র্যাবের পোশাকে ডাচ-বাংলা এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের সাড়ে ২৮ লাখ টাকা লুট
সিরাজগঞ্জে ডাচ-বাংলা ব্যাংকের এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের সাড়ে ২৮ লাখ টাকা লুট হওয়ার ঘটনায় ১১ জন আন্তঃজেলা ডাকাতকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ সময় ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত মাইক্রোবাসটি জব্দ করা হয়। সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) সকালে তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন সিরাজগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) মো. জিয়াউর রহমান।
এছাড়াও গতকাল রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জেলা পুলিশ জানান, র্যাবের পোশাক পরে ডাচ্ বাংলা ব্যাংকের এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের ২৮ লাখ ৫৫ হাজার টাকা লুটের ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটনসহ এ ঘটনায় জড়িত ১১ জন আন্তঃজেলা ডাকাত সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পাশাপাশি ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত একটি মাইক্রোবাস, একটি মোটরসাইকেল, চাবি ও কাভারসহ একজোড়া হ্যান্ডকাফ, ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত র্যাবের দুটি কটি, কাভারসহ একটি খেলনা পিস্তল, চার্জারসহ একটি ওয়াকি-টকি, ১৭টি মোবাইল ও লুট হওয়া টাকার মধ্যে কিছু টাকা উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত আসামিরা হলেন- সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার বাতিয়া গ্রামের আব্দুল মজিদের ছেলে জীবন পারভেজ রেজা (৪৭), একই গ্রামের মৃত আব্দুল জলিলের ছেলে বাচ্চু মিয়া (৪৭), একই গ্রামের মৃত তুফান মণ্ডলের ছেলে রবিউল করিম (৪৫), মৌলভীবাজারের রাজনগর থানার করতল গ্রামের মৃত ময়না মিয়ার ছেলে আবজাল মিয়া উজ্জ্বল (৪০), ঝালকাঠি জেলার নলছিড়ি থানার জুরকাঠি গ্রামের মৃত আব্দুল খালেকের ছেলে মো. জয় (৪০), চাঁদপুর জেলার মতলব উত্তর থানার সাতবাড়িয়া গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে সুমন মিয়া (৪০), শেরপুরের শ্রীরবদি থানার ধাতুয়া গ্রামের মৃত সৈয়দুল রহমানের ছেলে মো. সুমন (৪৭), পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া থানার বড়মাছুয়া গ্রামের হোসেন আলীর পুত্র শাহাদাত হোসেন (৫৫), জয়পুরহাট জেলার আক্কেলপুর থানার মানিকপাড়ার মৃত আনারুলের ছেলে মো. আপেল (৩৬), পাবনার চাটমোহর থানার নবীন পূর্বপাড়া গ্রামের মৃত আবুল হোসেন সরদারের ছেলে শহিদুল ইসলাম (৪৪) ও চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ থানার ভুটাল হাজিবাড়ি গ্রামের আব্দুল রহিমের ছেলে মোস্তফা কামাল জয় (৪৭)।
উল্লেখ্য, গত ১২ ডিসেম্বর বিকেলে ডাচ্ বাংলা ব্যাংকের এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে কর্মরত মো. মামুনুর রশিদ এবং মো. জোনায়েদ রহমান মিরাজ মোট ২৮ লাখ ৫৫ হাজার টাকা নিয়ে মেসার্স মীর ট্রাভেলস্ নামক ডাচ্ বাংলার মাস্টার এজেন্ট ব্যাংক হতে মোহনপুর ডাচ্ বাংলা এজেন্ট আউটলেট এবং কয়ড়া ডাচ্ বাংলা আউটলেটের চাহিদাকৃত টাকা নিয়ে মোটরসাইকেলযোগে যাচ্ছিলেন। পথে উল্লাপাড়ার পাবনা-ঢাকা মহাসড়কের এলাকায় ডাকাতরা একটি মাইক্রোবাস থেকে র্যাবের কটি পড়ে ৫-৬ জন ব্যক্তি রাস্তায় নেমে মোটরসাইকেলটি সংকেত দিয়ে থামায়।
এ সময় র্যাবের পোশাকধারী দুজনকে তাদের বহনকৃত টাকার ব্যাগসহ জোরপূর্বক মাইক্রোবাসের মধ্যে তুলে নেয় এবং তাদের হাতে হ্যান্ডকাপ পরিয়ে দেয়, চোখ ও হাত বাঁধাসহ তাদের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি মারে। এ সময় তাদের নিকটে থাকা নগদ ২৮ লাখ ৫৫ হাজার টাকার ব্যাগ ছিনিয়ে নিয়ে তাড়াশ থানাধীন রাজশাহী-বনপাড়া মহাসড়কের হামকুরিয়া ৯ ও ১০নং ব্রিজের মাঝামাঝি স্থানে চোখ ও হাত বাঁধা অবস্থায় মাইক্রোবাস থেকে ফেলে দ্রুত চলে যায়। এ ঘটনায় উল্লাপাড়া মডেল থানায় অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করা হয়।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) মো. জিয়াউর রহমান বলেন, গ্রেফতারের পর ৭ ডাকাত ঘটনার সঙ্গে নিজেদের সম্পৃক্ততা স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।