এবি ব্যাংকের ১ হাজার ৭৫৮ কোটি টাকা নিট লোকসান

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত এবি ব্যাংক পিএলসির চলতি ২০২৫ হিসাব বছরের প্রথমার্ধে (জানুয়ারি-জুন) ১ হাজার ৭৫৮ কোটি টাকা কর-পরবর্তী নিট লোকসান হয়েছে। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে ১৪ কোটি টাকার কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছিল ব্যাংকটির। চলতি হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ) ব্যাংকটির ২৫৫ কোটি টাকা নিট লোকসান হয়েছিল। ব্যাংকটির অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
গত বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত সভায় চলতি ২০২৫ হিসাব বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকের (এপ্রিল-জুন) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুমোদন করেছে এবি ব্যাংকের পর্ষদ। প্রতিবেদন অনুসারে, চলতি হিসাব বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে ব্যাংকটির ১ হাজার ৫০২ কোটি টাকা কর-পরবর্তী নিট লোকসান হয়েছে। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে ৩ কোটি ৭৪ লাখ টাকা কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছিল। দ্বিতীয় প্রান্তিকে ব্যাংকটির শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ১৬ টাকা ৭৮ পয়সা। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছিল ৪ পয়সা। গত ৩০ জুন শেষে ব্যাংকটির শেয়ারপ্রতি নিট দায় দাঁড়িয়েছে ১২ টাকা ৩৩ পয়সায়।
সর্বশেষ সমাপ্ত ২০২৪ হিসাব বছরে বিনিয়োগকারীদের জন্য কোনো লভ্যাংশ সুপারিশ করেনি এবি ব্যাংকের পর্ষদ। আলোচ্য হিসাব বছরে ব্যাংকটির শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ২১ টাকা ২৮ পয়সা। আগের হিসাব বছরে ইপিএস হয়েছিল ১ টাকা। ঘোষিত লভ্যাংশ ও অন্যান্য এজেন্ডায় বিনিয়োগকারীদের অনুমোদন নিতে ৫ আগস্ট সকাল ১০টায় হাইব্রিড সিস্টেমে বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) আহ্বান করা হয়েছে।
৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত ২০২৩ হিসাব বছরে বিনিয়োগকারীদের ২ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ দিয়েছে ব্যাংকটির পর্ষদ। আলোচ্য হিসাব বছরে এবি ব্যাংকের ইপিএস হয়েছে ১ টাকা ২ পয়সা, আগের হিসাব বছরে যা ছিল ৮১ পয়সা (পুনর্মূল্যায়িত)। ৩১ ডিসেম্বর ২০২৩ শেষে ব্যাংকটির শেয়ারপ্রতি সমন্বিত নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ২৯ টাকা ৫৮ পয়সায়।
৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত ২০২২ হিসাব বছরে বিনিয়োগকারীদের ২ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ দিয়েছে এবি ব্যাংক। আলোচ্য হিসাব বছরে ব্যাংকটির ইপিএস ৮৩ পয়সা, আগের হিসাব বছরে যা ছিল ৮৬ পয়সা। ৩১ ডিসেম্বর ২০২২ শেষে ব্যাংকটির এনএভিপিএস দাঁড়িয়েছে ২৯ টাকা ৯২ পয়সায়।
এবি ব্যাংকের ঋণমান দীর্ঘমেয়াদে ‘এ মাইনাস’ ও স্বল্পমেয়াদে ‘এসটি টু’। ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত ২০২৪ হিসাব বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন, ৩১ মার্চ ২০২৫ পর্যন্ত অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন এবং রেটিং ঘোষণার দিন পর্যন্ত প্রাসঙ্গিক অন্যান্য গুণগত ও পরিমাণগত তথ্যের ওপর ভিত্তি করে এ প্রত্যয়ন করেছে আরগুস ক্রেডিট রেটিং সার্ভিসেস লিমিটেড (এসিআরএসএল)।
১৯৮৩ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত এবি ব্যাংকের অনুমোদিত মূলধন ১ হাজার ৫০০ কোটি ও পরিশোধিত মূলধন ৮৯৫ কোটি ৬৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা। রিজার্ভে রয়েছে ১ হাজার ৭০১ কোটি ৭০ লাখ টাকা। মোট শেয়ার সংখ্যা ৮৯ কোটি ৫৬ লাখ ৯৪ হাজার ৭৪৯। এর মধ্যে ৩১ দশমিক ২১ শতাংশ রয়েছে উদ্যোক্তা পরিচালকদের হাতে। এছাড়া দশমিক ৫৭ শতাংশ সরকার, ২২ দশমিক ৬৪ শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী, দশমিক ৫৪ শতাংশ বিদেশী বিনিয়োগকারী ও বাকি ৪৫ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ শেয়ার সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) এবি ব্যাংকের শেয়ার সর্বশেষ ৭ টাকা ১০ পয়সায় লেনদেন হয়েছে। গত এক বছরে শেয়ারটির দর ৫ টাকা ৫০ থেকে ১২ টাকা ৩০ পয়সার মধ্যে ওঠানামা করেছে।