জিন ও স্টেম সেল থেরাপি চালু হচ্ছে বিএসএমএমইউতে
থ্যালাসেমিয়া রোগসহ বিভিন্ন রোগের উন্নত ও আধুনিক চিকিৎসা নিশ্চিত করতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) শিগগির চালু হতে যাচ্ছে জিন ও স্টেম সেল থেরাপি।
সোমবার ‘থ্যালাসেমিয়া রোগ: সচেতনা প্রতিরোধ’ শীর্ষক এক ওয়েবিনারে অংশ নিয়ে এ তথ্য জানান বিএসএমএমইউ উপাচার্য শারফুদ্দিন আহমেদ। কালের কণ্ঠ ও বিকন ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের যৌথ উদ্যোগে এর আয়োজন করা হয়।
ওয়েবিনারে স্বাগত বক্তব্য রাখেন কালের কণ্ঠ সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন। সভাপতিত্ব করেন বিকন ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ এবাদুল করিম এমপি।
বিএসএমএমইউর উপাচার্য ওয়েবিনারে রোগটির বিভিন্ন উপসর্গ ও কারণ উল্লেখ করে বলেন, থ্যলাসেমিয়া একটি জন্মগত ও বংশগত রক্তরোগ। এই রোগে মানুষের শরীরের হিমোগ্লোবিনের গঠন প্রণালীতে ক্রটি দেখা দেয়। রোগটি প্রতিরোধে জেনেটিক কাউন্সেলিং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিয়ের আগে পাত্রপাত্রীর রক্ত পরীক্ষা করে নিলে তাদের মাঝে থ্যালাসেমিয়া রয়েছে কিনা তা জানা যাবে। পাত্রপাত্রীর যদি উভয়ের থ্যালাসেমিয়া থাকে তবে তাদের মধ্যে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া ঠিক নয়। এক্ষেত্রে তাদের ভবিষ্যৎ সন্তান থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত হবে। এ বিষয়ে পরিবারের সকল সদস্যকে সচেতন করতে হবে।
উপাচার্য আরও বলেন, থ্যালাসেমিয়া রোগীদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে সরকারি উদ্যোগ আরও বৃদ্ধি করতে হবে এবং বিএসএমএমইউয়ে বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। বর্তমানে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে থ্যালাসেমিয়া রোগীদের জন্য আয়রণ চিলেশন থেরাপি চালু রয়েছে। থ্যালাসেমিয়া রোগসহ বিভিন্ন রোগের উন্নত ও আধুনিক চিকিৎসা নিশ্চিত করা জন্য শিগগির বিএসএমএমইউয়ে জিন থেরাপি ও স্টেম সেল থেরাপি চালু করা হবে।
এদিকে বিএসএমএমইউর উপাচার্য সিমুলেশন ল্যাব বিষয়ক সভা এবং নবগঠিত রিসার্চ সাপোর্ট সেলের সভায় অংশ নেন।
আজ সোমবার তাঁর কার্যালয়ে প্রশাসনিক মিটিং ও শহীদ ডা. মিল্টন হলে এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের কনফারেন্স রুমে চিকিৎসা বিজ্ঞান উপ-শাখায় ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে প্রাপ্ত চিকিৎসা বিজ্ঞান বিষয়ক গবেষণা প্রকল্প প্রস্তাবসমূহ মূল্যায়নের লক্ষ্যে গঠিত কমিটির সভায়ও অংশগ্রহণ করেন।
রিসার্চ সাপোর্ট সেলের সভায় বিএসএমএমইউয়ে উপাচার্য শারফুদ্দিন আহমেদ বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গবেষণা ও প্রশিক্ষণকে সব সময়ই গুরুত্ব দিয়ে আসছেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বিএসএমএমইউর গবেষণা কার্যক্রম ও প্রশিক্ষণ কর্মসূচিকে সম্পূর্ণরূপে ঢেলে সাজানো হবে। রোগ নিরাময়ের নতুন নতুন পদ্ধতির উদ্ভাবনে এবং কার্যকর ভ্যাকসিন ও ওষুধ আবিষ্কারের ক্ষেত্রে গবেষণার বিকল্প নাই। অন্যদিকে দক্ষতা অর্জনের জন্য প্রশিক্ষণের বিকল্প নাই।
সিমুলেশন ল্যাব বিষয়ে বিএসএমএমইউর উপাচার্য বলেন, এ ধরনের ল্যাব স্বাস্থ্য শিক্ষাখাতের আধুনিকায়নের জন্য অত্যন্ত জরুরি। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থী ও তরুণ চিকিৎসকেরা রোগীর শরীরে অপারেশনের পূর্বে কৃত্রিম মানবদেহের উপর প্র্যাকটিস করার সুযোগ পাবে। যা তাদেরকে দক্ষ চিকিৎসক হিসেবে গড়ে তুলবে এবং রোগীরা নির্ভুল চিকিৎসা পাবেন।