শিরোনাম

South east bank ad

ব্যর্থতায় রূপ নিতে চলেছে চীনা ঋণের আরেক বৃহৎ প্রকল্প

 প্রকাশ: ২১ জানুয়ারী ২০২৫, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   আমদানী/রপ্তানী

ব্যর্থতায় রূপ নিতে চলেছে চীনা ঋণের আরেক বৃহৎ প্রকল্প

নির্মাণকাজ শেষে দাশেরকান্দি পয়োবর্জ্য শোধনাগার চালু হয় ২০২৩ সালের জুলাইয়ে। চীনা এক্সিম ব্যাংকের ঋণ সহায়তায় বাস্তবায়িত প্রকল্পটিতে ব্যয় হয়েছে ৩ হাজার ৪৮২ কোটি টাকা। প্রকল্পের মোট ব্যয়ের ৭০ শতাংশের কাছাকাছি নির্বাহ হয়েছে এ ঋণ সহায়তার ভিত্তিতে। বিপুল অংকের ঋণে নির্মাণ হলেও দেশে চীনা ঋণে বাস্তবায়িত অন্যান্য প্রকল্পের মতো দাশেরকান্দি প্রকল্পটি থেকেও কাঙ্ক্ষিত সুফল মিলছে না। সংযোগ লাইন নির্মাণ না হওয়ায় এর আওতাভুক্ত এলাকার সিংহভাগেরই পয়োবর্জ্য পরিশোধন করা সম্ভব হচ্ছে না।

ঢাকা ওয়াসা সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম পয়োবর্জ্য পরিশোধনাগারটি আওতাভুক্ত এলাকার মাত্র ২৫ শতাংশের বর্জ্য পরিশোধন করতে পারছে। সে অনুযায়ী, লক্ষ্যমাত্রার অধীন ৭৫ শতাংশ এলাকার পয়োবর্জ্য পরিশোধনে কোনো কাজেই আসছে না এটি।

রাজধানীর পয়োবর্জ্য নিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়নে ২০১৩ সালে একটি মহাপরিকল্পনা তৈরি করে ঢাকা ওয়াসা। এ মহাপরিকল্পনায় ঢাকার আশপাশের নদ-নদীগুলোর দূষণ রোধে পাঁচটি পয়োবর্জ্য পরিশোধনাগার নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এরই অংশ হিসেবে হাতিরঝিল থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে আফতাবনগরের কাছে দাশেরকান্দিতে পরিশোধনাগার প্রকল্পটি হাতে নেয়া হয়। ঢাকা ওয়াসার তথ্য অনুযায়ী, প্রকল্পটিতে চীনা এক্সিম ব্যাংকের কাছ থেকে নেয়া ঋণের পরিমাণ ২ হাজার ৩৬৬ কোটি টাকার সমপরিমাণ। সরকারের ব্যয় হয়েছে ১ হাজার ১০৬ কোটি টাকা। আর ঢাকা ওয়াসার ব্যয় ১০ কোটি। পাঁচ বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ প্রকল্পটির ঋণ পরিশোধের মেয়াদ ধরা হয়েছে ২০ বছর। প্রকল্পের সুদহার ২ শতাংশ। ২০২৭ সালে এ ঋণ পরিশোধ শুরু হওয়ার কথা রয়েছে বলে জানা গেছে।

দেশের প্রথম আধুনিক সুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্লান্ট (এসটিপি) দাশেরকান্দি। আশপাশের মোট ৮০ বর্গকিলোমিটার এলাকার বর্জ্য পরিশোধনের সক্ষমতা রয়েছে এটির। রাজধানীর গুলশান, বনানী, বারিধারা ডিওএইচএস, বসুন্ধরা, বাড্ডা, ভাটারা, বনশ্রী, কুড়িল, সংসদ ভবন এলাকা, শুক্রাবাদ, ফার্মগেট, তেজগাঁও, আফতাবনগর, নিকেতন, সাঁতারকুল ও হাতিরঝিল এলাকার সৃষ্ট পয়োবর্জ্য পরিশোধন করে বালু নদে নিষ্কাশনের মাধ্যমে পানি ও পরিবেশ দূষণ রোধের লক্ষ্যে প্লান্টটি নির্মাণ করা হয়। কিন্তু বর্তমানে ২০ বর্গকিলোমিটারেরও কম এলাকার বর্জ্য পরিশোধন হচ্ছে প্লান্টটির মাধ্যমে। আওতাভুক্ত এলাকাগুলোর পয়োবর্জ্য দাশেরকান্দি পর্যন্ত নেয়ার মতো সংযোগ লাইন নির্মাণ না করায় ৭৫ শতাংশেরও বেশি এলাকার বর্জ্য পরিশোধন করা সম্ভব হচ্ছে না।

বিষয়টি স্বীকার করেছেন ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ফজলুর রহমানও।  তিনি বলেন, ‘‌দাশেরকান্দি প্লান্টের জন্য পৃথক কোনো সংযোগ লাইন নেই। এটাকে পূর্ণমাত্রায় ব্যবহার করার জন্য সংযোগ লাইন নির্মাণের বিষয়ে আমরা উদ্যোগ নিচ্ছি। আর পয়ঃসংযোগ না করেই এত বিপুল বিনিয়োগের প্লান্ট নির্মাণের বিষয়টি নিয়ে পর্যালোচনা চলছে। ‌আমরা পুরো প্রকল্পটিই রিভিউ করছি। এখানে কোথায় কোথায় ঘাটতি আছে সেটা কীভাবে পূরণ করা যায় তা বের করছি।’

ওয়াসার দাবি অনুযায়ী, বর্তমানে কেবল হাতিরঝিলের দুই পাশের এলাকাগুলো থেকে বর্জ্য যাচ্ছে দাশেরকান্দিতে। মগবাজার, ইস্কাটন, নয়াটোলা, মৌচাক, মহানগর হাউজিং, কলাবাগান, ধানমন্ডির একাংশ, তেঁজগাও ও নাখালপাড়া এলাকার পয়োবর্জ্য এখানে পরিশোধন হচ্ছে।

BBS cable ad

আমদানী/রপ্তানী এর আরও খবর: