বন্দরে নতুন ট্যারিফ আজ থেকে, ক্ষুব্ধ ব্যবসায়ীরা

ব্যবসায়ীদের বিরোধিতার মুখে আজ থেকে কার্যকর হচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দরের নতুন ট্যারিফ কাঠামো। এর ফলে দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দরের সেবা পেতে ব্যবহারকারীদের দিতে হবে গড়ে আগের চেয়ে ৪১ শতাংশ বেশি চার্জ। নতুন ট্যারিফ কার্যকরের বিষয়টি নিশ্চিত করে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক বলেন, আগেই এ ব্যাপারে বন্দরের পক্ষ থেকে ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল।
এদিকে বর্ধিত ট্যারিফ কার্যকর না করতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে গতকাল চিঠি পাঠিয়েছে বন্দর ব্যবহারকারীদের সংগঠন চট্টগ্রাম পোর্ট ইউজার্স ফোরাম।
এতে তিন দফা প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। ফোরামের আহ্বায়ক আমীর হুমায়ুন মাহমুদ চৌধুরীর সই করা চিঠিতে প্রস্তাবের মধ্যে রয়েছে- নতুন ট্যারিফ বাস্তবায়ন আপাতত স্থগিত রেখে বিষয়টি পুনর্বিবেচনার জন্য একটি সময়োপযোগী পর্যালোচনার উদ্যোগ গ্রহণ করা। স্থানীয় শিপিং এজেন্ট, আমদানি-রপ্তানিকারক, জাহাজ মালিক ও ব্যবসায়ী সংগঠনসহ সংশ্লিষ্ট সব অংশীজনের সঙ্গে পরামর্শক্রমে যৌক্তিক ও বাস্তবভিত্তিক ট্যারিফ কাঠামো নির্ধারণ করা। বন্দরের কাঠামোগত উন্নয়ন ও পরিচালনার ক্ষেত্রে সেবা-ভিত্তিক এবং অলাভজনক দৃষ্টিভঙ্গি বজায় রাখা।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম পোর্ট ইউজার্স ফোরামের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও এফবিসিসিআইর সাবেক পরিচালক আমিরুল হক বলেন, প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরে চিঠিটি পাঠানো হয়েছে। আমরা আশা করছি তিনি বিদেশ থেকে ফিরে এসে এ নিয়ে একটি কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। প্রধান উপদেষ্টার কাছে পাঠানো চিঠিতে আরও বলা হয়, ট্যারিফ বৃদ্ধির ফলে আন্তর্জাতিক অংশীদারদের মধ্যে আস্থা হ্রাস পাবে এবং চট্টগ্রাম বন্দর আন্তর্জাতিকভাবে একটি অনিশ্চিত ও ব্যয়বহুল গন্তব্য হিসেবে চিহ্নিত হবে। নতুন ট্যারিফ অনুযায়ী জাহাজ ও লজিস্টিকস সেবার ওপর গড় বৃদ্ধির হার ৪১ শতাংশ।
যা দেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের জন্য এক গুরুতর উদ্বেগের কারণ। বড় পরিসরের ট্যারিফ আমদানি-রপ্তানি ব্যয় বহুলাংশে বাড়িয়ে দেবে। বিশেষ করে রপ্তানি খাতের জন্য এ সিদ্ধান্ত আত্মঘাতী। ট্যারিফ বৃদ্ধির নেতিবাচক দিকগুলো তুলে ধরে চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, রপ্তানি পণ্যের ক্ষেত্রে কনটেইনার হ্যান্ডলিং, স্টোরেজ এবং পরিবহন ব্যয় বাড়বে যার ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ার ঝুঁকি থাকবে। আমদানি পণ্য বিশেষ করে জ্বালানি, গম, সার ও শিল্পের কাঁচামালের ব্যয় বাড়বে।
এর প্রত্যক্ষ প্রভাব দেশের মূল্যস্ফীতির ওপর পড়বে। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক শিপিং কমিউনিটির মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দরের গ্রহণযোগ্যতা ও আস্থা কমে যাবে।