ডিআইজি হাবিবুর রহমান এর জন্মদিন আজ

মানুষ মানুষের জন্য, মাত্র একজন মানুষের আন্তরিক প্রচেষ্টায় বদলে যেতে পারে কোন অবহেলিত জনপদের জীবনযাত্রা। ঘুরে দাঁড়াতে পারে যুব ও তরুণ সমাজ। মহিলারা হতে পারেন স্বাবলম্বী। ইচ্ছা থাকলে নিজ প্রচেষ্টায় কর্মক্ষম মানুষ গাইতে পারে জীবনের জয়গান। বদলে দেয়ার অসাধ্যকে সাধন করেছেন পুলিশের একজন কর্মকর্তা। তার নাম হাবিবুর রহমান, যিনি ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি । পুলিশ নিয়ে অনেকের বিরুপ ধারণা থাকলেও হাবিবুর রহমানের ব্যতিক্রম। তিনি তার আন্তরিকতা ও কর্মের মধ্যদিয়ে পাল্টে দিয়েছেন পুলিশের ভাবমূর্তি। আজ এই মহান মানুষটির জন্মদিন।
করোনা মহামারীকালীন পুরোটা সময় মাটে ময়দানে মানুষের জন্য একটানা কাজ করে যাওয়া হাবিবুুর রহমান নিজেই করোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। মানুষে অনেক অনেক দোয়ায় তিনি সুস্থ হয়ে আবার মানুষের পাশে দাড়িয়েছেন।
হাবিবুর রহমান গোপালগঞ্জের চন্দ্র দিঘলিয়া গ্রামে ১৯৬৭ সালে জন্মগ্রহণ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনিস্টিটিউট থেকে স্নাতকোত্তর হাবিবুর রহমান ১৭তম বিসিএস দিয়ে সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) হিসেবে বাংলাদেশ পুলিশে যোগদানের পর থেকেই কর্মক্ষেত্রে নিজের মেধা ও যোগ্যতার স্বাক্ষর রাখেন। সাহস, সততা, নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার জন্য তিনি তিনবার বাংলাদেশ পুলিশ পদক (বিপিএম) এবং দু’বার রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদকে (পিপিএম) ভূষিত হয়েছেন।
পেশাগত ও মানবিক কাজের বাইরে সফল ক্রীড়া সংগঠক হিসেবে টানা বাংলাদেশ কাবাডি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক এবং এশিয়ান কাবাডি ফেডারেশনের সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন পুলিশের এই কর্মকর্তা।
ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার পদে কাজের সুবাদেই দেশজুড়ে আলোচনায় আসেন এই পুলিশ কর্মকর্তা। সাভারে বেদে পল্লীর সমাজ ব্যবস্থা উন্নয়ন থেকে শুরু করে স্কুল, কম্পিউটার ট্রেনিং সেন্টার, গাড়ি চালনা প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ও বুটিক হাউসসহ নানা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার মাধ্যমে তাদের আত্ন কর্মসংস্থানের পাশাপাশি বেদে পল্লীর অভিশপ্ত বাল্য বিবাহ রোধে তার ভূমিকা প্রশংসিত হয় দেশে-বিদেশে। নিজের প্রতিষ্ঠিত উত্তরন ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে সুবিধা বঞ্চিত ও অবহেলিত পিছিয়ে পড়া হিজড়া জনগোষ্ঠীর জীবন-মান উন্নয়নের লক্ষ্যে ‘উত্তরণ কর্ম-সংস্থান প্রশিক্ষণ’ কর্মসূচি চালু করেন এবং হিজড়া সম্প্রদায়ের জীবনমান উত্তরণ, তাদের পূনর্বাসন ও মানুষ হিসেবে তাদের সামাজিক মর্যাদা সমুন্নত করতে সাড়া জাগানো বেশ কিছু পদক্ষেপ নেন। যে কারণে এই দুই জনগোষ্ঠির কাছে তার পরিচয় মানবতার ফেরিওয়ালা।
সে সময়ে তার উদ্যোগে ঢাকায় প্রতিষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ পুলিশের মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর। রাজারবাগে প্রতিষ্ঠিত এই যাদুঘর ২০১৩ সালের ২৪ মার্চ উন্মুক্ত করে দেয়া হয় সর্বসাধারণের জন্য। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে পুলিশ বাহিনীর অবদান ও ঢাকায় তাদের প্রথম প্রতিরোধ নিয়ে “মুক্তিযুদ্ধে প্রথম প্রতিরোধ” নামের একটি বই-ও লিখেছেন হাবিবুর রহমান।
ঢাকা রেঞ্জ কার্যালয়ে পা রাখতেই পরিবর্তনের দৃশ্যপট। ডিআইজির আগের অফিস কক্ষের ডেকোরেশন ভেঙ্গে আধুনিক ও সুসজ্জিত করা হয়েছে অফিসের পরিবেশ।
‘এই যে পরিবর্তন দেখছেন তা কিন্তু কেবল আমার অফিসেই নয়, এটা ছড়িয়ে পড়বে রেঞ্জের সকল থানায়। পরিবর্তন আসছে সেবার ধরন আর মানসিকতায়। যে পরিবর্তনটা পুলিশের প্রতি আস্থা আরো বাড়িয়ে দেবে। থানায় প্রবেশ করলে ওয়েলকামিং অ্যাপ্রচটাই থাকবে অন্যরকম’ কথাগুলো বলছিলেন ডিআইজি হাবিবুর রহমান, বিপিএম(বার), পিপিএম(বার)। আসলেই করে দেখিয়েছেন তেমন। ঢাকা রেঞ্জের প্রত্যেকটি থানা এখন সিসিটিভি মনিটরিংয়ের আওতায়।
দক্ষতা আর ক্ষিপ্রতায় অন্যরকম এক মানবিক পুলিশ বাহিনী দেখলো বাংলাদেশ। আর এই দৃশ্যমান সবকিছুর অন্যতম পথিকৃৎ ডিআইজি হাবিবুর রহমান, ঢাকা রেঞ্জ।
আপনার মতো বাঙালির জন্ম হোক বারবার এই বাংলায়। শুভ জন্মদিন। বিডিফিন্যান্সিয়ালনিউজ২৪.কম এর সর্বস্তরের সাংবাদিক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীর এর পক্ষ থেকে হাবিবুর রহমান কে জন্মদিনের শুভেচ্ছা।