খালের জায়গা দখলদারদের ফের হুঁশিয়ারি দিলেন মেয়র আতিক
বিডিএফএন টোয়েন্টিফোর.কম
খালের জায়গা দখল করে যারা স্থাপনা গড়েছেন তাদের ফের হুঁশিয়ারি দিয়ে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেছেন, খালের সীমানা নির্ধারণের কাজ চলছে, সেখানে বসানো হবে পিলার।
সীমানার মধ্যে কারও বাসা, বৈঠকখানা, অফিস পড়তে পারে কিন্তু কেউ রেখাই পাবেন না। অবৈধ দখলদারদের স্থাপনা বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হবে।
আজ রোববার (৬ মার্চ) রাজধানীর উত্তরখান এলাকার কাঁচকুড়া হাইস্কুল মাঠে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের নতুন ১৮টি ওয়ার্ডের সড়ক অবকাঠামো-ড্রেনেজ ব্যবস্থার নির্মাণ ও উন্নয়ন (ফেজ ১) প্রকল্পের উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়নের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গণভবন প্রান্ত থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
খালগুলো উদ্ধার করে আমরা পানি প্রবাহ ফিরিয়ে আনব উল্লেখ করে আতিকুল ইসলাম বলেন, সেজন্য খালের সীমানা নির্ধারণ করে পিলার বসানোর কাজ চলছে। আমরা চাই খালগুলোতে নৌকা চলবে, খালের পাড়ে হবে ওয়াকওয়ে, থাকবে সাইকেল লেন, সবুজে ভরা গাছ-গাছালি। সবুজের শহর, অক্সিজেনের শহর গড়তে চাই আমরা। আমরা ইতোমধ্যে লাউতলা খাল উদ্ধার করেছি, যেটি ১৬ বছর ধরে দখল ছিল।
ডিএনসিসি মেয়র বলেন, আমরা গুলশান লেক, বারিধারা লেকে মাছ ছাড়তে গিয়ে দেখেছি সেখানে উপযুক্ত পরিবেশ নেই। অভিজাত এলাকাতেও পয়ঃবর্জ্যের লাইন ড্রেন, খালে দেওয়া হয়েছে, যা খুবই দুঃখজনক। বাসা-বাড়িতে নিজ উদ্যোগে সেফটি ট্যাংক বসাতে হবে। না হলে পরিবেশ দূষণ হচ্ছে। এ বিষয়ে সবাই সচেতন না হলে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
মেয়র আতিক বলেন, স্মার্ট ঢাকা গড়তে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। শহরে আমরা ৫২ হাজার স্মার্ট বাতি লাগানোর টার্গেট নিয়েছি, যার মধ্যে ৩৬ লাগানো হয়েছে। এগুলো স্মার্টলি স্মার্ট ফোনের মাধ্যমে যেকোনো স্থান থেকে নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
১ এপ্রিল থেকে ডিএনসিসির আওতাধীন সব ট্যাক্স গ্রাহকরা অনলাইনে দিতে পারবেন। এছাড়া নগরবাসী যেন তাদের যেকোনো অভিযোগ ভোগান্তিহীনভাবে ডিএনসিসিকে জানাতে পারে সে কারণে আমরা সবার ঢাকা অ্যাপ এনেছি। যার মাধ্যমে যে যার এলাকার সমস্যার কথা আমাদের জানাতে পারছেন।
মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ২০টি পার্ক অত্যন্ত আধুনিকভাবে সাজানো হয়েছে। পাশাপাশি আধুনিক সুবিধা সম্মিলিত খেলার মাঠও আমরা প্রস্তুত করেছি।
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন সূত্রে জানা গেছে, দক্ষিণখানের কসাইবাজার থেকে উত্তরখানের কাঁচকুড়া বাজার পর্যন্ত রাস্তার উন্নয়ন কাজের মধ্যে দিয়ে নতুন ১৮টি ওয়ার্ডের উন্নয়নের মেগা প্রজেক্টের কাজ শুরু হবে। নবগঠিত ১৮টি ওয়ার্ডে মেগা প্রকল্পের আওতায় চলতি মাসেই কাজ শুরু হবে।
ডিএনসিসির নতুন এসব ওয়ার্ডগুলোর জন্য ২০২০ সালের ১৪ জুলাই ৪ হাজার ২৫ কোটি ৬২ লাখ টাকার প্রকল্প অনুমোদন দেয় একনেক। করোনা মহামারির জন্য কাজ শুরু হওয়া পিছিয়ে গিয়েছিল। দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের নতুন ওয়ার্ডগুলোতে উন্নয়ন কাজ শুরু হতে যাচ্ছে। এতদিন সার্বিক উন্নয়নে পিছিয়ে ছিল ওয়ার্ডগুলো।
২০১৬ সালের ৯ মে প্রশাসনিক পুনর্বিন্যাস সংক্রান্ত জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটিতে (নিকার) ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের সঙ্গে ৮টি করে ইউনিয়ন যুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরের বছর নবগঠিত ৩৬টি ওয়ার্ডকে দশটি অঞ্চলে বিভক্ত করা হয়।
ডিএসসিসির শ্যামপুর, দনিয়া, মাতুয়াইল, সারুলিয়া, ডেমরা, মান্ডা, দক্ষিণগাঁও ও নাসিরাবাদ ইউনিয়নকে ৫৮, ৫৯, ৬০, ৬১, ৬২, ৬৩, ৬৪, ৬৫, ৬৬, ৬৭, ৬৮, ৬৯, ৭০, ৭১, ৭২, ৭৩, ৭৪ ও ৭৫ নম্বর ওয়ার্ডে বিভক্ত করা হয়।
অপরদিকে ডিএনসিসি অন্তর্ভুক্ত বাড্ডা, ভাটারা, সাতারকুল, বেরাঈদ, ডুমনি, উত্তরখান, দক্ষিণখান ও হরিরামপুর ইউনিয়নকে ৩৭, ৩৮, ৩৯, ৪০, ৪১, ৪২, ৪৩, ৪৪, ৪৫, ৪৬, ৪৭, ৪৮, ৪৯, ৫০, ৫১, ৫২, ৫৩ ও ৫৪ নম্বর ওয়ার্ডে বিভক্ত করা হয়।