শীর্ষ ১০ কোম্পানির ৫টিতেই বিদেশীদের শেয়ারধারণ কমেছে

দেশের পুঁজিবাজারে সূচকের ওঠানামা নির্ধারণ করা হয় ফ্রি ফ্লোট শেয়ারের ভিত্তিতে। ফলে ফ্রি ফ্লোট বাজার মূলধনের হিসাবে যেসব কোম্পানি শীর্ষে থাকে, সূচকের ওঠানামায় সেসব কোম্পানির প্রভাবও থাকে সবচেয়ে বেশি। গত জুলাইয়ে ফ্রি ফ্লোট বাজার মূলধনের শীর্ষ ১০ কোম্পানির মধ্যে পাঁচটিতেই বিদেশী বিনিয়োগকারীদের শেয়ারধারণ কমেছে। এর বিপরীতে বিদেশীদের শেয়ার বেড়েছে দুটিতে আর অপরিবর্তিত ছিল তিনটির। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
তথ্যানুসারে, চলতি বছরের জুলাইয়ে ফ্রি ফ্লোট বাজার মূলধনে শীর্ষ কোম্পানিগুলোর মধ্যে বিদেশীদের শেয়ারধারণ কমেছে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ কোম্পানি (বিএটিবিসি), গ্রামীণফোন, রেনাটা ও বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের। শেয়ারধারণ বেড়েছে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস ও ব্র্যাক ব্যাংকের। আর শেয়ারধারণ অপরিবর্তিত ছিল বেক্সিমকো লিমিটেড, ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ ও পূবালী ব্যাংকের।
ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের ফ্রি ফ্লোট বাজার মূলধনের পরিমাণ গত সপ্তাহ শেষে ৭ হাজার ৪৭৩ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। গত জুলাই শেষে ব্যাংকটিতে বিদেশীদের শেয়ারধারণ সামান্য কমে দাঁড়িয়েছে ১৭ দশমিক ৮৮ শতাংশে। আগের মাসে ব্যাংকটিতে বিদেশীদের শেয়ারধারণের পরিমাণ ছিল ১৭ দশমিক ৮৯ শতাংশ।
বিএটিবিসির ফ্রি ফ্লোট বাজার মূলধন ৫ হাজার ২৩ কোটি টাকা। গত জুলাই শেষে কোম্পানিটিতে বিদেশীদের শেয়ারধারণ কমে ৩ দশমিক ৭২ শতাংশে দাঁড়িয়েছে, আগের মাসে যা ছিল ৪ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ।
গ্রামীণফোনের ফ্রি ফ্লোট বাজার মূলধন ৪ হাজার ৪৭১ কোটি টাকা। কোম্পানিটিতে গত জুলাই শেষে বিদেশীদের শেয়ারধারণ সামান্য কমে দশমিক ৯৬ শতাংশে দাঁড়িয়েছে, আগের মাসে যা ছিল দশমিক ৯৭ শতাংশ।
রেনাটার ফ্রি ফ্লোট বাজার মূলধন গত সপ্তাহ শেষে ছিল ৩ হাজার ২৯৭ কোটি টাকা। গত জুলাইয়ে কোম্পানিটিতে বিদেশীদের শেয়ারধারণের পরিমাণ কমে ১৯ দশমিক ৪৩ শতাংশে দাঁড়িয়েছে, আগের মাসে যা ছিল ১৯ দশমিক ৯৪ শতাংশ।
বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের ফ্রি ফ্লোট বাজার মূলধন বর্তমানে ২ হাজার ৩৪১ কোটি টাকা। গত জুলাই শেষে কোম্পানিটিতে বিদেশীদের বাজার মূলধন কমে ২৭ দশমিক ৫৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে, আগের মাসে যা ছিল ২৭ দশমিক ৬১ শতাংশ।
স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের বর্তমানে ফ্রি ফ্লোট বাজার মূলধনের পরিমাণ ১০ হাজার ৮৯৬ কোটি টাকা। গত জুলাই শেষে কোম্পানিটিতে বিদেশীদের শেয়ারধারণের পরিমাণ কিছুটা বেড়ে ১৫ দশমিক ২৪ শতাংশে দাঁড়িয়েছে, আগের মাসে যা ছিল ১৫ দশমিক ১৪ শতাংশ।
ব্র্যাক ব্যাংকের ফ্রি ফ্লোট বাজার মূলধন বর্তমানে ৪ হাজার ৬৪৯ কোটি টাকা। গত জুলাই শেষে ব্যাংকটিতে বিদেশীদের শেয়ারধারণের পরিমাণ বেড়ে ৩৫ দশমিক ৫০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে, আগের মাসে যা ছিল ৩৩ দশমিক ৭৯ শতাংশ।
বেক্সিমকো লিমিটেডের ফ্রি ফ্লোট বাজার মূলধন ৬ হাজার ৯৪৬ কোটি টাকা। গত জুলাই শেষে কোম্পানিটিতে বিদেশীদের শেয়ারধারণের পরিমাণ দশমিক ৯৪ শতাংশে অপরিবর্তিত ছিল।
ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজের ফ্রি ফ্লোট বাজার মূলধন বর্তমানে ৪ হাজার ৬৭৭ কোটি টাকা। গত জুলাইয়ে কোম্পানিটিতে বিদেশীদের শেয়ারধারণের পরিমাণ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশে অপরিবর্তিত ছিল।
পূবালী ব্যাংকের ফ্রি ফ্লোট বাজার মূলধন ২ হাজার ২৯১ কোটি টাকা। গত জুলাই শেষে ব্যাংকটিতে বিদেশীদের শেয়ারধারণ দশমিক ১২ শতাংশে অপরিবর্তিত ছিল।
প্রসঙ্গত, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স হিসাব করা হয় মোট ফ্রি ফ্লোট বাজার মূলধনের ভিত্তিতে। প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির সময় যে-সংখ্যক শেয়ার ইস্যু করা হয়, সেগুলোই ফ্রি ফ্লোট শেয়ার। প্লেসমেন্টের মাধ্যমে ইস্যু করা শেয়ারের ওপর লকইন পিরিয়ড থাকা পর্যন্ত সেগুলো ফ্রি ফ্লোট শেয়ার হিসেবে গণ্য হয় না। এর বাইরে উদ্যোক্তা পরিচালক, সরকার ও উল্লেখযোগ্যসংখ্যক শেয়ারধারীর কাছে থাকা শেয়ারগুলোও ফ্রি ফ্লোট শেয়ার নয়।