শিরোনাম

South east bank ad

বিদেশি ঋণ পরিশোধ ফের শুরু

 প্রকাশ: ১৪ অগাস্ট ২০২৪, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   মন্ত্রনালয়

বিদেশি ঋণ পরিশোধ ফের শুরু

প্রায় দুই সপ্তাহ বিদেশি ঋণের অর্থ পরিশোধ বন্ধ ছিল। মূলত বাংলাদেশ ব্যাংকে অস্থিরতার কারণে পেমেন্ট গেটওয়ে বন্ধ থাকায় উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা ও দেশের ঋণের সুদ ও আসল পরিশোধ করা যায়নি। এই অবস্থায় গত সোমবার দুপুরের পর অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে ঋণ পরিশোধের জন্য নতুন করে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

নতুন নির্দেশনার মাধ্যমে বিদেশি ঋণের সুদ-আসল এবং জ্বালানি তেল ও সারের বিল পরিশোধ আবার নিয়মিত করার উদ্যোগ নেওয়া হলো। ইআরডি সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশকে প্রতিদিন গড়ে সাড়ে তিন কোটি ডলার ঋণ ও বিল পরিশোধ করতে হয়।

ইআরডি সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে বিদেশি সহায়তাপুষ্ট ৩০০-এর বেশি প্রকল্প আছে। এসব প্রকল্পের বেশিরভাগের বিদেশি ঋণের গ্রেস পিরিয়ড এখনও শেষ হয়নি। ফলে আসল পরিশোধ করতে না হলেও এসব ঋণের সুদ পরিশোধ করতে হচ্ছে। অন্যদিকে বিদেশি ঋণ নিয়ে প্রকল্প শেষ করা হয়েছে, এমন প্রায় ৭০০ প্রকল্পের ঋণের সুদ ও আসল পরিশোধ করতে হচ্ছে সরকারকে।

সব মিলিয়ে প্রায় ১ হাজার প্রকল্পের বিপরীতে নেওয়া বিদেশি ঋণের সুদ ও আসল নিয়মিতভাবে পরিশোধ করতে হচ্ছে সরকারকে। ওইসব প্রকল্পের চুক্তির দিন অনুসারে সারা বছরের প্রতিদিনই কোনো না কোনো প্রকল্পের ঋণের অর্থসংশ্লিষ্ট বিদেশি সংস্থা ও দেশের কাছে পাঠাতে হয়। এই অর্থ বাংলাদেশ ব্যাংকের পেমেন্ট গেটওয়ে ব্যবহার করে পাঠানো হয়।

শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে তৈরি হওয়া সহিংসতা ও পরবর্তী সময়ে সরকার পতনের ঘটনায় গত দুই সপ্তাহ ধরে বাংলাদেশ ব্যাংকের পেমেন্ট গেটওয়ে দিয়ে বিদেশি ঋণের অর্থ পাঠানো বন্ধ ছিল। অবশ্য অর্থ মন্ত্রণালয় প্রতিদিনই ঋণের অর্থ পাঠানোর চিঠি ইস্যু করেছে। কিন্তু অর্থ বিদেশে পাঠানো যায়নি। বাংলাদেশে এ ধরনের ঘটনা আগে কখনো ঘটেনি।

ইআরডি সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশকে প্রতিদিন গড়ে ১ কোটি ডলার বিদেশি ঋণ পরিশোধ করতে হয়। অন্যদিকে জ্বালানি তেল, সার এবং তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানির বিল পরিশোধ করতে হয় দৈনিক গড়ে আড়াই কোটি ডলার।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ইআরডির একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ‘বিদেশি ঋণদাতা সংস্থার সঙ্গে আমাদের নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে। তারা বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি বুঝতে পারছে। আমরা কোনো ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হব না।’

এদিকে কয়েক বছর ধরেই বিদেশি ঋণ পরিশোধের চাপ ব্যাপকভাবে বেড়েছে। ইআরডির সংশ্লিষ্ট সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, ২০১২-১৩ অর্থবছরে সব মিলিয়ে ১১০ কোটি ডলার ঋণ পরিশোধ করেছিল বাংলাদেশ। পরের ১০ বছরে; অর্থাৎ ২০২১-২২ অর্থবছরে তা বেড়ে ২০১ কোটি ডলারের উন্নীত হয়। ২০২২-২৩ অর্থবছরে তা পৌনে ৩০০ কোটি ডলারে উন্নীত হয়। বিদায়ি অর্থবছরে বিদেশি ঋণ পরিশোধ বাবদ ৩৩৬ কোটি ডলার খরচ করতে হয়েছে বাংলাদেশকে। এর মানে, গত এক যুগে বিদেশি ঋণ পরিশোধের পরিমাণ বেড়ে তিনগুণ হয়েছে।

এদিকে প্রতি বছর যত অর্থ বিদেশি সহায়তা হিসেবে আসে, তার তিন ভাগের এক ভাগ আগের নেওয়া ঋণ বাবদ পরিশোধ করতে হয়। অবশ্য বাজেটে ঋণ পরিশোধে আলাদা অর্থ বরাদ্দ থাকে। সামনে ঋণ পরিশোধের চাপ আরও বাড়বে বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা মনে করছেন।

BBS cable ad

মন্ত্রনালয় এর আরও খবর: