শিরোনাম

South east bank ad

হিলি স্থলবন্দরে রাজস্ব ঘাটতি ২০ কোটি ৭৬ লাখ টাকা

 প্রকাশ: ২৬ জুলাই ২০২৫, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   আমদানী/রপ্তানী

হিলি স্থলবন্দরে রাজস্ব ঘাটতি ২০ কোটি ৭৬ লাখ টাকা

গত ২০২৪-২৫ অর্থবছরে দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর থেকে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭৪০ কোটি ৯ লাখ টাকা। এর বিপরীতে আদায় হয়েছে ৭১৯ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। এ হিসেবে রাজস্ব ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২০ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। তবে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন না হলেও আগের অর্থবছরের চেয়ে রাজস্ব আহরণ বেড়েছে ৭৭ কোটি টাকা। এর আগে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের রাজস্ব আদায় হয়েছিল ৬৪২ কোটি টাকা।

কাস্টমস কর্তৃপক্ষ দাবি করছে, ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের অবনতির কারণে পণ্য আমদানি হ্রাস পেয়ে রাজস্ব আহরণ কমেছে। তবে আমদানিকারক ও সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টরা বলছেন, বন্দরে বিরাজমান কিছু জটিলতার কারণে শুল্কযুক্ত পণ্যের আমদানি কমায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

হিলি স্থল শুল্ক স্টেশন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে এনবিআর কর্তৃক রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ৭৪০ কোটি ৯ লাখ টাকা। এ হিসেবে গত জুলাইয়ে ৪৫ কোটি ৯ লাখ টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আহরণ হয়েছে ৪৫ কোটি ৭৬ লাখ, আগস্টে ৬০ কোটি ৮৯ লাখ টাকার বিপরীতে ৫৮ কোটি ৩৯ লাখ, সেপ্টেম্বরে ৫৯ কোটি ৬৬ লাখ টাকার বিপরীতে ৫৫ কোটি ৭ লাখ, অক্টোবরে ৬২ কোটি ৬৫ লাখ টাকার বিপরীতে ৬১ কোটি ৮৯ লাখ, নভেম্বরে ৬৫ কোটি ১৯ লাখ টাকার বিপরীতে ৪৩ কোটি ৮৯ লাখ এবং ডিসেম্বরে ৬৯ কোটি ২১ লাখ টাকার বিপরীতে আহরণ হয়েছে ৫৩ কোটি ৫৬ লাখ টাকা।

চলতি বছরের জানুয়ারিতে ৬৭ কোটি ৮৫ লাখ টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আহরণ হয় ৪৯ কোটি ৩১ লাখ, ফেব্রুয়ারিতে ৫১ কোটি ৬১ লাখ টাকার বিপরীতে ৭০ কোটি ২ লাখ, মার্চে ৭৬ কোটি ৩০ লাখ টাকার বিপরীতে ৯৫ কোটি ৭৭ লাখ, এপ্রিলে ৬৯ কোটি ৮৩ লাখ টাকার বিপরীতে ৪৭ কোটি ৮৬ লাখ, মে মাসে ৪৯ কোটি ১৩ লাখ টাকার বিপরীতে ১০১ কোটি ৮২ লাখ এবং জুনে ৬২ কোটি ৬৮ লাখ টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আহরণ হয়েছে ৩৭ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। সব মিলিয়ে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে রাজস্ব আহরণ হয়েছে ৭১৯ কোটি ৩৩ লাখ টাকা।

হিলি স্থলবন্দরের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট রাশেদুল ইসলাম বলেন, ‘আগে এ স্থলবন্দর দিয়ে প্রতিদিন ১৫০-২০০ ট্রাক বিভিন্ন ধরনের পণ্য আমদানি হতো। এখন তা কমে গিয়ে ১৫ থেকে সর্বোচ্চ ৩০ ট্রাক পণ্য আমদানি হচ্ছে।’

এক সময় হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পাথর, পেঁয়াজ, চাল, ডাল, খৈল, ভুসিসহ বিভিন্ন ধরনের বিপুল পরিমাণ পণ্য আমদানি হলেও বর্তমানে সীমিত হয়ে পড়েছে। এ প্রসঙ্গে এ ব্যবসায়ী বলেন, ‘আমদানিকারকরা এ বন্দর দিয়ে পণ্য আমদানি করতে উৎসাহ পাচ্ছেন না, তারা অন্য বন্দর ব্যবহার করছেন। আর বন্দর দিয়ে আমদানি কমে গেলে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে না, এটাই তো স্বাভাবিক।’

হিলি স্থলবন্দরের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট জাবেদ হোসেন বলেন, ‘এ বন্দর দিয়ে আগে যেসব পণ্য আমদানি হতো, বর্তমানে বাড়তি কিছু সুবিধার জন্য ব্যবসায়ীরা সোনামসজিদ বা ভোমরা স্থলবন্দর ব্যবহার করছেন। বিশেষত হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে শতভাগ শুল্ক পরিশোধ করতে হয় আমদানিকারকদের। এতে করে এ স্থলবন্দর দিয়ে জিরাসহ অন্যান্য পণ্যের আমদানি হ্রাস পেয়ে রাজস্ব আহরণে ঘাটতি দেখা দিয়েছে।’

রাজস্ব আহরণে ঘাটতি প্রসঙ্গে হিলি কাস্টমস সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ফেরদৌস রহমান বলেন, ‘ভারত-পাকিস্তান সংঘাতকালে আমদানি-রফতানির যে পরিবেশ থাকার কথা ছিল সেটি স্বাভাবিক ছিল না। ফলে বন্দর দিয়ে ওই সময়ে পণ্য আমদানির পরিমাণ কিছুটা কম ছিল। এছাড়া এ বন্দর দিয়ে আগে ব্যাপক পরিমাণে পাথর আমদানি হতো, যা থেকে বিপুল রাজস্ব পেত সরকার। কিন্তু বন্দরের অব্যবস্থাপনার কারণে পাথর আমদানি একেবারে বন্ধ হয়ে গেছে। পাশাপাশি এ বন্দর দিয়ে যেসব পণ্য আসার কথা সেগুলো আসছে না। এছাড়া গত বছরের জুলাই-আগস্টে সংঘটিত গণ-অভ্যুত্থানের প্রভাব তো রয়েছেই।’

এদিকে হিলি স্থলবন্দরের আমদানিকারক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘যেসব পণ্যের ওপর বাড়তি শুল্ক রয়েছে, সেগুলো হিলি স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি করার খালাস করতে অনেক বিড়ম্বনার মধ্যে পড়তে হয়। এ কারণে অনেক আমদানিকারক এ বন্দর ব্যবহার বাদ দিয়ে অন্য বন্দর দিয়ে আমদানি করছেন। রাজস্ব কমার পেছনে এটিও একটি কারণ।’

তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘এখানে যেসব কাস্টমস কর্মকর্তা রয়েছেন তারা সহজে একটি পণ্যকে খালাস দিতে চান না। দেখা যাচ্ছে, আমি একটি পণ্য যে এইচএস কোডে আমদানি করেছি, উনারা (কর্মকর্তা) বলেন, এটি এ কোডে যাবে না। রেফারেন্স পেপার সাবমিট করলাম তারপরও দেখা যাচ্ছে, যে কোডে উচ্চশুল্ক রয়েছে, সেই কোড ব্যবহার করে পণ্যের শুল্ক পরিশোধ করতে হচ্ছে।’

BBS cable ad

আমদানী/রপ্তানী এর আরও খবর: