শিরোনাম

South east bank ad

কাগজ দিয়ে কোটি টাকা তৈরির প্রলোভন দেখিয়ে হাতিয়ে নেয়া হতো মোটা অঙ্কের টাকা

 প্রকাশ: ১০ মার্চ ২০২১, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   আইন আদালত

কাগজ দিয়ে কোটি টাকা তৈরির প্রলোভন দেখিয়ে হাতিয়ে নেয়া হতো মোটা অঙ্কের টাকা

জিনের বাদশা পরিচয়ে অসুস্থ মানুষকে সুস্থ করা ও সাদা কাগজ দিয়ে কোটি কোটি টাকা তৈরি করে দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে বিশ্বাস অর্জন করতো একটি চক্র। এ বিশ্বাস অর্জনের পরে ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে হাতিয়ে নেয়া হতো মোটা অঙ্কের টাকা। এ চক্রের চার সদস্যকে গ্রেফতার করেছে অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
বুধবার (১০ মার্চ) দুপুরে সিআইডি সদর দফতরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি শেখ ওমর ফারুক।
ডিআইজি শেখ ওমর জানান, ভুক্তভোগী মো. আব্দুল খালেক খানের স্ত্রী ও সন্তান দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। এর মধ্যে পরিচয় হয় জিনের বাদশা তারিকুল ইসলামের সঙ্গে। যোগাযোগের একপর্যায়ে জিনের বাদশা খালেককে বলেন, সে চিকিৎসা করতে পারবে। এজন্য জিনের বাদশা পরিচয়ে সে কিছু ওষুধ দেয়। এরপর যে কোনোভাবে খালেকের স্ত্রী-সন্তান কিছুটা সুস্থ হয়। সুস্থ হওয়ার পরে জিনের বাদশার প্রতি খালেকের আস্থা ও বিশ্বাস তৈরি হয়।

গ্রেফতাররা হলেন, মো. তারিকুল ইসলাম (৪০) (জিনের বাদশা), মো. আব্দুল্লাহ বিশ্বাস (৩৩), মো. আল মাসুম (২৮) ও মো. সাইদুল ইসলাম রাজু (৩০)।

ডিআইজি আরও জানান, প্রতারক জিনের বাদশা খালেক নাটকীয়ভাবে চক্রটি- যতো টাকা দরকার, ততো টাকা জিনের বাদশা তৈরি করে দিতে পারবে এমনটা জানিয়ে ফাঁদ পেতে। প্রমাণ হিসেবে জিনের বাদশা খালেকের সামনেই একটি বালতির মধ্যে রাখা সাদা কাগজে ১০০০ টাকার একটি চকচকে নোট তৈরি করে দেয়। আরও বেশি বিশ্বাসের জন্য খালেক জিনের বাদশাকে বলেন- এটা তো নতুন নোট আপনি কিছু পুরাতন টাকা তৈরি করে দেখান। এরপর সে ওই বালতির মধ্যে কিছু পুরাতন টাকা তৈরি করে দেখায়। ম্যাজিকের মতো এমন ঘটনা দেখে খালেকের বিশ্বাস আরও দৃঢ় হয়।

অতিরিক্ত ডিআইজি শেখ ওমর ফারুক জানান, খালেকের চাহিদা অনুযায়ী ছয় কোটি টাকা জিনের বাদশা তৈরি করে দেবে। এক্ষেত্রে একটি শর্তজুড়ে দেয় জিনের বাদশা। শর্ত অনুযায়ী পৃথিবীর সব মসজিদে কোরআন শরীফ কিনে দিতে হবে। কোরআন শরীফগুলো কিনতে এক কোটি ৬৬ লাখ টাকা লাগবে। তার কথায় বিশ্বাস করে বাজার থেকে ছয় কার্টন এ ফোর সাইজের সাদা কাগজ কিনে আনেন খালেক। কাগজ কিনে আনার পর জিনের বাদশা বলেন- আপনারা যতোদিন কোরআন শরীফ কেনার জন্য এক কোটি ৬৬ লাখ টাকা দিতে পারবেন না, ততোদিন কার্টনটি খোলা যাবে না। এ কথায় বিশ্বাস করে আব্দুল খালেক কার্টনটি নিয়ে ঘরের এক কোনায় রেখে দেন।

সিআইডির এই কর্মকর্তা আরও বলেন, জিনের বাদশার এমন প্রলোভনে আব্দুল খালেক দফায় দফায় এক কোটি ১৩ লাখ টাকা জিনের বাদশাকে দেন। খালেকের পরিচিত একজন আরও ৫৩ লাখ টাকা দেন। এক কোটি ৬৬ লাখ টাকা হতে আরও দুই লাখ টাকা বাকি থাকে। তাদের বাকি দুই লাখ টাকা দেয়ার জন্য জিনের বাদশা চাপ দিতে থাকেন।

‘একপর্যায়ে খালেকের সন্দেহ হতে থাকে। আসলেও এই কার্টনে এতো টাকা আছে কি-না। এমন সন্দেহে খালেক কার্টনটি খুলে দেখে টাকা তো দূরের কথা, তার কেনা সাদা কাগজ ছাড়া আর কিছুই নেই। এ সময় প্রতারক চক্রটি ঢাকা থেকে যশোরে গিয়ে বাকি দুই লাখ টাকা এসএ পরিবহনের মাধ্যমে পাঠাতে বলে। প্রতারক চক্রের বিষয়ে ভুক্তভোগী সিআইডিতে অভিযোগ দিলে সিআইডির ঢাকা মেট্রো-পশ্চিমের একটি টিম ফাঁদ পেতে তাদেরকে গ্রেফতার করে’ বলে জানান তিনি।

গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে একটি প্রাইভেট কার, নগদ ১৫ লাখ ৪৯ হাজার টাকা, দুইটি ভেকু, টাকা তৈরির সাদা কাগজসহ বাক্স, মাজারের মাটি, লাল কালিতে আরবি লেখা কাগজ জব্দ করা হয়।

BBS cable ad

আইন আদালত এর আরও খবর: