, ২০২২ সালে বিশ্বে পোশাক শিল্পের বাজার ছিল ১ দশমিক ৫ ট্রিলিয়ন (দেড় লাখ কোটি) মার্কিন ডলারের। এর মধ্যে শীর্ষ স্থানে থাকা চীনের দখলে ছিল ১৮২ বিলিয়ন ডলারের বাজার। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা বাংলাদেশ ওই বছর ৪৫ বিলিয়ন ডলারের পোশাক রফতানি করেছিল। পঞ্চম স্থানে থাকা ভারত রফতানি করেছিল ১৮ বিলিয়ন ডলারের পণ্য। ভিয়েতনাম-তুরস্কের মতো দেশগুলোও ছিল তালিকার ওপরের দিকে।

অরবিন্দ লিমিটেডের ভাইস চেয়ারম্যান কুলীন লালভাই মিন্টকে বলেন, বাংলাদেশের পরিস্থিতি ভারতের পোশাক খাতের জন্য একটি প্রতিশ্রুতিশীল মধ্য-মেয়াদি সুযোগ তৈরি করেছে। কারণ বৈশ্বিক ব্র্যান্ডগুলো বাংলাদেশ থেকে অন্যত্র যাওয়ার চিন্তা করতে পারে।

আনন্দ রথি ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকিংয়ের পরিচালক ভারত বিড়লাও বিশ্বাস করেন, বাংলাদেশে যদি এই সংকট চলমান থাকে, তা হলে স্বল্প থেকে মাঝারি মেয়াদে ভারতের পোশাক রফতানি ১০ থেকে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে।

পোশাক প্রস্তুতকারক গোকাল দাশ এক্সপোর্টস লিমিটেড জুন প্রান্তিকে তাদের বিনিয়োগকারীদের জানিয়েছে, ক্রেতারা চীনের বাইরে বিকল্প উৎপাদনকেন্দ্র খুঁজছেন। এটি ভারতের মতো বড় এশীয় সরবরাহকারীদের জন্য সুযোগ তৈরি করছে।

ইলারা ক্যাপিটালের টেক্সটাইল ও রিটেলের ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং গবেষণা বিশ্লেষক প্রেরণা ঝুনঝুনওয়ালার মতে, বৈশ্বিক ক্রেতারা হয়তো বাংলাদেশকে পুরোপুরি প্রতিস্থাপন করতে পারবেন না বা অবিলম্বে বিকল্প খুঁজে পাবেন না। তবে তারা ‘সংকটে জর্জরিত’ দেশটির সঙ্গে অতিরিক্ত বড় ব্যবসা এড়াতে বিকল্প খুঁজতে পারেন, যা তাদের ওপর নির্ভরতা কমাবে।

এ অবস্থায় ভারতের যেসব শহরে টেক্সটাইল পণ্য উৎপাদনের ভালো সক্ষমতা রয়েছে, সেখানে নতুন ক্রয়াদেশ অনেকটা বেড়ে যেতে পারে। বিড়লার মতে, গুজরাটের সুরাট, তামিলনাড়ুর তিরুপুর, কর্ণাটকের ইলকাল এবং মধ্য প্রদেশের চান্দেরির মতো শহরগুলো বিশেষভাবে লাভবান হওয়ার সুযোগ রয়েছে।

রেমন্ডের প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা অমিত আগরওয়াল সম্প্রতি মিন্টকে বলেছিলেন, যখনই রাজনৈতিক বা কোনো ধরনের অনিশ্চয়তা তৈরি হয়, তখন মানুষজন আমাদের মতো একটি স্থিতিশীল বাজারে স্থানান্তরিত হওয়ার কথা ভাবে।

তিনি বলেন, আগে বৈশ্বিক ব্র্যান্ডগুলো আমাদের কাপড় সেলাইয়ের জন্য বাংলাদেশে পাঠাতো। এখন এর একটি অংশ দ্রুতই আমাদের কাছে (ভারতে) আসতে পারে।

BBS cable ad

গার্মেন্টস/টেক্সটাইল এর আরও খবর: