পরিবর্তনশীল বাণিজ্য পরিবেশে সহনশীলতা গড়ে তুলছে বৈশ্বিক ব্যবসা
বৈশ্বিক বাণিজ্যিক প্রেক্ষাপটের সঙ্গে তাল মিলিয়ে পরিবর্তনশীল বাণিজ্য ও শুল্কনীতির চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো ভিন্ন কৌশল গ্রহণ করছে। পাশাপাশি রয়েছে ঊর্ধ্বমুখী ব্যয় ও ওয়ার্কিং ক্যাপিটালের চাপ। সম্প্রতি প্রকাশিত এইচএসবিসির ‘গ্লোবাল ট্রেড পালস’ শীর্ষক জরিপের প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। চলতি বছরের ৬-২১ অক্টোবর পর্যন্ত জরিপটি পরিচালনা করা হয়। এতে বিশ্বের ১৭টি দেশের ৬ হাজার ৭৫০টি কোম্পানির কাছ থেকে শুল্ক ও বাণিজ্যনীতি সংক্রান্ত ধারণা নেয়া হয়েছে, যার মধ্যে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠান রয়েছে ২৫০টি।
জরিপের তথ্যানুসারে ২০২৫ সালের প্রথমার্ধে অনেক ব্যবসাই প্রতিকূল অবস্থায় কাটিয়েছে, তবে বিশ্বব্যাপী অনেক প্রতিষ্ঠান এখন গতিময়তা ফিরে পেয়েছে এবং বাণিজ্য ও শুল্কনীতি তাদের কাছে স্পষ্ট হতে শুরু করেছে। জরিপের ফলাফলে দেখা যায়, ৬৭ শতাংশ প্রতিষ্ঠান এখন অনুভব করছে, ছয় মাস আগের তুলনায় তারা বাণিজ্য নীতির প্রভাব সম্পর্কে বেশি নিশ্চিত। ৭৭ শতাংশ বলছে, তারা আগের চেয়ে ভালোভাবে এ পরিবর্তন বুঝতে পারছেন।
জরিপে বাংলাদেশের ৮৮ শতাংশ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান জানিয়েছে, তারা বাণিজ্যবিধির পরিবর্তন সম্পর্কে অবগত ও এরই মধ্যে প্রস্তুত অথবা প্রস্তুতি নিচ্ছে, এর বৈশ্বিক গড় ৮৫ শতাংশের চেয়ে সামান্য বেশি। এটি ছয় মাস আগের তুলনায় ৯০ শতাংশের থেকে সামান্য কম।
এখন পর্যন্ত শুল্ক ও বাণিজ্যিক অনিশ্চয়তা থেকে ইতিবাচক প্রভাব হিসেবে আয় বৃদ্ধি হয়েছে বলে জানিয়েছে ৫৮ শতাংশ দেশীয় প্রতিষ্ঠান, যেখানে বৈশ্বিক গড় ৪৭ শতাংশ। এটা আগামী ছয় মাসে ৬২ শতাংশ (বৈশ্বিক ৫৩ শতাংশ) ও আগামী দুই বছরে ৬৪ শতাংশ (বৈশ্বিক ৫৮ শতাংশ) হবে বলে প্রত্যাশা তাদের।
জরিপের তথ্যানুসারে আগামী দুই বছরে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে প্রবৃদ্ধি অর্জন করবে বলে ৫০ শতাংশ বাংলাদেশী ব্যবসায়ীর বিশ্বাস, যার বৈশ্বিক গড় ৪১ শতাংশের চেয়ে বেশি।
বাণিজ্যে প্রতিকূলতা মোকাবেলার জন্য বিকেন্দ্রীকরণ এখন একটি কেন্দ্রীয় কৌশল। বাংলাদেশের ৪৮ শতাংশ ব্যবসায়ী ও সাপ্লাইয়ারদের ক্ষেত্রে এ পন্থা অবলম্বন করছে। ৪৮ শতাংশ ব্যবসা আঞ্চলিকীকরণে ঝুঁকছে ও ৪৬ শতাংশ তাদের মজুদ বৃদ্ধি করছে।
জরিপের তথ্য বলছে, পরিবহন ও শিল্প খাতে ৪৫ শতাংশ বাংলাদেশী ব্যবসা জার্মানিতে বিক্রি বাড়াচ্ছে। এছাড়া টিএমটি খাতে ৪১ শতাংশ যুক্তরাজ্যে ও বি২সি ব্যবসাগুলোর ৪০ শতাংশ ফ্রান্সে বিক্রি বাড়াচ্ছে।
এদিকে বৈশ্বিক অস্থিরতার মধ্যেও বাংলাদেশী ব্যবসায়ীরা নতুন বাণিজ্য করিডোর অনুসন্ধান করছেন, যা তাদের সহনশীলতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করছে বলে জরিপে উঠে এসেছে।


