শিরোনাম

South east bank ad

মহাসড়কে রফতানি পোশাক চুরি ঠেকাতে বিজিএমইএর পাঁচ প্রস্তাব

 প্রকাশ: ০৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৩, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   গার্মেন্টস/টেক্সটাইল

মহাসড়কে রফতানি পোশাক চুরি ঠেকাতে বিজিএমইএর পাঁচ প্রস্তাব

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে পোশাক শিল্পের শত শত কোটি টাকার রফতানিযোগ্য পণ্য পরিবহনের সময় চুরি হয়েছে। এ অভিযোগ তুলে চুরি ঠেকাতে চালক ও হেলপারদের ডাটাবেজ তৈরিসহ পাঁচটি প্রস্তাব জানিয়েছে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)। গতকাল রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়ীতে বিজিএমইএ ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব প্রস্তাব দেন সংগঠনটির সভাপতি ফারুক হাসান

ফারুক হাসান বলেন, ‘ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে পরিবহনকালে পোশাক শিল্পের শত কোটি টাকার রফতানিযোগ্য পণ্য কাভার্ড ভ্যান থেকে চুরি হয়ে যায়। বিষয়টি নিয়ে আমরা দফায় দফায় সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ, বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার প্রধান এবং ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে বৈঠক করেছি, যা জাতীয় দৈনিকগুলোতে প্রকাশিত হয়েছে।’

বিজিএমইএর পাঁচটি প্রস্তাবের মধ্যে রয়েছে, ক) ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের চলমান কাজ দ্রুততম সময়—আগামী মার্চের মধ্যে সম্পন্ন করা। খ) এ ধরনের কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতার করে শাস্তি নিশ্চিত করা। প্রয়োজনে আইন সংশোধন করে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা। গ) কতিপয় নামসর্বস্ব কোম্পানি এসব চুরির মালামাল ক্রয় করে স্টকলট হিসেবে বিভিন্ন দেশে রফতানি করে। স্টকলট রফতানির ক্ষেত্রে মালের উৎস নিশ্চিত করতে হবে। প্রয়োজনে বিজিএমইএ/বিকেএমইএ থেকে সনদপত্র গ্রহণের মাধ্যমে রফতানির অনুমোদন দেয়া যেতে পারে। ঘ) তাদের ধরতে পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দাদেরও কাজে লাগাতে হবে। ঙ) কাভার্ড ভ্যান মালিক সমিতি, ট্রান্সপোর্ট এজেন্সি মালিক সমিতি, কাভার্ড ভ্যান চালক এবং হেলপারদের ডাটাবেজ প্রস্তুত করে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে শেয়ার করার ব্যবস্থা রাখতে হবে।

ফারুক হাসান আরো বলেন, ‘দেশের তৈরি পোশাক খাত যখন বিশ্বের বুকে মর্যাদার আসনে বসেছে, তখন স্থানীয় পর্যায়ে কিছু নৈরাজ্যকর ঘটনা শিল্পের তথা দেশের ভাবমূর্তি মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্ন করছে। পোশাক শিল্পের সফলতাগুলো ম্লান হয়ে যায়, যখন ক্রেতা রফতানীকৃত পণ্য হাতে নেয়ার পর দেখে যে কার্টনে রফতানি মালামালের পরিবর্তে অন্য জিনিস রয়েছে এবং তারা তা আমাদের জানায়। প্রায় দেড় যুগ ধরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রফতানির সময় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে দুই হাজারেরও বেশি কাভার্ড ভ্যান থেকে শত শত কোটি টাকার রফতানীযোগ্য তৈরি পোশাক চুরি করেছে একটি চক্র। গত ২০২২ সালেই প্রায় ২০-২২টি চুরির ঘটনা ঘটেছে।’

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘সারা বিশ্বেই দেখা দিয়েছে মূল্যস্ফীতি। উন্নত দেশগুলোও কৃচ্ছ্রসাধন করছে। সেসব দেশের মানুষও কমিয়ে দিয়েছে কেনাকাটা। তাই পোশাকের অর্ডার কমিয়ে দিয়েছে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো। এ মুহূর্তে পূর্ণ সক্ষমতা ব্যবহার করে কারখানা চালানোর মতো কোনো অর্ডার কোনো কারখানারই কাছে নেই।’ 

ফারুক হাসান আরো বলেন, ‘গত দেড় বছরে সুতার দাম বৃদ্ধি পেয়েছে ৬২ শতাংশ, কনটেইনার ভাড়া বেড়েছে ৩৫০ শতাংশ-৪৫০ শতাংশ, ডাইস ও কেমিক্যালের খরচ বৃদ্ধি ৬০ শতাংশ, গত বছরের শুরুতে মজুরি বৃদ্ধি পেয়েছে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ, গত ৫ বছরে পোশাক শিল্পে উৎপাদন ব্যয় প্রায় ৪০-৪৫ শতাংশ বেড়েছে। কভিডের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে কারখানা পরিচালনায় খরচ আরো বেড়েছে।’ 

তিনি জানান, বিশ্বজুড়ে চলমান জ্বালানি সংকটে স্থানীয় পর্যায়ে বিদ্যুতের অপ্রতুলতার কারণে কারখানাগুলোতে ডিজেল দিয়ে জেনারেটর চালানো হচ্ছে। গত ১২ জানুয়ারি বিদ্যুতের মূল্য ৫ শতাংশ এবং ৩০ জানুয়ারি ৫ শতাংশ করে শুধু জানুয়ারি মাসেই বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে মোট ১০ শতাংশ। গত ১৮ জানুয়ারি গ্যাসের দামও প্রায় আড়াইগুণ বাড়ানো হয়েছে। এতে করে শিল্পে উপাদন ব্যয় বাড়ছে, শিল্পের প্রতিযোগী সক্ষমতা ক্রমবর্ধমানভাবে কমছে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে শিল্পের ব্যয় বৃদ্ধিও এ ভার বহনের সক্ষমতা নেই। 

বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, ‘আমরা বিজিএমইএ থেকে যেটা বলতে চাচ্ছি, তা হচ্ছে আগে যখন বেশি প্রাইস ছিল, সেই সময় গ্যাসের দাম ঠিক করা হয়েছিল। এখন স্পট এলএনজির দামটা অনেক কমেছে। ফলে সরকার এখন যে দামটা ঘোষণা করেছে, তা হিসাব করে দেখলে আরো কমে আসবে।’

সংবাদ সম্মেলনে বিজিএমইএ সভাপতি গ্যাসের দামের পাশাপাশি গ্যাস-বিদ্যুৎ খাতের দুর্নীতি নিয়েও সরব হন। তিনি বলেন, ‘ব্যক্তির দুর্নীতির দায়ভার দিন শেষে সাধারণ ভোক্তাদের ওপর পড়ে। আমাদের যে সিস্টেম লসটা আছে, সেটাকে কমিয়ে জিরোতে আনতে হবে। মিটার রিডিং চুরিতে আমার লোক, তিতাস গ্যাসের লোক বা বিদ্যুতের লোক যারাই জড়িত থাকুক, তাদের চিহ্নিত করা হোক।’

BBS cable ad

গার্মেন্টস/টেক্সটাইল এর আরও খবর: