নেটওয়ার্ক ও তরঙ্গে বিনিয়োগ, ধারাবাহিক নেটওয়ার্ক আধুনিকায়নের মাধ্যমে গ্রাহক অভিজ্ঞতা ও ব্যবহার বৃদ্ধিতে ভূমিকা রেখেছে
২০২২ সালের প্রথম ছয় মাসে ৭,৪২১.৮ কোটি টাকা রাজস্ব অর্জন করেছে গ্রামীণফোন। গত বছর একই সময়ের তুলনায় রাজস্ব বৃদ্ধির হার ৫.২ শতাংশ। দ্বিতীয় প্রান্তিকে আরও ৯ লাখ নতুন গ্রাহক গ্রামীণফোন নেটওয়ার্কে যুক্ত হয়েছে, যার ফলে বছরের প্রথমার্ধ শেষে গ্রামীণফোনের গ্রাহক সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮.৪৬ কোটি। গ্রামীণফোনের মোট গ্রাহকের ৫৪.৬ শতাংশ বা ৪.৬২ কোটি গ্রাহক ইন্টারনেট ব্যবহার করেন, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৫.৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
গ্রামীণফোন লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী ইয়াসির আজমান বলেন, ২০২২ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিক বাংলাদেশের জন্য বেশ চ্যালেঞ্জিং সময় ছিলো। এ সময় দেশের উত্তরাঞ্চলে সর্বোচ্চ পরিমাণ বৃষ্টিপাত হয়, যা ভয়াবহ বন্যার সৃষ্টি করে এবং লাখো মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির (বিডিআরসিএস) সাথে পার্টনারশিপের মাধ্যমে আমরা বিনামূল্যে চিকিৎসা পরামর্শ ও স্বাস্থ্যসেবা দেয়ার জন্য মেডিকেল ক্যাম্প চালু করে ক্ষতিগ্রস্ত কমিউনিটির পাশে দাড়িয়েছি। পাশাপাশি, আমরা দুর্যোগকবলিত পরিবারের মাঝে ত্রাণ বিতরণের জন্য একসাথে কাজ করছি। কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা তুলনামূলক কম হওয়ায় এ প্রান্তিকে সামগ্রিক অবস্থার ওপর বৈশ্বিক মহামারির প্রভাব স্থিতিশীল রয়েছে, যার ফলে ধারাবাহিক অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, “নেটওয়ার্ক বিস্তৃতি ও তরঙ্গ ব্যবহারের ক্ষেত্রে আমরা ধারাবাহিকভাবে অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করছি। ২০২২ সালের প্রথমার্ধ শেষে আমাদের মোট ফোরজি সাইটের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৮,৪০০ । নেটওয়ার্ক অভিজ্ঞতার উন্নয়ন ও উদ্ভাবনী পণ্যের কারণে আমাদের গ্রাহক সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে বছরপ্রতি ৩.২ শতাংশ এবং সর্বমোট গ্রাহক সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮.৪৬ কোটিতে। আমাদের ফোরজি ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৩.১৫ কোটি, যা আগের বছরের তুলনায় ৩২.৭ শতাংশ বেশি। গ্রামীণফোন উদ্ভাবন, নেটওয়ার্কের আধুনিকায়ন ও অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে সেবার মান বৃদ্ধিতে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। এজন্য আমরা অনুমোদিত সর্বোচ্চ পরিমাণ তরঙ্গ অধিগ্রহণ করেছি। এ বিনিয়োগের মাধ্যমে সেবার মান শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে গ্রামীণফোন আরও শক্তিশালী অবস্থানে থাকবে এবং বাংলাদেশের ডিজিটালাইজেশনে অবদান রাখবে; পাশাপাশি, শহর ও গ্রামাঞ্চলে উচ্চগতির ইন্টারনেটের ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণে কার্যক্রম অব্যাহত রাখবে।
গ্রামীণফোন লিমিটেডের সিএফও ইয়েন্স বেকার বলেন, “২০২২ সালের প্রথমার্ধে রাজস্ব এবং ইবিআইটিডি প্রবৃদ্ধির ধারাবাহিকতা রয়েছে। প্রথম ছয় মাসে রাজস্ব আয় হয়েছে ৭,৪২১.৮ কোটি টাকা এবং প্রবৃদ্ধির হার ৫.২ শতাংশ। এ বছরের প্রথমার্ধে, গত বছরের তুলনায় আমাদের সাবক্রিপশন ও ট্র্যাফিক রাজস্ব বেড়েছে ৫.৬ শতাংশ । আমাদের পারফরমেন্সের সামগ্রিক উন্নয়নে ইন্টারনেট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের ক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫.৭ শতাংশ এবং ব্যবহারের ক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫২.৯ শতাংশ । বান্ডেলের ব্যবহার গত বছরের চেয়ে ১০০ শতাংশ বৃদ্ধিপেয়েছে।
তিনি বলেন, “প্রথমার্ধে, সামগ্রিক প্রবৃদ্ধির কারণে ইবিআইটিডিএ মার্জিন ৬১.১ শতাংশ নিয়ে ইবিআইটিডিএ বৃদ্ধি পেয়েছে বছরপ্রতি ৩ শতাংশ। ২৩.৩ শতাংশ মার্জিন নিয়ে প্রথমার্ধে কর পরবর্তী মোট মুনাফা দাঁড়িয়েছে ১,৭৩০.৫ কোটি টাকা। আমরা আনন্দিত যে, ২০২১ সালের ১৭ জুলাই অনুষ্ঠিত পর্ষদ সভায় পরিচালনা পর্ষদ আমাদের সম্মানিত শেয়ারহোল্ডারদের জন্য শেয়ার প্রতি ১২.৫ টাকা অভ্যন্তরীণ লভ্যাংশ প্রস্তাব করেছেন।” ২০২২ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকে গ্রামীণফোন লিমিটেড নেটওয়ার্ক কাভারেজে উন্নয়ন ও বিস্তৃতিতে ৫৬০.২ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে। এ প্রান্তিক শেষে, গ্রামীণফোনের মোট সাইটের সংখ্যা দাঁড়িয়েছ ১৯,৪৩৯। ২০২২ সালের প্রথমার্ধে প্রতিষ্ঠানটি কর, ভ্যাট, ডিউটি, ফি, ফোরজি লাইসেন্স এবং তরঙ্গ বরাদ্দ ফি বাবদ ৫,৪৩০ কোটি টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দিয়েছে, যা প্রতিষ্ঠানের মোট রাজস্বের ৭৩.১ শতাংশ।