South east bank ad

বাংলাবান্ধা বন্দরে বাড়ছে পাথর আমদানি, সংকট জায়গার!

 প্রকাশ: ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   আমদানী/রপ্তানী

বাংলাবান্ধা বন্দরে বাড়ছে পাথর আমদানি, সংকট জায়গার!

ভৌগোলিক অবস্থার কারণে ভারত, নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর। বন্দরটি দিয়ে প্রচুর পরিমাণ পাথর আমদানি হয়ে থাকে।
সব সমস্যা কাটিয়ে উঠলেও জায়গা সংকুলান না হওয়ায় সৃষ্টি হচ্ছে যানজট। ব্যবসায়ী ও আমদানিকারকরা বলছেন, জায়গা বৃদ্ধি করা হলে বাড়বে আমদানির পরিমাণ। এতে কয়েকগুণ হাড়ে বাড়বে রাজস্ব আয়।

সরেজমিনে বন্দরটি ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিদিনই ভারতের পাশাপাশি ভুটান থেকে ট্রাক ভর্তি পাথর আমদানি হচ্ছে। তবে গুরুত্বপূর্ণ এই বন্দরে জায়গা সংকুলান থাকায় রাস্তার ওপরেই দীর্ঘ সময় অবস্থান নিয়ে থাকতে দেখা গেছে পাথর ভর্তি ট্রাকগুলোকে।

স্থানীয় ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট দেশের প্রেক্ষাপট পরিবর্তনের পর কাজ থমকে থাকায় দেশের বিভিন্ন এলাকায় পাথরে চাহিদা কমে যায়। এতে করে বন্দরটি দিয়ে পাথর আমদানিও কমে আসে। তবে সময়ের সাথে সাথে বর্তমানে বাড়তে শুরু করেছে আমদানি। প্রতিদিন আমদানি করা আড়াইশ থেকে তিনশ পাথর বোঝাই ট্রাক প্রবেশ করছে বন্দরে। এতে করে ফিরেছে কর্মচাঞ্চল্য।

ব্যবসায়ীরা ও আমদানিকারকরা বলছেন, ৫ আগস্টের পর মাঝখানে একটু সমস্যা দেখা দিয়েছিল। দেশের প্রেক্ষাপটে পাথর বিক্রি হবে কি হবে না। আর এই বন্দরটি পাথরের উপর নির্ভরশীল। পাথরের কাজ যদি না হয় তাহলে কীভাবে আমরা আমদানি করবো। কিছুদিন এই ভয় নিয়ে কম আমদানি করলেও বর্তমানে আবারো পুরো দমে আমদানি শুরু করেছি। নিয়মিত পাথর আমদানি হচ্ছে। তবে বন্দরটিতে জায়গা কম থাকায় বন্দর এলাকাজুড়ে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। যদি দ্রুত এই যানজট সমস্যা নিরসন করা হয় তবে আগামীতে আমদানি আরও বাড়বে বলে মনে করছেন সবাই।

বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, প্রায় ১০ একর জায়গার ওপর গড়ে ওঠা বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরটি দিয়ে, ১৯৯৭ সালে নেপালের সঙ্গে এক বাণিজ্য চুক্তির মাধ্যমে প্রথম আমদানি-রপ্তানি শুরু হয়। পরবর্তীকালে ২০১১ সালে ভারতের সঙ্গে ও ২০১৭ সালে ভুটানের সঙ্গে পণ্য আমদানি-রপ্তানি শুরু হয়। বর্তমানে বন্দরটি দিয়ে প্রতিদিন প্রায় ১০ হাজার মেট্রিক টন পাথর আমদানি হচ্ছে। আমদানির পরিধি বৃদ্ধি পাওয়ায় বন্দরের ৩ লাখ বর্গফুটের ইয়ার্ডে দেখা দিয়েছে জায়গা সংকুলান।

বন্দরের কাস্টমস কর্তৃপক্ষ বলছে, গেল অর্থবছরে (২০২৩-২৪) বন্দরটি দিয়ে ৭৩ কোটি ৬৯ লাখ টাকা রাজস্ব আয় হয়। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩৯ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। আর সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আয় হয়েছে ২০ কোটি ৩০ লাখ টাকা।

বাংলাবান্ধা আমদানি-রপ্তানি গ্রুপের আহ্বায়ক রেজাউল করিম শাহীন বলেন, অতীতে এই বন্দরটিতে অনেক ঘাটতি ছিল, তবে বর্তমানে সব সমস্যা কাটিয়ে বন্দরের কার্যক্রম স্বাভাবিক রয়েছে। আগে ভারত ও ভুটান থেকে যে পরিমাণ পাথর আমদানি হতো এই বন্দরে, বর্তমানে তার থেকে কয়েকগুণ হাড়ে আমদানি বেড়েছে। আমরা সুশৃঙ্খল পরিবেশ বজায় রাখার জন্য আমাদের অবস্থান থেকে আমদানি-রপ্তানি গ্রুপের নেতা, বন্দর সংশ্লিষ্ট ও ব্যবসায়ীরা মিলে সবাই গুরুত্ব সহকারে বন্দরে কাজ করে যাচ্ছি।

এদিকে বাংলাবান্ধা ল্যান্ডপোর্ট লিমিটেডের ম্যানেজার আবুল কালাম আজাদ বলেন, বন্দরের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বর্তমানে স্বাভাবিক রয়েছে। তবে যে সমস্যা রয়েছে সেটি হচ্ছে জায়গার অভাব। এখন যে পরিমাণে পাথর আমদানি হচ্ছে এতে তেমন একটা সমস্যা হচ্ছে না। তবে আগামীতে আমদানি-রপ্তানি বৃদ্ধি পেলে বা যখন বৃদ্ধি পাচ্ছে বন্দরের যে ১০ একর জায়গা রয়েছে সেখানে হয় না। এবং সেটা ম্যানেজ করতেও আমাদের বিভিন্ন সমস্যা হয়। বর্তমানে বন্দরের ৩ লাখ বর্গফুটের ইয়ার্ড আছে। যেটা একটা গুরুত্বপূর্ণ বন্দরের জন্য খুবই কম। আরও সাড়ে ১৬ একর জমি অধিগ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে। আমরা আশা করছি এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে সব সমস্যা কেটে যাবে এবং কার্যক্রম আরও বাড়বে।

BBS cable ad