অভিনয়শিল্পী সংঘের সভাপতি নাসিম, সাধারণ সম্পাদক রওনক
বিডিএফএন টোয়েন্টিফোর.কম
অভিনয়শিল্পী সংঘের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন অভিনেতা আহসান হাবীব নাসিম। গেল দুই মেয়াদে তিনি সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। আর এবার সাধারণ সম্পাদক পদে বিজয়ী হয়েছেন রওনক হাসান।
গতকাল শুক্রবার (২৮ জানুয়ারি) রাতে ফল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার খাইরুল আলম সবুজ। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় সংগীত ও নৃত্যকলা কেন্দ্রে সকাল ৯টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে চলে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত। ত্রি-বার্ষিক (২০২২-২৫) এ নির্বাচনে দিনভর উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে ভোট দিয়েছেন নাট্যাঙ্গনের অভিনেতা-অভিনেত্রীরা।
সহসভাপতির তিনটি পদে এবার জয়ী হয়েছেন- আনিসুর রহমান মিলন, ইকবাল বাবু ও সেলিম মাহবুব। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন নাজনীন হাসান চুমকী ও জামিল হোসেন। এ ছাড়া সাংগঠনিক সম্পাদক পদে সাজু খাদেম, অর্থ সম্পাদকে মুহাম্মদ নূর এ আলম (নয়ন), দপ্তর সম্পাদকে শেখ মেরাজুল ইসলাম, অনুষ্ঠান সম্পাদকে রাশেদ মামুন অপু, আইন ও কল্যাণ সম্পাদকে ঊর্মিলা শ্রাবন্তী কর, প্রচার ও প্রকাশনায় প্রাণ রায়, তথ্য ও প্রযুক্তি সম্পাদকে সুজাত শিমুল নির্বাচিত হয়েছেন। কার্যনির্বাহী সদস্য সাতটি পদে জয়ী হয়েছেন- আইনুন নাহার পুতুল, তানভীর মাসুদ, মাজনুন মিজান, আশরাফুল আশীষ, সূচনা সিকদার, শামস সুমন ও হিমে হাফিজ।
এদিকে অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ, আড্ডা আর খুনসুটির মধ্য দিয়ে উৎসবমুখর পরিবেশে শেষ হয়েছে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির ২০২২-২৪ মেয়াদের দ্বিবার্ষিক নির্বাচন। চলচ্চিত্রের আঁতুড়ঘর বিএফডিসির শিল্পী সমিতির কার্যালয়ে গতকাল সকাল ৯টায় শুরু হয়ে বিকাল ৫টা পর্যন্ত চলে ভোটগ্রহণ। তবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত চলছে ভেট গণনা। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির মোট ভোটার ৪২৮ জন। এর মধ্যে ভোট দিয়েছেন ৩৬৫ সদস্য। এ হিসাবে মোট ভোট পড়েছে ৮৫ দশমিক ২৮ শতাংশ। সংবাদমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার পীরজাদা শহীদুল হারুন।
২১ সদস্যের কমিটির এ নির্বাচনে দুটি প্যানেল এবং দুজন স্বতন্ত্র প্রার্থীসহ ৪৪ চলচ্চিত্র শিল্পী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। মিশা সওদাগর ও জায়েদ খান প্যানেলের বিপরীতে এবার লড়েন ইলিয়াস কাঞ্চন ও নিপুণ। দুই প্যানেলই জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী। ভোটগ্রহণ শেষে দুপক্ষই বলছেÑ ভোটাররা যাকে ভালো মনে করেছে তাকেই ভোট দিয়েছে। ফল যাই হোক, শিল্পী সমিতির উন্নয়নের জন্য কাজ করবেন সবাই মিলেমিশেই। শিল্পী সমিতির মূল লক্ষ্য এফডিসি, চলচ্চিত্র ও শিল্পীদের উন্নয়ন বলে জানান তারা। নির্বাচন প্রসঙ্গে ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, ‘সবকিছুই উৎসবের মতো মনে হচ্ছে। অনেকদিন পর এফডিসি তার প্রাণ ফিরে পেয়েছে।‘ মিশা সওদাগর, ‘আমরা সবাই একই পরিবারের লোক। এখন নির্বাচনে দুই দল, তাই দুই পক্ষ। তবে সাবার জন্যই আমরা শুভকামনা জানাচ্ছি।’
শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট দিতে পেরে স্বস্তি প্রকাশ করেন শিল্পীরাও। এবার ভোটে বিগত বছরগুলোর মতো ছিল না গাদাগাদি। এফডিসিতে প্রবেশ করতে পারেনি সিনেমাসংশ্লিষ্ট ১৭টি সংগঠনের কোনো সদস্যই। এর মধ্যে প্রযোজক ও পরিচালক সমিতি উল্লেখযোগ্য। তাই শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট দিয়ে স্বস্তি প্রকাশ করলেও পরিচালক ও প্রযোজকদের এফডিসিতে প্রবেশে বাধা দেওয়ায় ক্ষোভও জানিয়েছেন শিল্পীরা। বিষয়টি ভালো লাগেনি চিত্রনায়ক আলমগীরের, ‘পরিচালক ও প্রযোজকদের কেন প্রবেশে বাধা থাকবে বুঝলাম না। এটা আমার কাছে খুবই খারাপ লেগেছে।’ আবার এবারের নির্বাচনে শাকিব খান, আরিফিন শুভ, অনন্ত জলিল, পপি, মাহিয়া মাহি, পরীমনি, নুসরাত ফারিয়া ও বর্ষার মতো শীর্ষ তারকারা ভোটই দেননি।
ভোটগ্রহণের সময় অবশ্য সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী জায়েদ খানের বিরুদ্ধে টাকা দিয়ে ভোট কেনার অভিযোগ তোলেন প্রতিদ্বন্দ্বী নিপুন। যদিও বিষয়টি উড়িয়ে দিয়ে জায়েদ খান বলেন, ‘এটা ভিত্তিহীন অভিযোগ। শিল্পীদের টাকা দিয়ে কেনা সম্ভব নয়। তাদের ভালোবাসা দিয়ে কিনেছি। বিগত চার বছর ধরে কাজের মাধ্যমে তাদের ভালোবাসা পেয়ে এসেছি।’
পীরজাদা শহীদুল হারুনের নেতৃত্বে এবার নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব পালন করেন জাহিদ হোসেন ও বজলুর রাশীদ চৌধুরী। এ ছাড়া আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান ছিলেন সোহানুর রহমান সোহান। আর মোহাম্মদ হোসেন জেমী ও মোহাম্মদ হোসেন ছিলেন আপিল বোর্ডের সদস্য।