ঝালকাঠিতে ডায়রিয়া আক্রান্ত উর্ধ্বমূখী : ওষুধ-স্যালাইন সংকট

রাজু খান (ঝালকাঠি): তীব্র গরমে ঝালকাঠিতে ডায়রিয়ার প্রকোপ মারাত্মক আকারে দেখা দিয়েছে। গত ১সপ্তাহধরে চার উপজেলায় দুই শতাধিক রোগী ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। আক্রান্তদের বেশির ভাগই মহিলা, শিশু ও বয়স্ক। তবে সরকারি হাসপাতালগুলোতে আইভি (শিরায় দেওয়ার) স্যালাইন সংকট থাকায় বাড়তি বেদনায় পড়েছেন রোগীরা।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ঝালকাঠি সদর হাসপাতাল এবং নলছিটি, রাজাপুর ও কঁাঠালিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গত একসপ্তাহে ২হাজারেরও বেশি লোক ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। রোগী ও তাদের স্বজনদের অভিযোগ, সদর হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে আইভি স্যালাইন নেই। সংকট আছে ডায়রিয়ার জন্য দরকারি অন্যান্য ওষুধপত্রেরও। এমনকি শিশুদের স্যালাইন দেওয়ার ‘ক্যানোলা’ও বাইরে থেকে কিনতে হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন। বলা হচ্ছে, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কেবল খাবার স্যালাইন বিতরণ করছে। তাও চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল, ৩টি চাইলে ১টি পাওয়া যাচ্ছে।
ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ভর্তি সদর উপজেলার রূপসীয়া গ্রামের হেমায়েত আলী হাওলাদারের মেয়ে মনি আক্তার (২৫) বলেন, সকাল থেকে এ পর্যন্ত বাইরে থেকে তিনটি স্যালাইন কিনে আনতে হয়েছে। ‘ডায়রিয়ার স্যালাইন যদি বাইরে থেকে কিনতে হয়, তাহলে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার দরকার কী?’
বাউকাঠি গ্রামের শ্যামল হালদারের স্ত্রী তপতি রানী মিস্ত্রি, বারৈআড়া গ্রামের মীর আবুল হোসেনের ছেলে পারভেজ, শহরের কৃষ্ণকাঠি পেট্রোলপাম্প মোড় এলাকার দুই বছরের শিশু আব্দুল্লাহ, পোনাবারিয়া গ্রামের আব্দুর রব (৪৫), আগরবাড়ি গ্রামের রুস্তম সিকদারের মেয়ে বীথি (১১), মহদিপুর এলাকার সিমা (৩০) ও পোনাবালিয়া গ্রামের রুনু বেগম (৪৭) ডায়রিয়া ওয়ার্ডে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
নলছিটির সারদল গ্রামের মো. মনির হোসেন জানান, তঁার মেয়ে মুনিরা আক্তার ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। ভর্তির পর থেকে মাত্র একটি আইভি স্যালাইন সরবরাহ করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। জানানো হয়েছে, আর স্যালাইন সরবরাহ করা যাবে না।
ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের নার্স পুরবী হালদার বলেন, ‘আমাদের এখানে আইভি ও খাবার স্যালাইনের সংকট রয়েছে। রোগীকে একটির বেশি স্যালাইন দিতে পারছি না।’
ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক আবু জাফর দেওয়ান বলেন, ‘প্রচন্ড গরমে ডায়রিয়ায় আক্রান্তদের চাপ বেড়েছে। আইভি স্যালাইন সংকটের কারণে রোগীদের কষ্ট হচ্ছে। অনেকে অবশ্য বাইরে থেকে কিনে আনছেন। তবে হাসপাতাল থেকে আরো বেশি আইভি স্যালাইন সরবরাহ করা দরকার।’
ঝালকাঠির সিভিল সার্জন ডা. রতন কুমার ঢালী বলেন, ‘তাপদাহের এই সময়ে বেশি করে বিশুদ্ধ পানি ও নিরাপদ খাবার খাওয়া প্রয়োজন। আইভি স্যালাইন সংকটের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আশা করছি অতিদ্রুতই স্যালাইন চলে আসবে।
নলছিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্থানীয় এক বিশিষ্ট ব্যবসায়ী বেশ কিছু স্যালাইন দান করেছেন। তাদিয়ে অন্তত নলছিটির চাহিদা মেটানো কিছুটা হলেও সম্ভব হবে বলেও জানান সিএস