শিরোনাম

South east bank ad

শ্রমিক আন্দোলনের নামে বিশৃঙ্খলা করছে বহিরাগতরা

 প্রকাশ: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   গার্মেন্টস/টেক্সটাইল

শ্রমিক আন্দোলনের নামে বিশৃঙ্খলা করছে বহিরাগতরা

জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি আমিরুল হক আমিন বলেছেন, শিল্পাঞ্চল এলাকায় শ্রমিক আন্দোলনের নামে বিশৃঙ্খলা করছে বহিরাগতরা। উসকানি দিয়ে কারখানা থেকে শ্রমিকদের বের করে দিচ্ছে, কারখানা বন্ধ করে দিচ্ছে।

এ সময় শিল্পাঞ্চল এলাকায় এ অসন্তোষের পেছনে জুট ব্যবসায়ীরাও রয়েছে বলে দাবি করেন এ নেতা।

রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হল রুমে আয়োজিত জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের ৮ জন সদস্যসহ ছাত্র-শ্রমিক গণঅভ্যুত্থানে নিহত ১১ গার্মেন্টস শ্রমিক এবং ৮ শতাধিক গণহত্যার বিচার, খুনিদের শাস্তি, নিহতদের ক্ষতিপূরণ এবং পুনঃর্বাসনের দাবিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন আমিরুল হক আমিন ।

সংবাদ সম্মেলনে শুরুতে জুলাই বিপ্লবের সব শহিদদের রুহের মাগফেরাত কামনায় এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে ফেডারেশনের সভাপতি আমিরুল হক আমিন লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ২ সেপ্টেম্বর থেকে শ্রমিক অসন্তোষ চলছে। মজুরি বৃদ্ধি, হাজিরা বোনাস বৃদ্ধি, শ্রমিক ছাটাই বন্ধ, নিয়োগে নারী-পুরুষ বৈষম্য, আন্দোকারী শ্রমিকদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না নেয়াসহ বিভিন্ন দাবিতে আশুলিয়া, গাজীপুর, টঙ্গী, কালিয়াকৈর, চন্দ্রা, নরসিংদী ও নারায়নগঞ্জ শিল্পাঞ্চলে শ্রমিকেরা আন্দোলন করছে। কোথাও কোথাও কারখানা ভাঙচুর, জ্বালাও-পোড়াও ও হামলার ঘটনা ঘটেছে।

তিনি আরো বলেন,  আমরা দেখেছি শিল্পাঞ্চল এলাকায় শ্রমিক আন্দোলনের নামে বিশৃঙ্খলা করছে বহিরাগতরা। উসকানি দিয়ে কারখানা থেকে শ্রমিকদের বের করে দিচ্ছে, কারখানা বন্ধ করে দিচ্ছে আমরা এই ধরনের ঘটনার তিব্র নিন্দা জানাই। অসন্তোষ এর পেছনে জুট ব্যবসায়ীরাও রয়েছে।

এ সময় তিনি আরো বলেন, বিভিন্ন স্থানের ভিডিও ফুটেজ এবং সরেজমিন যাচাই করে ভাঙচুরের পেছনে এলাকার ভাড়াটেদেরও দেখা গেছে।

তিনি গার্মেন্টস শ্রমিকদের উদ্দেশ্য করে বলেন, আমরা গার্মেন্টস শ্রমিক ভাই-বোনদের ভাঙচুর, জ্বালাও-পোড়াও, সহিংসতা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানাচ্ছি। এগুলো সমস্যা সমাধানের পথ নয়, শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি-দাওয়া থাকলে তা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করার ব্যাপারে জোর দেন এ শ্রমিক নেতা।

এ সময় অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের কাছে নিহত ৮ শ্রমিক পরিবার ও গার্মেন্টস শ্রমিকদের ১৫ দফা দাবি পেশ করা হয়।

দাবিসমূহ হলো-

১. অবিলম্বে জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের ৮ সদস্যসহ ১১ জন গার্মেন্টস শ্রমিক ও সব শ্রমিক হত্যার বিচার, দায়ীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

২. ফেডারেশনের নিহত ৮ সদস্যের পরিবার ও সব শ্রমিক পরিবারকে পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ প্রদান এবং পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে।

৩. ফেডারেশনের আহত ৫০ সদস্যসহ সব আহত শ্রমিকের প্রয়োজনীয় এবং উচ্চতর চিকিৎসা ও ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করতে হবে।

৪. গত মজুরি আন্দোলনে ২০ হাজার গার্মেন্টস শ্রমিকের নামে দায়েরকৃত ৪৩টি-সহ শ্রমিকদের নামে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে।

৫. প্রত্যেক কারখানায় ৭ কর্ম দিবসের মধ্যে বেতন-ভাতা পরিশোধ করতে হবে।

৬. যেসব কারখানার শ্রমিকরা ইতোমধ্যে মিড-লেভেল ম্যানেজমেন্টের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে, তদন্তসাপেক্ষ তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

৭. বে-আইনিভাবে শ্রমিকদের ব্ল্যাক লিস্ট (কালো তালিকা) করা বন্ধ করতে হবে। আগের কালো তালিকা বাতিল করতে হবে।

৮. গার্মেন্টস শিল্পে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টিকারী বহিরাগতদের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনতে হবে।

৯. শ্রমিক সংগঠনগুলোকে স্বাধীনভাবে কাজ করার ক্ষেত্রে সব বাধা দূর করতে হবে।

১০. কর্মক্ষেত্রে নারী-পুরুষের বৈষম্য দূর করতে হবে।

১১. ট্রেড ইউনিয়ন গঠন এবং পরিচালনায় সব বাধা দূর করতে হবে।

১২. ৪২ লাখ গার্মেন্টস শ্রমিকসহ নিম্ন আয়ের শ্রমিকদের জন্য অবিলম্বে রেশনিং ব্যবস্থা চালু করতে হবে।

১৩. কোনও কারখানায় অসন্তোষ দেখা দিলে শ্রমিক প্রতিনিধিদেরসহ দ্রুত সামাধান করতে হবে।

১৪. দ্রুত সময়ের মধ্যে শ্রম আদালতের মামলা নিষ্পত্তি করতে হবে।

১৫. আইএলও কনভেনশন ৮৭ ও ৯৮ এর আলোকে বাংলাদেশে বর্তমানে প্রচলিত শ্রম আইন ও শ্রম বিধিমালাকে সংস্কার করতে হবে।

BBS cable ad

গার্মেন্টস/টেক্সটাইল এর আরও খবর: