সর্বনাশের পর রক্তক্ষরণ দেখে শিশুটিকে হত্যা করেন লক্ষ্মণ

বিডিএফএন টোয়েন্টিফোর.কম
সামান্য কিছু টাকা দেওয়ার কথা বলে ফুসলিয়ে শিশু বর্ষাকে মুদির দোকানের গোডাউনে নিয়ে যান কর্মচারী লক্ষ্মণ দাশ। সেখানে মুখ ও নাক চেপে ধরে তাকে ধর্ষণ করেন তিনি। ধর্ষণের ফলে রক্তক্ষরণ হতে থাকলে শ্বাসরোধে করেন হত্যা। পরে বস্তায় ভরে লাশটি ফেলে দেন নালায়।
নিখোঁজের তিনদিন পর বৃহস্পতিবার বিকেলে চট্টগ্রাম নগরের কোতোয়ালি থানার জামালখান এলাকার সিকদার হোটেলের পেছনের নালা থেকে বর্ষার বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করা হয়। এরপর তদন্তে নেমে বৃহস্পতিবার রাতেই একই এলাকার মুদির দোকান শ্যামলী স্টোরের কর্মচারী লক্ষ্মণ দাশকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেন লক্ষ্মণ দাশ।
শুক্রবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান নগর পুলিশের ডিসি (দক্ষিণ) মো. মোস্তাফিজুর রহমান। গ্রেফতার লক্ষ্মণ দাশ লোহাগাড়া উপজেলার পদুয়া ইউনিয়নের উত্তর পদুয়ার মনি মিস্ত্রির বাড়ির ফেলোরাম দাশের ছেলে।
ডিসি বলেন, বর্ষাকে বিভিন্ন সময় দোকান থেকে চিপস, চকলেট দিতেন লক্ষ্মণ দাশ। ঘটনার দিন বিকেলে ১শ’ টাকা দেওয়ার কথা বলে বর্ষাকে দোকানের গোডাউনে নিয়ে যান তিনি। সেখানে মুখ ও নাক চেপে ধরে তাকে ধর্ষণ করেন। ধর্ষণের পর অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ দেখে শ্বাসরোধে হত্যা করে লাশ বস্তায় ভরে নালায় ফেলে দেন। এর কিছুক্ষণ পর বর্ষার পরনের কাপড়চোপড় পেঁয়াজের খোসার বস্তার ভেতর ঢুকিয়ে একই জায়গায় ফেলে দেন। আরো কিছুক্ষণ পর বর্ষার ব্যবহৃত স্যান্ডেলটিও নালায় ফেলে দেন।
ডিসি আরো বলেন, নালা থেকে লাশটি উদ্ধারের পর যখন বস্তা কেটে বের করা হয়, তখন আমাদের নজরে আসে- বস্তায় টিসিবির সিল রয়েছে। সেই সূত্র ধরে টিসিবির সিলযুক্ত বস্তায় মালামাল বিক্রির দোকান ও আশপাশের বিভিন্ন রেস্তোরাঁর গোডাউনে টিসিবির সিলযুক্ত বস্তা খুঁজতে থাকি। একপর্যায়ে শ্যামল স্টোরের গোডাউন চেক করার সময় একটি খালি টিসিবির সিলযুক্ত বস্তা খুঁজে পাওয়া যায়। দোকানের মালিক ও কোন কোন কর্মচারী সেখানে কাজ করে, তাদের বিষয়ে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করি। ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসিটিভির ফুটেজও সংগ্রহ করা হয়। টিসিবির সিলযুক্ত বস্তা ও সিসিটিভির ফুটেজ পর্যালোচনায় আসামি লক্ষ্মণ দাশকে শনাক্ত করি। এরপর জামালখান এলাকার শ্যামল স্টোরের গোডাউনে অভিযান চালিয়ে নৃশংস হত্যাকাণ্ডে জড়িত আসামি লক্ষ্মণ দাশকে গ্রেফতার করা হয়।
মারজানা হক বর্ষা নগরের কুসুমকুমারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রথম শ্রেণিতে পড়তো। বাড়ি চাঁদপুরের শাহরাস্তিতে হলেও বাবা আব্দুল হকের চাকরির সুবাদে জামালখানের সিকদার হোটেলের পাশের একটি বাসায় ভাড়ায় থাকে পরিবার। ছয় বোনের মধ্যে বর্ষা ছিল সবার ছোট।
সোমবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে চিপস কিনতে বাসা থেকে বেরিয়ে দোকানে যায় বর্ষা। যাওয়ার পর আধা ঘণ্টা পার হলেও বাসায় ফেরেনি মেয়েটি। পরে বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করেন স্বজনরা। খোঁজ না পেয়ে থানায় জিডি করেন বর্ষার বোন।