শিরোনাম

South east bank ad

ব্যাংক খাতের দুরবস্থায় ঝুঁকির মুখে আমদানি-রফতানি ও বিদেশি বিনিয়োগ!

 প্রকাশ: ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   আমদানী/রপ্তানী

ব্যাংক খাতের দুরবস্থায় ঝুঁকির মুখে আমদানি-রফতানি ও বিদেশি বিনিয়োগ!

দেশের ব্যাংক খাতের দুরবস্থার করুণ চিত্র বিশ্বব্যাপী তুলে ধরছে এসঅ্যান্ডপিসহ আন্তর্জাতিক ঋণমান যাচাইকারী সংস্থাগুলো। যার নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে এলসি খুলতেও দিচ্ছে না সহযোগী বিদেশি ব্যাংক। ব্যবসায়ীদের শঙ্কা, অবস্থার উন্নয়ন না হলে ঝুঁকির মুখে পড়বে আমদানি-রফতানি বাণিজ্য, বিদেশি বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান। পাশাপাশি ব্যাংক খাতের সংস্কার কার্যক্রমের দৃশ্যমান

চলতি বছরের ১২ মার্চ সবুজ, হলুদ, লাল নানা রঙের তালিকায় গ্রাহকের চোখের সামনে আসে ব্যাংক খাতের দুর্দশার চিত্র। এরপর ১৮ মার্চ নিজেদের সবল দাবি করে ডুবন্ত পদ্মাকে টেনে তুলতে এগিয়ে আসে এক্সিম ব্যাংক। তখনই বের হয় থলের বিড়াল।

জানা যায়, দেশের বেশ কয়েকটি ব্যাংক মরণাপন্ন। এরপর তারল্য সহায়তাসহ নানা পথ্যে রক্তক্ষরণ বন্ধ হলেও দিন দিন যেন ফুটে উঠছে ব্যাংকগুলোর অব্যবস্থাপনা আর লুটপাটের ক্ষত।

বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, বর্তমানে দুর্বল ব্যাংকগুলো নগদ বা তারল্য সহায়তা দেয়া হচ্ছে। এটা সাময়িকভাবে ব্যাংকগুলোকে টিকে থাকার জন্য, কিন্তু এটি কোনো সমাধান নয়।

মার্কিন ঋণমান যাচাইকারী সংস্থা এসঅ্যান্ডপির রেটিংয়ে দীর্ঘদিন ধরেই উচ্চঝুঁকিতে আছে বাংলাদেশ ব্যাংক। মুডিস, ফিচের রেটিংও প্রায় একই কথা বলছে। ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা ও বিনিয়োগ পরিবেশ কেমন, তা নির্দেশ করে ক্রেডিট রেটিং বা ঋণমান সূচক। মূলত ঋণগ্রহীতা দেশের অর্থ-সম্পত্তি, ঋণ ও ঋণ পরিশোধের ইতিহাসের ওপর ভিত্তি করে দেয়া হয় এই রেটিং।

সংস্থাগুলোর পর্যালোচনা, বাংলাদেশে বৈদেশিক মুদ্রার যে চাহিদা, তা প্রবাসী ও রফতানি আয়ের চেয়ে বেশি। এতে বৈদেশিক লেনদেনে তৈরি হয়েছে ভারসাম্যহীনতা।

ওয়ান ফার্মা লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কে এস এম মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বিদেশি ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য করার আগে দেশের অর্থ পরিশোধ বা পণ্য রফতানির সক্ষমতা যাচাই করবে। সে ক্ষেত্রে তারা বিভিন্ন সংস্থার রেটিংগুলোও পর্যালোচনা করবে।

নেতিবাচক ক্রেডিট রেটিংয়ের প্রভাবে যেমন এলসি খুলতে সমস্যা হচ্ছে, তেমনি প্রভাব পড়ছে বিদেশি বিনিয়োগ বা এফডিএতেও; যা প্রমাণ দিচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংকও। সবশেষ তথ্য, ২০২৩-২৪ অর্থবছর শেষে দেশে বিদেশি বিনিয়োগ এসেছে ১৪৭ কোটি ডলার। এর আগের অর্থবছরে যা ছিল ১৬১ কোটি ডলার। অর্থাৎ বছর ব্যবধানে এফডিএ বিনিয়োগ কমেছে ১৪২ মিলিয়ন ডলার।

মুদ্রা ও রাজস্বনীতি; বিনিয়োগ পরিপন্থি অভিযোগ তুলে ব্যবসায়ীরা বলছেন, নেতিবাচক ঋণমানের প্রভাবে বিদেশি অংশীদারদের বিশ্বস্ততা হারাতে হচ্ছে। নিট শিল্প মালিকদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, নেতিবাচক ঋণমানের প্রভাবে বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের বিশ্বাসযোগ্যতা কমে যাবে। দেশের ট্যাক্সেশন সিস্টেম ও ব্যাংকিং পলিসিগুলো বিদেশি বিনিয়োগকে নিরুৎসাহিত করছে। এসব সংস্কার করতে হবে।

অবস্থার উত্তরণে ব্যাংকের অসুখ সারাতে তারল্য সহায়তা নয়; বরং নিতে হবে প্রতিশ্রুতিমূলক দৃশ্যমান উদ্যোগ নেয়ার পরামর্শ অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন। তিনি বলেন, রেটিং উন্নতি করতে হলে দৃশ্যমান সংস্কার করতে হবে আর্থিক খাতে। ব্যাংকিং খাতের দুর্বলতাগুলোকে চিহ্নিত করে সমাধান করতে হবে।

এদিকে চলমান সামগ্রিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে সামনে ঋণমান আরও বেশি নেতিবাচক হওয়ার আশঙ্কা অর্থনীতিবিদদের।

BBS cable ad

আমদানী/রপ্তানী এর আরও খবর: