শিরোনাম

South east bank ad

শাহজাহান মিয়ার আকুতি আর কতদিন বেঁধে রাখবো সন্তানকে

 প্রকাশ: ০৬ মার্চ ২০২২, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   সারাদেশ

শাহজাহান মিয়ার আকুতি আর কতদিন বেঁধে রাখবো সন্তানকে

এস.এম রফিক, (নেত্রকোনা):

‘‘খোকা ঘুমালো পাড়া জুড়ালো বর্গি এলো দেশে, বুলবুলি সব ধান খেয়েছে খাজনা দিবো কিসে’’ এমন ছড়া বলতে বলতে হাত বাঁধা অবস্থায় জান্নাতুল বৃষ্টি (৭) কে ভাত খাওয়াচ্ছে তার মা।

জন্মের পর থেকে মানসিক ভারসাম্যহীন আদরের কন্যা সন্তান জান্নাতুল। সামর্থ্য অনুযায়ী অনেক চিকিৎসা করিয়েও কোন কাজ হয়নি। অর্থের অভাবে উন্নত চিকিৎসাও করাতে পারছেন না জান্নাতুলের পরিবার। তাই বাধ্য হয়েই আদরের সন্তানের দু-হাতে কাপড় দিয়ে ঘরের বারান্দার খুঁটির সঙ্গে এভাবেই বেঁধে রেখে অন্যান্য কাজ সারেন মা।

নেত্রকোনার দুর্গাপুর পৌর শহরের দশাল এলাকার বাসিন্দা শাহ জাহান মিয়ার শিশু কন্যা সন্তান জান্নাতুল বৃষ্টি। উন্নত চিকিৎসার অভাবে দীর্ঘ ৭ বছর ধরে এভাবেই বন্দিজীবন কাটছে তার। শাহ জাহান মিয়া পেশায় রাজমিস্ত্রি। পরিবারে তার দুই মেয়ে ও স্ত্রী রয়েছেন।

২০১৪ সালের ৬ জুন স্বাভাবিক জন্ম হয় জান্নাতুল বৃষ্টির। জন্মের পর কোনো সাড়া-শব্দ না থাকায় তাকে তখন স্থানীয় হাসপাতালে নিলে সেখান থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়িতে চলে আসেন শাহজাহান মিয়া।

পরবর্তিতে এক বছর বয়স থেকেই সে জান্নাতুল অস্বাভাবিক আচরণ শুরু করে। তাকে ছেড়ে দিলে সে নিজেই নিজের মাথায় থাপ্পড় দেয় কোন সময় মাটির সাথে ধাক্কা দিয়ে সামনে যাকে পায় তাকে কামড়াতে এগিয়ে যায়। ঘর থেকে বেরিয়ে যেতে চায়, সুযোগ পেলে অন্যদের মারধর করে।

সামর্থ মোতাবেক গ্রামের কবিরাজ ও স্থানীয় ডাক্তারের কাছে নিয়েও কোন লাভ হয়নি। এরপর থেকে শিশু বৃষ্টির দু-হাত সব সময় কাপড় দিয়ে ঘরের খুঁটির সাথে বেঁধে রাখেন তার বাবা-মা। পরবর্তিতে হাসপাতালের ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেলে তারা উন্নত চিকিৎসার করাতে পরামর্শ দেন। কিন্তু অর্থের অভাবে তা আর সম্ভব হয়ে উঠেনি।

বৃষ্টির চিকিৎসা নিয়ে শাহজাহান মিয়া এ প্রতিবেদক’কে বলেন, আমি পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি, সারাদিন দৈনিক মজুরী হারে কাজ করে যে টাকা পাই তা দিয়ে কোন রকম চলে আমার সংসার।

আমার দুই মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে ছোট একটা ঘরে বসবাস করি। আমার মেয়েকে ঢাকায় নিয়ে উন্নত চিকিৎসা করাবো সে সামর্থ বা টাকা পয়সা আমার নাই। তাই মেয়েটাকে নিয়ে অনেক কষ্টে কোন রকম দিন পার করছি। যদি কোন ধণাঢ্য বা হ্নদয়বান ব্যক্তি বা সরকারি ভাবে মেয়ের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেদিতেন তাহলে আমার মেয়েটা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারতো।

BBS cable ad

সারাদেশ এর আরও খবর: