বিক্রি বাড়া সত্ত্বেও সিঙ্গার বাংলাদেশের লোকসান আরো বেড়েছে

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত সিঙ্গার বাংলাদেশ লিমিটেডের চলতি ২০২৫ হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ) আগের হিসাব বছরের একই সময়ের তুলনায় বিক্রি বেড়েছে ৩৯ শতাংশের বেশি। তবে বিক্রি বাড়লেও এ সময়ে কোম্পানিটির লোকসানের বোঝা আরো বড় হয়েছে। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট লোকসান বেড়েছে প্রায় ১৬ গুণ। কোম্পানিটির চলতি হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
তথ্যানুসারে, চলতি হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকে সিঙ্গার বাংলাদেশের বিক্রি হয়েছে ৫৫৮ কোটি ৯০ লাখ টাকা, আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ৪০১ কোটি ৩০ লাখ টাকা। সে হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির বিক্রি বেড়েছে ১৫৭ কোটি ৬০ লাখ টাকা বা ৩৯ দশমিক ২৭ শতাংশ। আলোচ্য প্রান্তিকে সিঙ্গার বাংলাদেশের কর-পরবর্তী লোকসান হয়েছে ৩৪ কোটি ৮৯ লাখ টাকা, আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যেখানে লোকসান ছিল ২ কোটি ১২ লাখ টাকা। সে হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির নিট লোকসান বেড়েছে ৩২ কোটি ৭৭ লাখ টাকা বা ১৬ দশমিক ৪৬ গুণ।
প্রথম প্রান্তিকে সিঙ্গার বাংলাদেশের শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ৩ টাকা ৫০ পয়সা, আগের হিসাব বছরে যেখানে লোকসান ছিল ২১ পয়সা। ৩১ মার্চ ২০২৫ শেষে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ২১ টাকা ৩১ পয়সায়। কোম্পানির কর্মকর্তারা বলছেন, সুদহার বেড়ে যাওয়া, উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যাওয়া, বিক্রয়মূল্য অপরিবর্তিত রাখা ও মূল্যস্ফীতির কারণে কোম্পানির লোকসান বেড়েছে।
সর্বশেষ ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত ২০২৪ হিসাব বছরে বিনিয়োগকারীদের জন্য ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে কোম্পানিটি। আলোচ্য হিসাব বছরে সিঙ্গার বাংলাদেশের শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ৪ টাকা ৯১ পয়সা, আগের হিসাব বছরে শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) ছিল ৫ টাকা ২৪ পয়সা। ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪ শেষে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ২৫ টাকা ৮১ পয়সায়।
৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত ২০২৩ হিসাব বছরে বিনিয়োগকারীদের ৩৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে কোম্পানিটি। আলোচ্য হিসাব বছরে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ৫ টাকা ২৪ পয়সা, আগের হিসাব বছরে যা ছিল ৭৩ পয়সা। ৩১ ডিসেম্বর ২০২৩ শেষে কোম্পানিটির এনএভিপিএস দাঁড়িয়েছে ৩৪ টাকা ৩ পয়সায়।
৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত ২০২২ হিসাব বছরের জন্য শেয়ারহোল্ডারদের ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে সিঙ্গার বাংলাদেশ। আলোচ্য হিসাব বছরে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ৭৩ পয়সা, আগের হিসাব বছরে যা ছিল ৫ টাকা ২০ পয়সা। ৩১ ডিসেম্বর ২০২২ শেষে কোম্পানিটির এনএভিপিএস দাঁড়ায় ২৯ টাকা ৯৭ পয়সায়।
এর আগে ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত ২০২১ হিসাব বছরের জন্য শেয়ারহোল্ডারদের ৬০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে সিঙ্গার বাংলাদেশের পর্ষদ। ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত ২০২০ হিসাব বছরে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ৩০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল সিঙ্গার বাংলাদেশ।
১৯৮৩ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত সিঙ্গার বাংলাদেশের বর্তমানে অনুমোদিত মূলধন ২৫০ কোটি ও পরিশোধিত মূলধন ৯৯ কোটি ৭০ লাখ ৩০ হাজার টাকা। রিজার্ভে রয়েছে ১৫৫ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। মোট শেয়ার সংখ্যা ৯ কোটি ৯৭ লাখ ২ হাজার ৮৩৮। এর মধ্যে ৫৭ শতাংশ শেয়ার উদ্যোক্তা পরিচালকের হাতে রয়েছে। এছাড়া প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ৩০ দশমিক ১১ শতাংশ, বিদেশী বিনিয়োগকারীদের কাছে দশমিক শূন্য ১ শতাংশ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে বাকি ১২ দশমিক ৮৮ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।
ডিএসইতে গত বৃহস্পতিবার সিঙ্গার বাংলাদেশের শেয়ারের সমাপনী দর ছিল ১০৯ টাকা। গত এক বছরে কোম্পানিটির শেয়ারের সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ দর ছিল যথাক্রমে ৯৬ টাকা ৮০ পয়সা ও ১৫৪ টাকা ৮০ পয়সা।