রাষ্ট্রপতির সঙ্গে নেপালের প্রেসিডেন্টর দ্বিপক্ষীয় বৈঠক
সহযোগিতার সম্ভাবনাময় খাতগুলো চিহ্নিত করে তা কাজে লাগাতে একযোগে কাজ করবে ঢাকা ও কাঠমান্ডু। দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বাংলাদেশ ও নেপালের রাষ্ট্রপ্রধানদ্বয় এ বিষয়ে একমত পোষণ করেন।
সোমবার (২২ মার্চ) সন্ধ্যায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং সফররত নেপালের প্রেসিডেন্ট বিদ্যা দেবী ভান্ডারির দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হয়।
দ্বিপক্ষীয় আলোচনা শেষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও নৈশভোজের আয়োজন করা হয়। এতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বঙ্গবন্ধুর ছোট কন্যা শেখ রেহানা, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক, কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি খাত শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী, এবং পদস্থ বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ায় নেপালের প্রেসিডেন্টকে ধন্যবাদ জানান।
আবদুল হামিদ বলেন, তার এ সফর বাংলাদেশ ও নেপালের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে। মহান মুক্তিযুদ্ধে সমর্থন ও সহযোগিতা প্রদানের জন্য নেপালের সরকার ও জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ।
বাংলাদেশ ও নেপালের মধ্যে বহু সম্ভাবনাময় খাত রয়েছে উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ এই সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান এবং সরকারি-বেসরকারি সফর বিনিময়ের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
বৈঠককালে বাংলাদেশ ও নেপালের মধ্যে স্বাক্ষরিত চারটি সমঝোতা স্মারকের উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি আশা করেন এর ফলে উভয় দেশের সংশ্লিষ্ট খাতের উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে।
নেপালের প্রেসিডেন্ট বিদ্যা দেবী ভান্ডারি নারী উন্নয়ন ও নারীর ক্ষমতায়নসহ বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নের প্রশংসা করেন।
সন্ধ্যায় নেপালের প্রেসিডেন্ট বঙ্গভবনে পৌঁছালে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও তার স্ত্রী রাশিদা খানম ফুলের তোড়া উপহার দিয়ে তাকে স্বাগত জানান।
এর আগে দুইদিনের সরকারি সফরে সোমবার সকালে ঢাকায় আসেন নেপালের রাষ্ট্রপতি বিদ্যা দেবী ভান্ডারি। হযরত শাহজালাল (র.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ তাকে অভ্যর্থনা জানান। এসময় ২১ বার তোপধ্বনির পর, বিমানবন্দরে নেপালের প্রেসিডেন্টকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন অনুষ্ঠানে যোগ দিতে বিদ্যা দেবীর এই সফর। বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের আমন্ত্রণে এই প্রথম বাংলাদেশ সফরে এসেছেন নেপালের এই রাষ্ট্রপতি।
তার সফরসঙ্গীদের মধ্যে- পররাষ্ট্রবিষয়ক মন্ত্রী প্রদীপ কুমার গিয়াওয়ালি এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, প্রেসিডেন্টের অফিস ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব ও সিনিয়র কর্মকর্তারা রয়েছেন।
বিমানবন্দর থেকে নেপালের রাষ্ট্রপতি সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের বীরদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। বিদ্যা দেবী সেখানে দর্শনার্থীদের বইয়ে স্বাক্ষর করেন এবং একটি চারাগাছ রোপণ করেন। পরে তিনি সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শন করেন।
বিকেলে নেপালের রাষ্ট্রপতি সম্মানিত অতিথি হিসেবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন অনুষ্ঠানে যোগ দেন। সেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেখানে তাকে অভ্যর্থনা জানান।