South east bank ad

মুজিববর্ষের নির্মানাধীণ ঘর ভাংচুর করলেন ইউপি চেয়ারম্যান

 প্রকাশ: ০৮ নভেম্বর ২০২২, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   সারাদেশ

মুজিববর্ষের নির্মানাধীণ ঘর ভাংচুর করলেন ইউপি চেয়ারম্যান

বিডিএফএন টোয়েন্টিফোর.কম

মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য চতুর্থ পর্যায়ে ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার মঠবাড়ী ইউনিয়নের রায়মনি গ্রামে নির্মিত হচ্ছে ১৩টি পরিবারের জন্য বাসস্থান ঘর গৃহ নির্মাণ। নিন্মমানের কাজের অভিযোগ তুলে মঙ্গলবার (৮ নভেম্বর) দুপুরে নির্মানাধীণ ঘর ভাংচুর করেন ওই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল কদ্দুস মন্ডল। এ ঘটনায় তাৎক্ষনিক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন জেলা প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ।

সরজমিনে গিয়ে জানাযায়, মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি গৃহহীনদের জন্য ঘর নির্মান প্রকল্পের চতুর্থ পর্যায়ে ত্রিশাল উপজেলায় কাজ চলছে ৩৩টি ঘর নির্মাণের। যার মধ্যে উপজেলার মঠবাড়ী ইউনিয়নের রায়মনি গ্রামে ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের জন্য নির্মিত হচ্ছে ১৩ টি ঘর। বারান্দাসহ দুই রুম বিশিষ্ট প্রতিটি ঘরের জন্য বরাদ্দ অনুয়ায়ি ব্যয় হচ্ছে দুই লাখ ৮৪ হাজার টাকা পাচশত টাকা। সেখানে দেয়া হবে বিদ্যুৎ ও পানি সুবিধা। গত ১৫ সেপ্টেম্বর শুরু হয়েছে এ প্রকল্পের নির্মাণ কাজ যা আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ হওয়ার কথা রয়েছে। এ কাজ বাস্তবায়ন করছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়। 

মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে ওই প্রকল্প এলাকায় যান একই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবদুল কদ্দুস মন্ডল। নিন্মমানের কাজ হচ্ছে এমন অভিযোগ তুলে ইউপি চেয়ারম্যান নির্মাণ শ্রমিকদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ এবং নির্মানাধীণ ওইসব ঘরের লিন্টার, পিলার ও দেয়াল ভাংচুর চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেন নির্মান শ্রমিক ও স্থানীয়রা। এসময় তার সাথে দুজন ইউপি সদস্য ও একজন সংরক্ষিত নারী সদস্য নির্মানাধীন ঘরের বিভিন্ন বিভিন্ন স্থানে ভেঙ্গে ফেলেন। চলে আসার আগে শ্রমিকদের নি¤œমানের কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন। 

ভাংচুরের ঘটনার খবর পেয়ে তাৎক্ষনিক ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ আক্তারুজ্জামান, সহকারী কমিশনার ভূমি হাসান আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহীদ উল্লাহ। পরে বিষয়টি জেলা প্রশাসককে অবহিত করলে বিকেলে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন স্থানীয় সরকার বিভাগ ময়মনসিংহের উপ-পরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম, জেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সানোয়ারুল হক। ঘটনাস্থলে এসে তারা ঘরের বিভিন্ন অংশ ভাঙ্গা ও শ্রমিকরা কাজ বন্ধ রেখে বসে আছে  দেখতে পান।  

নির্মাণ শ্রমিক মোক্তার আকন্দ জানান, দুপুর ১২টার দিকে চেয়ারম্যান সাব আসেন কাজ দেখতে। এসেই তিনি আমাদেরকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করেন। কাজ নিন্মমানের হচ্ছে দাবি করে তার সাথে থাকা লোকজন দিয়ে গতকাল বিকেলে ডালাই করা ওইসব ঘরের লিন্টার, পিলার ও দেয়াল ভেঙ্গে ফেলে। এ সময় তারা বলেন সিমেন্ট ছাড়া দুই নাম্বারী কাজ করতেছ। দুর্নীতি করে সব লোটপাট করে খেয়ে ফেলতেছ। আমি এই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমি না বলা পর্যন্ত তোমরা কাজ করবেনা। আমি কাজ বন্ধ রেখে গেলাম। 

স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী দেলোয়ার হোসেন জানান, আমি এখানেই ফিসারীতে কাজ করছিলাম। আমাদের চেয়ারম্যান সাহেব এসে রাজমিস্ত্রীদের গালিগালাজ করে কাজ বন্ধ করে দেয়। এসময় তার সাথে থাকা অন্যরা গতকাল বিকেলে ডালাই ও ঘাতুনি করা দেয়াল ও লিন্টার ভেঙ্গে ফেলে দেয়। 

মঠবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল কদ্দুছ মন্ডল বলেন, আমার ইউনিয়নে ঘর নির্মান হচ্ছে আমি কিছুই জানিনা। আমি চেয়ারম্যান হিসেবে নির্মান কমিটির সদস্য থাকলেও এ ব্যাপারে কোন কিছু অবহিত করেনি। আজকে দেখতে এসে দেখি কাজ খুবই নিম্ন মানের। হাত দিয়ে ধরলেই ডালাই ভেঙ্গে পরে। আমার সাথে থাকা সদস্যরা ডালাই ও গাতুনি হাত দিয়ে দেখার পরই ঝরে পরে। এজন্য আমি শ্রমিকদের বলেছি আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে কথা বলবো তোমরা এভাবে নিম্নমানের কাজ করোনা। ভাংচুরের কোন ঘটনা ঘটেনি বলে তিনি দাবী করেন। 

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ আক্তারুজ্জামান বলেন, মুজিববর্ষের এই ঘর গুলো নির্মানের ব্যাপারে আমরা ব্যাপক তদারকি করি। উপজেলা প্রকৌশল অফিস ও পিআইও অফিসের দুজন ইঞ্জিনিয়ার সার্বক্ষনিক দায়িত্বে রয়েছে। নিম্নমানের কাজের প্রশ্নই আসেনা। 

তাৎক্ষনিক পরিদর্শনে এসে স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, প্রাথমিকভাবে ঘটনাস্থলে এসে আমরা ভাংচুর পেয়েছি। নিম্নমানের কাজ হলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে আর যদি কেউ ভিন্ন ঘটনা ঘটিয়ে থাকে তদন্ত করে সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া হবে। 

উল্লেখ্য; নির্মান সামগ্রী পরীক্ষা নিরীক্ষার করার জন্য ময়মনসিংহ জেলা প্রকৌশল অধিদপ্তরের ল্যাবে প্রেরণ করেন পরিদর্শনে আসা কর্মকর্তারা। 

BBS cable ad

সারাদেশ এর আরও খবর: