শিরোনাম

South east bank ad

বিজিবিতে বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উদযাপন

 প্রকাশ: ১৭ মার্চ ২০২৩, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   বিজিবি

বিজিবিতে বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উদযাপন

সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, স্বাধীনতা সংগ্রামের অবিসংবাদিত নেতা, বাংলাদেশের মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৩তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস ২০২৩ যথাযথ মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে উদযাপন করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)

দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে বিস্তারিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে সকালে পিলখানায় বিজিবি সদর দপ্তরসহ সারাদেশে বিজিবি’র সকল ইউনিটে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয় এবং সকাল ৯টায় বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ, ১৯৭৪ সালের ৫ ডিসেম্বর তৎকালীন বাংলাদেশ রাইফেলস (বিডিআর) এর ৩য় ব্যাচের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজে বঙ্গবন্ধুর প্রদত্ত ভাষণ ও ‘অসমাপ্ত মহাকাব্য’ শীর্ষক প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন এবং বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্মের ওপর বিশেষ আলোচনা করা হয়।

বিজিবি সদর দপ্তর, পিলখানায় সীমান্ত সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত আলোচনা সভায় বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল এ কে এম নাজমুল হাসান প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবসহ ৭৫’র ১৫ই আগস্ট শাহাদতবরণকারী তার পরিবারের সকল সদস্য, মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী সকল বীর শহীদ এবং বিজিবি'র ২জন বীরশ্রেষ্ঠসহ আত্মোৎসর্গকারী ৮১৭ জন বীর শহীদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে বিজিবি মহাপরিচালক বলেন, ‘আজ বাঙালি জাতির জন্য একটা বিশেষ দিন। ১৯২০ সালের এই দিনে জাতির পিতার জন্ম না হলে হয়তো এখনও আমরা পশ্চিম পাকিস্তানের সেই পরাধীনতার শিকলে বন্দী থেকে যেতাম।’ 

তিনি বলেন, ‘সকালে সূর্য উঠলে যেমন আমরা দেখতে পাই দিনটা কেমন যাবে, ঠিক তেমনি কোনো মহামানবের আগমন উপলক্ষেও অনেক ধরনের পূর্বাভাস পাওয়া যায়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তেমনি একজন মহাপুরুষ। বঙ্গবন্ধুর জীবন ইতিহাস পর্যালোচনা করলে ছোটবেলা থেকেই তার মধ্যে মানুষের প্রতি সহমর্মিতা, সহানুভূতি ও মহানুভবতা এবং নেতৃত্বের গুণাবলির পরিচয় পাওয়া যায়। ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের সময় থেকেই তার নেতৃত্বের গুণাবলি প্রস্ফুটিত হতে থাকে এবং একজন আপসহীন ও অবিসংবাদিত নেতা হিসেবে তার আত্মপ্রকাশ ঘটে। তিনি ১৯৪৮ সালে ছাত্রলীগ গঠন করেন, ৫২'র ভাষা আন্দোলনে জেলখানায় থেকেও তিনি নেতৃত্ব দেন। পরবর্তীতে ১৯৬৬ সালের ৬ দফা দাবি, ১৯৬৯ সালের গণআন্দোলন এবং সর্বোপরি ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ প্রতিটি ক্ষেত্রেই তিনি সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন। বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের সেই ঐতিহাসিক ও জগদ্বিখ্যাত ভাষণ এখন পৃথিবীর ইতিহাসে সর্বশ্রেষ্ঠ ভাষণ হিসেবে পরিগণিত, যার মাধ্যমে স্বাধীনতার সুস্পষ্ট ঘোষণা এসেছিল। আপামর জনসাধারণ মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল এবং পৃথিবীর মানচিত্রে বাংলাদেশ নামক একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের অভ্যুদয় ঘটেছিল। 

জাতির পিতা ১৯৭৪ সালে পিলখানায় তৎকালীন বিডিআরের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে ঐতিহ্যবাহী এই বাহিনীর করণীয় ও দায়িত্ব সম্পর্কে যে সুচিন্তিত নির্দেশনা দিয়েছিলেন, সেটি হৃদয়ে ধারণ করে বিজিবি'র ওপর অর্পিত পবিত্র দায়িত্ব বিশেষ করে আন্তর্জাতিক সীমানা রক্ষা করা, চোরাচালান বন্ধ করা, মাদক পাচার রোধসহ অন্যান্য সকল দায়িত্ব দক্ষতা, সততা, ন্যায়, নীতি ও নিষ্ঠার সাথে পালনের আহ্বান জানান বিজিবি মহাপরিচালক।

তিনি আরো বলেন, ‘বর্তমান সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ আজ উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হয়েছে। ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ একটি উন্নত-সমৃদ্ধ স্মার্ট দেশ হিসেবে বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে।’ 

দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য বিজিবি'র প্রতিটি সদস্যকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে সততা ও কর্তব্যনিষ্ঠার সাথে বিজিবির ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান তিনি। তিনি ব্যক্তি স্বার্থকে ঊর্ধ্বে রেখে সামগ্রিকভাবে দেশের উন্নতির জন্য, দেশের মানুষের কল্যাণে এবং বিজিবি'র সমৃদ্ধি ও সুনাম বৃদ্ধির জন্য সম্মিলিতভাবে কাজ করার দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৩তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে আজ বাদ জুমা পিলখানায় কেন্দ্রীয় মসজিদসহ সকল রিজিয়ন, প্রতিষ্ঠান, সেক্টর ও ইউনিটের মসজিদে বিশেষ মোনাজাতের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু, তার পরিবার, দেশ, জাতি ও বিজিবি’র উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি ও কল্যাণ কামনা করে দোয়া করা হয়। এছাড়া বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে সদর দপ্তর বিজিবি, পিলখানার গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোতে সীমিত আকারে আলোকসজ্জা এবং সারাদেশে বিজিবি’র সকল রিজিয়ন, প্রতিষ্ঠান, সেক্টর ও ইউনিটে ব্যানার, ফেস্টুন এবং পতাকা দ্বারা সজ্জিত করা হয়। দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে রাতে পিলখানাসহ সারাদেশে বিজিবি’র সকল ইউনিটে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

দিবসটি উপলক্ষে আয়োজিত সকল অনুষ্ঠানে বিজিবি’র সকল পর্যায়ের কর্মকর্তা, জুনিয়র কর্মকর্তা, অন্যান্য পদবীর সৈনিক, সকল অসামরিক কর্মকর্তা ও কর্মচারী উপস্থিত ছিলেন।

BBS cable ad