South east bank ad

কবি শামসুর রাহমানের ৯৩তম জন্মদিন

 প্রকাশ: ২৩ অক্টোবর ২০২১, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   জন্মদিন

স্টাফ রির্পোটার :

আমাদের ছেড়ে চলে গেলেও আজীবন কবিতায় সমর্পিত এ কবি বেঁচে আছেন বাঙালির সত্তায়। তার সৃষ্টি আজও আমাদের উজ্জীবিত করে। বাংলা কবিতায় তিনি নতুন ধারা সৃষ্টি করেছিলেন। উভয় বাংলায় সমকালীন সময়ে অন্যতম কবির মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত হন তিনি।

এ কবির কবিতায় শুধু স্বাধীনতাই নয়, মৌলবাদ, ধর্মান্ধতা, প্রেম, দ্রোহ, বিশ্বজনীনতা সবই উঠে এসেছে। পঞ্চাশ দশক থেকে বাঙালি জাতির নানা সংগ্রাম, মুক্তিযুদ্ধ, সামাজিক জীবনের অসঙ্গতি, ব্রিটিশ ও পশ্চিমাদের শোষণের বিরুদ্ধে তার সোচ্চার কণ্ঠ কবিতায় নির্মিত হয় এক অনন্য বাক-প্রতিমা। এজন্য তাকে স্বাধীনতার কবি হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়।

১৯৬৮ সালের দিকে পাকিস্তানের সব ভাষার জন্য অভিন্ন রোমান হরফ চালু করার প্রস্তাব করেন আইয়ুব খান, যার প্রতিবাদে আগস্টে ৪১ জন কবি, সাংবাদিক, সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবী, শিক্ষক ও সংস্কৃতিকর্মী বিবৃতি দেন যাদের একজন ছিলেন শামসুর রাহমানও। কবি ক্ষুদ্ধ হয়ে লেখেন মর্মস্পর্শী কবিতা ‘বর্ণমালা, আমার দুঃখিনী বর্ণমালা’।

১৯৬৯ সালের ২০ জানুয়ারি গুলিস্তানে একটি মিছিলের সামনে একটি লাঠিতে শহীদ আসাদের রক্তাক্ত শার্ট দিয়ে বানানো পতাকা দেখে মানসিকভাবে মারাত্মক আলোড়িত হন শামসুর রাহমান এবং তিনি লিখেন ‘আসাদের শার্ট’ কবিতাটি।

১৯৭০ সালের ২৮ নভেম্বর ঘূর্ণিদুর্গত দক্ষিণাঞ্চলের লাখ লাখ মানুষের দুঃখ-দুর্দশায় ও মৃত্যুতে কাতর কবি লেখেন ‘আসুন আমরা আজ ও একজন জেলে’ নামক কবিতা। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পরিবার নিয়ে চলে যান নরসিংদীর পাড়াতলী গ্রামে। এপ্রিলের প্রথম দিকে তিনি লেখেন যুদ্ধের ধ্বংসলীলায় আক্রান্ত ও বেদনামথিত কবিতা ‘স্বাধীনতা তুমি’ ও ‘তোমাকে পাওয়ার জন্য হে স্বাধীনতা’।

শামসুর রাহমান ১৯৮৭ সালে এরশাদের স্বৈরশাসনের প্রতিবাদে দৈনিক বাংলার প্রধান সম্পাদকের পদ থেকে পদত্যাগ করেন। তিনি ১৯৮৭ থেকে পরবর্তী চার বছরের প্রথম বছরে ‘শৃঙ্খল মুক্তির কবিতা’, দ্বিতীয় বছরে ‘স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে কবিতা’, তৃতীয় বছরে ‘সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে কবিতা’ এবং চতুর্থ বছরে ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কবিতা’ লেখেন।

কবি শামসুর রাহমানের পৈতৃক নিবাস বর্তমান নরসিংদী জেলায়। দীর্ঘ ৭৭ বছরের বর্ণময় জীবনে তিনি নিমগ্ন ছিলেন কবিতা সৃজনের মোহে ও অনুরাগে। তিনি একাধারে কবি, সাংবাদিক, প্রাবন্ধিক, ঔপন্যাসিক, কলামিস্ট, অনুবাদক ও গীতিকার।

লেখালেখির জন্য তিনি পেয়েছেন- একুশে পদক, স্বাধীনতা পদক, বাংলা একাডেমি পুরস্কার, আদমজী সাহিত্য পুরস্কার, নাসির উদ্দিন স্বর্ণপদক, জীবনানন্দ পুরস্কার, আবুল মনসুর আহমেদ স্মৃতি পুরস্কার, মিতসুবিসি পুরস্কার (সাংবাদিতার জন্য) ও আনন্দ পুরস্কার।

এছাড়া ভারতের যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় এবং রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কবি শামসুর রাহমানকে সম্মানসূচক ডি.লিট উপাধিতে ভূষিত করে।

দিনটি উপলক্ষে বাংলা একাডেমি, জাতীয় কবিতা পরিষদ এবং শামসুর রাহমান স্মৃতি পরিষদের উদ্যোগে নানা আয়োজন করা হয়েছে।

BBS cable ad

জন্মদিন এর আরও খবর: