রংপুরে গোলজার হোসেন নামে এক ব্যবসায়ীর রহস্যজনক মৃত্যু
সীমান্ত সাথী, (রংপুর):
রংপুরের বদরগঞ্জে গোলজার হোসেন (৩০) নামে এক ব্যবসায়ীর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। নিজ শয়ন কক্ষ মেঝে থেকে তাঁর মরদেহ পুলিশ উদ্ধার করে।
আজ রবিবার (৬ মার্চ) সন্ধ্যার দিকে উপজেলার লোহানীপাড়া ইউনিয়নের মাঠেরহাট মোছলমারী গ্রাম থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়। গোলজার হোসেন একই এলাকার মনসুর আলীর ছেলে। নিহতের গলাসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাতের চিহৃ রয়েছে বলে পুলিশ জানায়।
রাতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন রংপুরের অতিরিক্তি পুলিশ সুপার সিফাত ই রাব্বানসহ গোয়েন্দা শাখার বিশেষ দলের সদস্যরা। এ ঘটনায় গোলজারের শ্বশুড় আবুল কাসেম ও স্ত্রী কামরুন্নাহারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সুত্রে জানা, গত পাঁচ বছর আগে গোলজার হোসেনের সঙ্গে একই ইউনিয়নের উত্তর মাদাইখামার গ্রামের আবুল কাসেমের মেয়ে কামরুন্নাহারের সঙ্গে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়।
তাদের ঘরে দুই বছর বয়সের এক পুত্র সন্তান রয়েছে। দাম্পত্য বিষয় নিয়ে প্রায় সময় তাদের ঝগড়া-বিবাদ লেগে ছিল। গতকাল শনিবার গোলজারের সঙ্গে আবারও কামরুন্নাহারের তুমুল ঝগড়া বাধে। এর জেরে কামরুন্নসাহার তার বাবা আবুল কাসেমকে স্বামীর বাড়ি থেকে নিয়ে যাওয়ার জন্য মোবাইল ফোনে ডেকে পাঠান।
ওইদিন রাতে আবুল কাসেম তার মেয়েকে নেওয়ার জন্য জামাইয়ের বাড়িতে ছুটে যান। পরে মেয়ে ও নাতিকে নিয়ে নিজ চলে আসেন তিনি। এ ঘটনার পরের দিন আজ রবিবার দুপুরের দিকে শয়ন ঘরের মেঝেতে গোলজারের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে এলাকাবাসী পুলিশে খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে।
তবে রহস্যজনক এ মৃত্যু নিয়ে গোলজারের পরিবার ও শ্বশুড়বাড়ীর পরিবারের মধ্যে একে অপরকে দোষারোপ করতে দেখা যায়। এলাকাবাসী কৈলাশ চন্দ্র রায় বলেন, প্রায় সময় স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া-বিবাদ লেগে ছিল। এর জেরে গোলজারের শ্বশুড় তার মেয়েকে নিজ বাড়ি নিয়ে যায়। এ ঘটনার একদিন পর নিজ ঘর থেকে গোলজারের লাশ উদ্ধার করা হয়। ঘটনাটি হত্যা নাকি আতœহত্যা তা নিশ্চিত করে বলা মুশকিল।
এদিকে নিহত গোলজারের ভাতিজা বৌ আদুরী খাতুন বলেন, ‘কথায় কথায় স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়া ফ্যাসাদ লেগেই ছিল। তুচ্ছ ঘটনায় জেরে কামরুন্নাহার তার বাবাকে ডেকে আনেন। আবার রাতেই তারা চলে যান। সকাল থেকে কোন সাড়া শব্দ না পেয়ে ঘরে ঢুকে মাটিতে গোলজারের লাশ পাওয়া যায়। আমাদের ধারণা রাতের কোন এক সময় ঘরে ঢুকে তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে।
এদিকে কামরুন্নাহার স্থানীয়দের জানান, ঝগড়ার কারণে আমি রাতে বাবার সঙ্গে চলে আসি। আসার সময় সে বলেছিল বিষপানে আত্মহত্যা করবে। সকাল থেকে তাঁকে ফোন করছি কিন্তু সে ফোন ধরেনি। পরে পাশের বাড়ির লোকজনের মাধ্যমে ঘরে গিয়ে খবর নিতে বলি। তারা আমাকে জানায় সে মারা গেছে।
বদরগঞ্জ থানার ওসি হাবিবুর রহমান বলেন, ‘মৃত্যুর রহস্য উদ্ঘাটন করার চেষ্টা চলছে। গোয়েন্দা শাখার সদস্যরাও ঘটনাটি তদন্ত করছে। মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য রংপুর মর্গে পাঠানো হবে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহতের শ্বশুড় ও স্ত্রীকে আটক করা হয়।