South east bank ad

ঝালকাঠিতে খোলা বাজারের চাল ও টিসিবি পণ্য কিনতে ক্রেতাদের ভীড়

 প্রকাশ: ১৩ এপ্রিল ২০২১, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   সারাদেশ

ঝালকাঠিতে খোলা বাজারের চাল ও টিসিবি পণ্য কিনতে ক্রেতাদের ভীড়

রাজু খান (ঝালকাঠি) : লকডাউনের ঘোষণায় খোলাবাজারে বিক্রি ওএমএস’র চাল ও টিসিবি পণ্য কিনতে ভীড় জমাচ্ছে ঝালকাঠির নিন্মমধ্যবিত্ত শ্রমজীবী পরিবারের লোকজন। নারী-পুরুষ সমানতালে হুমড়ি খেয়ে পড়ছে বিক্রির স্থানগুলোতে। ওএমএস ডিলার সকালে দোকান খোলার আগে এবং টিসিবির ভ্রাম্যমান পণ্য বিক্রেতার নির্দিষ্ট স্থানে পৌছানোর আগেই উপস্থিত হয়ে লাইন দিয়ে দাড়িয়ে যাচ্ছে দরিদ্র পরিবারের লোকজন। মঙ্গলবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত শহরের বিভিন্ন স্থানে এমন চিত্রই দেখা গেছে।
“ক্ষুধা হবে নিরুদ্দেশ” প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার এই শ্লোগানকে সামনে রেখে সরকার খাদ্য বিভাগের মাধ্যমে সারাদেশে চালু রয়েছে নিম্নবিত্ত, গরীব- দু:খী ও মেহনতী জনতার জন্য ওএমএস এবং ট্রেডিং কপোর্রেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) কর্তৃক পণ্য বিক্রি অর্থাৎ খোলা বাজারে ডিলারদের মাধ্যমে চাল, ডাল, তেল, পিয়াজ, চিনিসহ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য বিক্রি। এতে মৌলমানবিক চাহিদার প্রধানতম নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্যের চাহিদা মেটাচ্ছে মেহনতি পরিবারের লোকজন। ঝালকাঠি পৌর এলাকায় ৯টি ওয়ার্ডে ১০জন ডিলার ওএমএস’র মাধ্যমে এবং ৫ন ডিলার টিসিবি’র পণ্য খোলা বাজারে বিক্রি করছে। এ সব পণ্য কিনতে প্রতিদিনই ডিলারদের দোকানের সামনে থাকে উপচে পড়া মেহনতি জনতার ভিড়। এই ভীড়কে সামাল দিতে খাদ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা ডিলারের মাধ্যমে সুষ্ঠভাবে চাল ও আটা বিক্রির সুব্যবস্থা করেছেন। ফলে চালের বাজার নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি ৩০ টাকা কেজি দরে চাল, ৯০টাকা লিটার সয়াবিন তেল, প্রতিকেজি চিনি ৫০টাকা ও ২০টাকা দরে প্রতিকেজি পিয়াজ কেনার লোকের অভাব নেই।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের খাদ্য মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে খাদ্য অধিদপ্তরের মাধ্যমে সারাদেশে প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে চালু রয়েছে বিশেষ ওএমএস কর্মসূচী। এই বিশেষ ওএমএস এর মাধ্যমে একজন ক্রেতা (কার্ড ধারী) সর্বোচ্চ ৩০ কেজি উন্নতমানের ফ্রেশ চাল (ধান, চিটা, খুদ, পাথর ছাড়া) ক্রয় করতে পারছেন নির্ধারিত ডিলারের কাছ থেকে। এই ৩০ কেজি চালের দাম পড়ছে মাত্র ৩০০ টাকা। অর্থাৎ ১০ টাকা দরে প্রতি কেজি চাল।
পণ্যের মান-গুণগত দিক থেকে অনেকটাই ভালো এবং মান সম্মত বলে জানিয়েছেন ক্রেতারা। শহরের চাঁদকাঠি এলাকার মো. জাহাঙ্গির হোসেন জানান, করোনার এই দুঃসময়ে ৩০টাকা দরে চাল কিনতে পেরে পরিবার-পরিজন নিয়ে দু’বেলা দু’মুঠো ভাত ভালোভাবে খেতে পারছেন। তা না হলে বাজার থেকে ৫০টাকা দরে কেজি চাল কিনে আধাবেলা খেয়ে সময় পার করতে হতো। করোনা মহামারিতে গরীব মানুষের স্বার্থে গ্রহণ করা জননেত্রী শেখ হাসিনার এ উদ্যোগকে কৃতজ্ঞতা জানান দরিদ্র ক্রেতারা।
ঝালকাঠি খাদ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গতবছরের অক্টোবর মাস থেকে ৩০টাকা কেজি দরে চাল বিক্রি শুরু হয়। প্রতিমাসে ওএমএস’র চালের মাধ্যমে অর্ধলক্ষ মানুষের খাদ্য চাহিদা পুরণ করছে জেলা খাদ্য বিভাগ। জেলার ইউনিয়ন পর্যায়ে ১০টাকা কেজি দরে ৩০হাজার ৭৬৪টি পরিবারের জন্য ডিলারের মাধ্যমে ৬৩টি বিক্রয় কেন্দ্র হতে ৫মাস বিক্রি করা হয়। মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে গতবছরে এক মাস অতিরিক্ত সরবরাহ করা হয়েছে। গত সেপ্টেম্বর, অক্টোবর ও নভেম্বর এ তিনমাসে ২কোটি ৭৬লাখ ৭হাজার ১৭০ কেজি চাল বিক্রি করা হয়েছে। স্বাধীনতা ও বঙ্গবন্ধুর জন্মের এ মাসে এ কার্যক্রম পুনরায় চালু হয়েছে যা এপ্রিল মাস পর্যন্ত চলমান। গতবছরের সেপ্টেম্বর মাস থেকে চলতি মাস পর্যন্ত বিভিন্নভাবে যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে পুরাতন জাল কার্ডধারীদের বাদ দিয়ে ৪হাজার ৪শ নতুন কার্ড উপকারভোগীদের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে।
কিফাইতনগর এলাকার ডিলার মো. নাসির উদ্দিন জানান, ওএমএস’র চাল ও আটা কিনতে সকাল হলেই ক্রেতারা লাইনে দাড়িয়ে যান। অল্পমূল্যে ভালোমানের চাল-আটা কিনতে দিনদিন আগ্রহ বাড়ছে। ৩০টাকা দরে চাল ও ১৮টাকা দরে আটা ক্রেতাদের বেশিরভাগই নিম্ন আয়ের শ্রমজীবী মানুষ। পণ্যের চাহিদা ক্রেতাদের কাছে বেশি থাকলেও প্রতিজনকে ৫কেজির বেশি কোন পণ্য দেয়া হচ্ছে না।
ঝালকাঠি জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোহাম্মদ তানভীর হোসেন এবিষয়ে জানান, দরিদ্র ও স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য খাদ্য বান্ধব কর্মসূচীতে ১০টাকা কেজি দরে চাল এবং খোলা বাজারে চাল ও আটা বিক্রির কার্যক্রম সরকার খাদ্য বিভাগের মাধ্যমে পরিচালনা করে থাকে। এক্ষেত্রে সরকারী নিয়মানুযায়ী সবোর্চ্ছ স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে প্রোগ্রামগুলো পরিচালনা করা হচ্ছে। বিক্রি কার্যক্রমে প্রতিটি কেন্দ্রে একজন করে তদারকি কর্মকর্তা সার্বক্ষণিক দেখভাল করছেন। কোন ডিলারের অনিয়ম পরিলক্ষিত হলে তার বিরুদ্ধে দ্রুত বিধিমোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হয়।

BBS cable ad

সারাদেশ এর আরও খবর: