South east bank ad

ঝালকাঠির বিভিন্ন হাটবাজারে চাক জালের জমজমাট বিক্রি

 প্রকাশ: ২৪ এপ্রিল ২০২১, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   সারাদেশ

ঝালকাঠির বিভিন্ন হাটবাজারে চাক জালের জমজমাট বিক্রি

মোঃ রাজু খান (ঝালকাঠি):

প্লাস্টিকের সুতা দিয়ে বিশেষ পদ্ধতিতে জাল বুনানো হয়। এরপরে বাঁশের কঞ্চি তৈরী করে চিকন করে ছেঁচে শলা আকৃতিতে চাক বানিয়ে জালের সাথে সেট করা হয়। সুতার জাল আর বাঁশের শলা দিয়ে তৈরি করা হয় মাছ ধরার ফঁাদ। চাকার মতো ঘোরানো যায়, তাই স্থানীয় নাম চাক জাল। তবে দেখতে বুচনা চাঁইয়ের মতো হওয়ায় এটি বুচনা জাল নামেও পরিচিত। বর্ষা মৌসুমে চিংড়ি মাছ ধরার জন্য কৃষক ও জেলেরা চাক জাল ব্যবহার করেন।

রাজাপুরের বাগড়িতে সপ্তাহের প্রতি রবি ও বৃহস্পতিবার চাক জালের হাট বসে। বর্ষা মৌসুমে ধান খেতে মাছের আনাগোনা বেড়ে যাওয়ায় উপকূলীয় এলাকার বিভিন্ন হাট বাজারে চাক জালের কেনাবেচা হয়। চাক জালের কারিগরেরা জানান, গ্রামাঞ্চলে বর্ষাকালে ধান খেত ও নালায় বাঁশের তৈরি চাঁই পেতে মাছ ধরতেন শিকারিরা। এক দশক ধরে উপকূলীয় এলাকায় বাঁশের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় চাঁইয়ের উৎপাদন ব্যয় কয়েক গুণ বেড়ে যায়। তা ছাড়া বাঁশের সংকটও রয়েছে। তবে চাক জাল তৈরিতে খরচ কম। জাল তৈরির কাঁচামাল সহজলভ্য। তাই বঁাশের তৈরি চাঁইয়ের বিকল্প হিসেবে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে চাক জাল। ধরন ও পদ্ধতি হুবহু বুচনা চঁাইয়ের মতো। শুধু বাঁশের পরিবর্তে সুতার জাল ব্যবহার করে এই জাল তৈরি করা হয়। স্থানীয় কৃষকদের নিজস্ব মেধা ও শ্রম দিয়ে উদ্ভাবিত এ জালের উৎপাদন খরচ ও দাম কম হওয়ায় চাক জালের চাহিদা বেড়েছে।

মাছ শিকারী মো. আইউব বলেন, এক সময়ে বঁাশের তৈরি চাঁইয়ের চাহিদা ছিল। বর্তমানে বঁাশের তৈরি চঁাইয়ের দাম বেশি হওয়ায় চাক জাল মানুষ বেশি কিনছে। শাহাদাৎ হোসেন বলেন, বর্ষা মৌসুমে ধান খেতে ও ছোট নালায় প্রচুর চিংড়ি মাছ পাওয়া যায়। চিংড়ি মাছ ধরার জন্য চাক জালের প্রচুর চাহিদা। তিনি বাড়ির পাশে নালায় চাক জাল দিয়ে চিংড়ি মাছ ধরার জন্য জাল কিনেছেন। বর্ষা মৌসুমে খাল, বিল ও ধানের খেতে পানি বাড়ায় মাছ ধরার জন্য চাঁই ও জালের চাহিদা বেড়ে যায়। এপ্রিল থেকে আগস্ট পর্যন্ত চাক জালের বেচাকেনা বেশি হয়। এ সময় ধানের খেত ও ছোট ছোট নালায় চঁাই ও চাক জাল পেতে মাছ ধরা হয়। তবে বছরজুড়েই মাছ ধরার জন্য চাক জলের চাহিদা রয়েছে। বড় চাক জাল ১৫ থেকে ২০ হাত পর্যন্ত লম্বা হয়। বড় একটি জাল ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি হয়। ছোট জাল সাধারণত চার থেকে পাঁচ হাত হয়। দাম ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা।

চাক জাল বিক্রেতা আবুল হোসেন বলেন, বর্ষা মৌসুমে ধান খেতে চিংড়ি মাছ ধরার জন্য চাক জালের চাহিদা বেড়ে যায়। এ সময় তাঁরা কৃষি কাজের অবসরে প্রতিদিন তিন থেকে পাঁচটি চাক জাল তৈরি করেন। ঘরে বসে নারীরাও চাক জাল তৈরি করেন। প্রতি রবি ও বৃহস্পতিবার বাগড়ি হাটে জাল বিক্রি করেন। প্রতিটি বড় জাল বিক্রি করে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা এবং ছোট জাল বিক্রি করে ৫০ টাকা থেকে ১০০ টাকা লাভ হয়।

BBS cable ad

সারাদেশ এর আরও খবর: