কম্বোডিয়ায় পাঠিয়ে জিম্মি করে মুক্তিপণ আদায়, গ্রেপ্তার ২

বিডিএফএন টোয়েন্টিফোর.কম
লাখ টাকা বেতনের চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায় ইশরাক শাহারিয়ার জয় নামে এক যুবককে কম্বোডিয়ায় পাঠায় একই উপজেলার মানব পাচারকারী একটি চক্র। কিন্তু লাখ টাকা বেতন তো দূরের কথা উল্টা তাকে জিম্মি করে, অমানবিক নির্যাতন চালিয়ে আট লাখ টাকা মুক্তিপণ নেয় চক্রটি। শেষমেষ বিদেশি দূতাবাসের সহায়তায় দেশে ফেরত আসেন ওই যুবক। এ ঘটনায় অভিযান চালিয়ে ওই চক্রের মূলহোতাসহ দুই জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
শনিবার বিকেলে পুলিশ সুপারের সভাকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার (এসপি) খাইরুল আলম।
তিনি বলেন, ২০২২ সালের ২৩ মে দৌলতপুরের সাদীপুর গ্রামের আব্দুস সামাদের ছেলে জয়কে একই এলাকার রেজাউল করিম হিমেল কম্বোডিয়ায় এক লাখ টাকা বেতনে কম্পিউটারের কাজ— এমন চাকরির কথা বলে তিন লাখ ৭৫ হাজার টাকা নেন। পরে ওই বছরের ২৪ এপ্রিল তাকে কম্বোডিয়ায় পাঠানো হয়। কিন্তু সেখানে যাওয়ার দুই মাসের মাথায় সেখানে অবস্থানরত শোভন নামে এক যুবক জয়কে জিম্মি করে আট লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। টাকা না দিলে প্রাণনাশের ভয় দেখিয়ে জয়কে দিয়ে তার বাবাকে ফোন করায়।
তিনি জানান, ছেলের জীবন বাঁচাতে গত ২২ আগস্ট জয়ের বাবা আত্মীয় স্বজনদের কাছ থেকে ধার দেনা করে চার লাখ টাকা ম্যানেজ করে হিমেলের কাছে বিকাশ ও নগদসহ বিভিন্ন মাধ্যমে টাকা পাঠান। অবশিষ্ট টাকা দিতে না পারার কথা বললে জয়ের কাছ থেকে নগদ টাকা, দামী মোবাইল ও পাসপোর্ট রেখে তাকে বের করে দেয় শোভন। পরে কম্বোডিয়া ও থাইল্যান্ডের দূতাবাস দুই দেশের ইমিগ্রেশন ও টিকেট বাবদ এক লাখ ৭৫হাজার টাকা খরচ করে আউট পাস দিয়ে জয়কে গত মাসের ২৬ সেপ্টেম্বর দেশে ফেরত পাঠায়।
এসপি খায়রুল আলম জানান, এ ব্যাপারে জয়ের বাবা সামাদ ১৯ অক্টোবর কুষ্টিয়ার দৌলতপুর থানায় এজাহারনামীয় তিনজনসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৪/৫ জনকে আসামি করে মানবপাচার এবং অবৈধ উপায়ে অর্থ আদায়ে মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ মানবপাচার চক্রের মূলহোতা হিমেল ও পারভেজ রানা নামে দুইজনকে রাজধানী ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।