আশিয়ান সিটির আবাসিক প্রকল্পে নিষেধাজ্ঞা বহাল
রাজধানীর আশিয়ান সিটির আবাসিক প্রকল্পের কার্যক্রম বৈধ ঘোষণা করে হাই কোর্টের দেওয়া রিভিউর রায়ে স্থগিতাদেশ দিয়েছে আপিল বিভাগ। একই সঙ্গে ওই রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ ও রিটকারীদের আপিলের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
চার সপ্তাহের মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষ এবং বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতিসহ (বেলা) রিটকারীদের আপিলের সারসংক্ষেপ জমা দিতে বলা হয়েছে। গতকাল প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে আপিল বিভাগের তিন বিচারপতির বেঞ্চ এ আদেশ দেয়। ফলে আশিয়ান সিটির আবাসিক প্রকল্পের কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা থাকছে বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
বেলার আইনজীবী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান সাংবাদিকদের জানান, উত্তরখান, দক্ষিণখান, বরুয়া ও বাউথার মৌজায় আশিয়ান সিটি প্রকল্পের সব কার্যক্রম (বিজ্ঞাপন, মাটি ভরাট, প্লট বিক্রয়, রেজিস্ট্রেশন ইত্যাদি)-এর ওপর পূর্বের নিষেধাজ্ঞা বহাল রেখেছে আপিল বিভাগ। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা। রিটের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ড. কামাল হোসেন, ফিদা এম কামাল। সঙ্গে ছিলেন সাঈদ আহমেদ কবির ও সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। আশিয়ান সিটির পক্ষে ছিলেন আইনজীবী কামরুল হক সিদ্দিকী।
আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক), অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট, বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা), ব্লাস্ট, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন, ইনস্টিটিউট অব আর্কিটেক্ট বাংলাদেশ, নিজেরা করি, পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন নামের ৮টি সংগঠন ২০১২ সালের ২২ ডিসেম্বর এ রিট করে। রিটে আশিয়ান সিটি আবাসিক প্রকল্পকে দেওয়া রাজউকের অনুমোদন এবং পরিবেশ অধিদফতরের দেওয়া আশিয়ান সিটির অবস্থানগত ছাড়পত্রের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করা হয়। ২০১৪ সালের ১৬ জানুয়ারি আশিয়ান সিটির প্রকল্পকে অবৈধ বলে রায় দেয় হাই কোর্ট। পরে আশিয়ান সিটি হাই কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) আবেদন করে। শুনানি শেষে ২০১৬ সালের ১৬ আগস্ট এ বিষয়ে আগের রায় বাতিল ও রিভিউ মঞ্জুর করে হাই কোর্ট। এতে আশিয়ান সিটি প্রকল্প বৈধতা পায়।
পরে ওই রায় স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ ও রিটকারীরা চেম্বার আদালতে গেলে চেম্বার বিচারপতি তা আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন। ওই বছরের ২২ আগস্ট আপিল বিভাগের পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ দুটি আবেদনের শুনানি নিয়ে হাই কোর্টের রিভিউ রায় স্থগিত করে। সেই সঙ্গে রিটকারী ও রাষ্ট্রপক্ষকে লিভ টু আপিলের অনুমতি দেওয়া হয়। সেই লিভ টু আপিল গ্রহণ করে গতকাল আদেশ দেয় আপিল বিভাগ।